অর্থনীতি

১৫ শতাংশই বহাল থাকছে ভ্যাটের হার

নতুন আইনে ভ্যাট হার ১৫ শতাংশই বহাল থাকছে। দীর্ঘদিন ঝুলে থাকা ভ্যাট আইন নতুন অর্থবছর থেকে কার্যকরের ঘোষণা দিয়েছে অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত।

Advertisement

এই হারে ভ্যাট আদায়ের মাধ্যমে ৯১ হাজার ১৭৬ কোটি টাকা রাজস্ব আদায়ের আশা করছেন মুহিত, যা এনবিআরের মাধ্যমে তার দুই লাখ ৪৮ হাজার ১৯০ কোটি টাকা রাজস্ব আহরণ পরিকল্পনার ৩৬.৮ শতাংশ। বৃহস্পতিবার জাতীয় সংসদে ৪ লাখ ২৬৬ কোটি টাকা ব্যয়ের এ বাজেটে প্রস্তাব উপস্থাপন করেন অর্থমন্ত্রী।

তিনি বলেন, ১৯৯১ সাল থেকে ১৫ শতাংশ হারে ভ্যাট আরোপিত হয়েছে এবং তাতে ভোক্তা ও ব্যবসায়ীরা অভ্যস্ত হয়ে পড়েছেন। আমি ভ্যাটের হার ১৫ শতাংশেই বহাল রাখার প্রস্তাব করছি।

মুহিত বলেন, মূল্য সংযোজন কর এক ও অভিন্ন হারে প্রয়োগ করা হবে এবং আগামী তিন বছর তা অপরিবর্তিত থাকবে।

Advertisement

২০১২ সালের ‘মূসক ও সম্পূরক শুল্ক আইন’অনুযায়ী ১৫ শতাংশ ভ্যাট কার্যকর করার কথা ছিল গত ১ জুলাই থেকে। কিন্তু ব্যবসায়ীদের দাবির মুখে তা পিছিয়ে দেয় সরকার। তখন বিদ্যমান প্যাকেজ ভ্যাটের হার বাড়িয়ে বলা হয়, ২০১৭ সালের ১ জুলাই থেকে ১৫ শতাংশ হারে ভ্যাট নেয়া হবে। ব্যবসায়ীরা তা আরও পিছিয়ে দেয়ার দাবি জানিয়ে এলেও শেষ পর্যন্ত আগের সিদ্ধান্তেই অটল থাকলেন মুহিত।

তবে প্রতিশ্রুতি অনুযায়ী ভ্যাট অব্যাহতির সীমা বছরে ৩০ লাখ টাকা থেকে বাড়িয়ে ৩৬ লাখ টাকা করার প্রস্তাব রেখেছেন তিনি। অর্থাৎ মাসে গড়ে তিন লাখ টাকা পর্যন্ত টার্নওভারধারী প্রতিষ্ঠানের কোনো কর দিতে হবে না।

সেই সঙ্গে, টার্নওভার করের সীমা বছরে ৮০ লাখ টাকা থেকে বাড়িয়ে ১ কোটি ৫০ লাখ টাকা নির্ধারণের প্রস্তাব করেছেন অর্থমন্ত্রী। অর্থাৎ যেসব প্রতিষ্ঠানের মাসিক টার্নওভার গড়ে ১২ লাখ ৫০ হাজার টাকার নিচে, তাদের ৪ শতাংশ হারে টার্নওভার কর দিতে হবে। এতোদিন ৩০ লাখ থেকে ৮০ লাখ টাকা পর্যন্ত বার্ষিক টার্নওভারের ক্ষেত্রে ৩ শতাংশ ভ্যাট প্রযোজ্য ছিল।

মুহিত বলেন, এটি ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীদের জন্য একটি অনন্য সুযোগ যা পৃথিবীর অন্যান্য দেশে নেই। এছাড়া ব্যবসায়ীদের বিভিন্ন প্রস্তাব অনুসারে নতুন ভ্যাট আইন ও বিধিমালার পদ্ধতিগত সহজীকরণ সংক্রান্ত কতিপয় অন্যান্য সংশোধন আনা হয়েছে।

Advertisement

বিদায়ী অর্থবছরের(২০১৬-১৭) বাজেটে ভ্যাট থেকে রাজস্ব আদায়ের লক্ষ্য ধরা ছিল ৭২ হাজার ৭৬৪ কোটি টাকা। লক্ষ্য পূরণ না হওয়ায় সংশোধিত বাজেটে তা কমিয়ে ৬৮ হাজার ৬৭৫ কোটি টাকায় নামিয়ে আনা হয়।

আয়কর ও মুনাফার উপর কর থেকে ৮৫ হাজার ১৭৬ কোটি টাকা রাজস্ব পাওয়ার আশা করা হয়েছে এবারের বাজেটে। বিদায়ী বাজেটে এর পরিমাণ ছিল ৭১ হাজার ৯৪০ কোটি টাকা।

নতুন বাজেটে আমদানি শুল্ক থেকে ৩০ হাজার ২৩ কোটি টাকা, সম্পূরক শুল্ক থেকে ৩৮ হাজার ৪০১ কোটি টাকা, রফতানি শুল্ক থেকে ৪৪ কোটি টাকা, আবগারি শুল্ক থেকে ১ হাজার ৫৯৯ কোটি টাকা এবং অন্যান্য কর ও শুল্ক থেকে ১ হাজার ৬৯০ কোটি টাকা আদায়ের পরিকল্পনা করেছেন অর্থমন্ত্রী।

বিদায়ী অর্থবছরের মূল বাজেটে মোট রাজস্ব আদায়ের লক্ষ্য ধরা হয়েছিল ২ লাখ ৪২ হাজার ৭৫২ কোটি টাকা, আদায় সন্তোষজনক না হওয়ায় তা সংশোধন করে ২ লাখ ১৮ হাজার ৫০০ কোটি টাকায় নামিয়ে আনা হয়।

এমএ/এএইচ/পিআর