পবিত্র রমজান মাসের রহমতের দশকের অষ্টম তারাবিহ পড়া হবে আজ। সুরা তাওবার ৯৪ আয়াত থেকে শেষ পর্যন্ত, সুরা ইউনুস এবং সুরা হুদের প্রথম ৫ আয়াত পাঠ করা হবে আজকের তারাবিতে। সে সঙ্গে ১১ পারা তেলাওয়াত সমাপ্ত হবে। আজকের তারাবিতে জাকাতের মাল বণ্টনের দায়িত্বশীল ব্যক্তির সম্পর্কে আলোচনাসহ যা পড়া হবে তা সংক্ষেপে তুলে ধরা হলো-
Advertisement
সুরা তাওবাসুরা তাওবা মদিনায় নাজিল হয়েছে। ১৬ রুকুর ১২৯ আয়াতের এ সুরাটি কুরআনুল কারিমের ৯নং সুরা। হুদাইবিয়ার সন্ধির সঙ্গে এ সুরার যোগসূত্র রয়েছে। হুদাইবিয়ার সন্ধির ফলে মদিনা একটি ইসলামি রাষ্ট্র হিসেবে স্বীকৃতি লাভ করে।
সুরা তাওবার আজকের তেলাওয়াতে সাহাবায়ে কেরামগণের আল্লাহর সন্তুষ্টি অর্জন এবং তাঁদের জন্য জান্নাত লাভের ঘোষণা আলোচিত হয়েছে।
Advertisement
জাকাত কোনো সরকারি কর বা অনুদান নয় বরং ইবাদাত। জাকাতের অর্থ আদায় এবং তা যথাযথ খাতে ব্যয় করার দায়িত্ব ইসলামি রাষ্ট্রের। জাকাত বণ্টনে দায়িত্বশীলের কাজসহ যাবতীয় বিষয়ের পাঠ করা হবে আজকের তারাবিতে।
প্রিয়নবি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের ওপর মক্কায় অবস্থানকালে জিহাদের প্রথম আয়াত নাজিল হয়েছিল; আর জিহাদের বাস্তবায়ন হয়েছিল হিজরতের পর মদিনা মুনাওয়ারায়। যা পড়া হবে আজকের তারাবিতে।
সর্বোপরি সুরা তাওবার শেষাংশে দ্বীনি ইলম অর্জনের গুরুত্ব ও ইসলামের ধারক ও বাহকের দায়িত্ব সম্পর্কেও আলোচিত হয়েছে।
সুরা ইউনুসসুরা ইউনুছ-এর রুকু সংখ্যা ১১ এবং ১০৯। সুরাটি মক্কায় নাজিল হয়েছে। এ সুরার ৯৮নং আয়াতে প্রসঙ্গ ক্রমে হজরত ইউনুছ আলাইহি সালামের কথা আসলেও এ সুরার আলোচ্য বিষয় হজরত ইউনুছ আলাইহিস সালামের ঘটনা নয়।
Advertisement
এ সুরাটি সুরা তাওবার নাজিলের প্রক্কালে মক্কায় নাজিল হয়। এ কারণে এ সুরায় আল্লাহর একত্ববাদ তথা তাওহিদ, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের নবুয়ত প্রাপ্তি তথা রিসালাত এবং পরকালীন জীবনের বিবরণ বিবৃত হয়েছে। যার মূল উদ্দেশ্যই ছিল, আল্লাহর পথে মানুষকে আহ্বান করা।
আল্লাহ তাআলা এ সুরার মাধ্যমে মক্কায় বিশ্বনবির রেসালাতের দায়িত্ব পালনকালীন কঠিন সময়ে বিপদাপদের মুহূর্তে হজরত ইউনুছ আলাইহিস সালামের ঘটনার বিস্তারিত বিবরণ তুলে ধরে তাঁকে সান্ত্বনা দেন।
আবার প্রিয়নবি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের রেসালাত ও কুরআনের বাণী সম্পর্কে যে আপত্তি ও সন্দেহ পোষণ করা হতো এ সুরায় তার যথাযথ জবাব দেয়া হয়েছে।
হজরত নুহ আলাইহিস সালামের সময়কার মহা প্লাবনের বিবরণও আলোচিত হয়েছে এ সুরায়। যা আজকের তারাবিতে পাঠ করা হবে।
সুরা হুদ১০ রুকু এবং ১২৩ বিশিষ্ট সুরা হুদ পবিত্র নগরী মক্কায় নাজিল হয়েছে। এটি সুরা ইউনুছের নাজিলের কাছাকাছি সময়ে নাজিল হয়েছে। এ সুরার আলোচ্য বিষয়ও সুরা ইউনুছের সঙ্গে মিল রয়েছে। তবে এ সুরায় সতর্কতা করা হয়েছে কড়াকাড়িভাবে। আজকে এ সুরার ১ থেকে ৫ নং আয়াত পর্যন্ত পড়া হবে।
আয়াত ০১-৫আল্লাহ তাআলঅ সুরা হুদের প্রথম পাঁচ আয়াতে শুধুমাত্র তাঁরই ইবাদাতের দিক নির্দেশনা দিয়েছেন। যারা আল্লাহর ইবাদাত-বন্দেগি করবে; শিরক ও কুফরমুক্ত জীবন-যাপন করবে; কোনো অন্যায় করলে তাওবার মাধ্যমে আবার তাঁরই দিকে ফিরে আসবে; তাদের দুনিয়ার জীবন হবে উপভোগ্য আবার পরকালের মহা অনুগ্রহ দান করা হবে তাদেরকে। যারা তারপরও আল্লাহর অবাধ্যতায় লিপ্ত হবে তাদের জন্য রয়েছে পরকালের কঠিন শাস্তি।
১১ পারার শেষ আয়াতে আল্লাহ তাআলা সবাইকে এ কথাই স্মরণ করিয়ে দেন যে-দুনিয়ার জীবনে মানুষ যেভাবেই জীবন-যাপন করুক না কেন? মৃত্যুর পর সবাইকেই আল্লাহর সম্মুখে তাঁর সান্নিধ্যে যেতে হবে। কারণ তাঁর কাছে যাওয়া ব্যতিত কেউ রেহাই পাবে না। তিনি পুনরায় সবাইকে তাঁর নিকট উপস্থিত করতে সক্ষম।
আল্লাহ তআলা মুসলিম উম্মাহকে কুরআন বুঝে পড়ার এবং তাঁর ওপর আমল করার পাশাপাশি নিজেদের আকিদা-বিশ্বাসকে শিরকমুক্ত রাখার তাওফিক দান করুন। আমিন।
এমএমএস/জেআইএম