ধর্ম

আজকের তারাবিতে পাঠ করা হবে নুবয়ত ও রেসালাতের বর্ণনা

রমজানের ৬ষ্ঠ তারাবিহ অনুষ্ঠিত হবে আজ। যে ছয় দিন কুরআন কারিম থেকে দেড় পারা করে তেলাওয়াত করার কথা, ওই ছয় দিনের শেষ দিন আজ। আজকের তারাবিহ আদায়ের মাধ্যমে ৯ পারার তেলাওয়াত শেষ হবে।

Advertisement

সুরা আ’রাফের ১২ নং আয়াত থেকে (২০৬) শেষ পর্যন্ত এবং সুরা আনফালের শুরু থেকে ৪০নং আয়াত পর্যন্ত তিলাওয়াত করা হবে আজ। আগামীকাল থেকে যাথারীতি প্রতিদিন এক পারা করে তেলাওয়াত করা হবে।

সুরা আরাফমক্কায় নাজিল হওয়া সুরাটির আয়াত সংখ্যা ২০৬ ও ২৪ রুকুতে ভাগ করা। এ সুরার ৪৬ ও ৪৭ নং আয়াতে আসহাবে আ’রাফের উল্লেখ করা হয়েছে। সে কারণে এ সুরার নাম করণ করা হয়েছে সুরা আ’রাফ। আজকের তারাবিতে ১২ নং আয়াত থেকে (২০৬) শেষ পর্যন্ত পাঠ করা হবে।

এ সুরাটিও সুরা আনআমের সমকালীন সময়ে নাজিল করা হয়েছে। তবে এ সুরায় বিশ্বনবির রেসালাতের প্রতি ঈমানের ব্যাপারে তাগিদ করা হয়েছে। এ সুরায় বিশ্বনবি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের প্রতি আনুগত্য করার জন্য বিশ্ববাসীকে উদ্বুদ্ধ করাই হলো সুরার মূল লক্ষ্য এবং উদ্দেশ্য।

Advertisement

আয়াত ১২-২০৬এ সুরায় মানুষের আকিদা বিশ্বাসের ব্যাপারে নবুয়ত ও রেসালাতের বর্ণনা স্থান পেয়েছে অধিক পরিমাণে। এ সুরার শুরুতেই হজরত আদম আলাইহিস সালামের ঘটনা বিস্তারিতভাবে বর্ণিত হয়েছে।

অতঃপর হজরত হুদ আলাইহিস সালাম, হজরত সালেহ আলাইহিস সালাম, হজরত লুত আলাইহিস সালাম এবং হজরত শুয়াইব আলাইহিস সালামের ঘটনাবলী বর্ণিত হয়েছে।

তাদের উম্মতের অন্যায় আচরণের শাস্তিস্বরূপ তাদের প্রতি আল্লাহর যে আজাব পতিত হয়েছিল, তার বিবরণও স্থান পেয়েছে আজকের তেলাওয়াতে।

Advertisement

পূর্ববর্তী নবি-রাসুলদের উম্মতের অন্যায় আচরণের ঘটনা বর্ণনার উদ্দেশ্য হলো, যাতে অনাগত ভবিষ্যতের মানুষ জানতে পারে যে, নবি-রাসুলগণের বিরোধিতার পরিণতি কত ভয়াবহ হয়।

হজরত মুসা আলাইহিস সালামের ঘটনা বিস্তারিতভাবে বর্ণিত হয়েছে এবং ফেরাউনের সঙ্গে তার যে মোকাবেলা হয়েছে, তার বিবরণও বর্ণনা করা হয়েছে এ সুরায়।

অবশেষে প্রিয়নবি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-এর নবুয়ত ও রেসালাতের কথা বর্ণনা করা হয়েছে।

সৃষ্টির প্রথম দিন আল্লাহ তাআলা আলমে আরওয়াহে মানবজাতির সব রূহ থেকে যে অঙ্গীকার গ্রহণ করেছিলেন, তার উল্লেখ করা হয়েছে, যা স্মরণ করে দিতেই এ পৃথিবীতে তিনি নবি-রাসুলদেরকে প্রেরণ করা হয়েছে।

এ সুরায় আল্লাহ তাআলার পক্ষ থেকে অবতীর্ণ ওহির অনুসরণের প্রতি বিশেষ তাগিদ দেয়া হয়েছে।

সুরা আনফালসুরা আনফাল মদিনায় নাজিল হয়েছে। এ সুরাটির রুকু সংখ্যা ১০ এবং আয়াত সংখ্যা ৭৫। এ সুরাটিতে ঐতিহাসিক যুদ্ধের ঘটনাবলীর পর্যালোচনা করা হয়েছে।

সুরাটি দ্বিতীয় হিজরির বদর যুদ্ধের পর নাজিল হয়েছে। ইসলাম ও কুফরের মধ্যে সংঘটিত এ প্রথম যুদ্ধের ওপর বিস্তারিত আলোচনা করা হয়েছে। আয়াত ০১-৪০সুরা আনফালের শুরুর দিকে আল্লাহ তাআলা মুমিনদের গুণাবলী ও বৈশিষ্ট্য আলোচনা করেছেন এবং আল্লাহ তাআলা বদরের যুদ্ধে রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এবং সাহাবায়ে কেরামকে যে সাহায্য করেছেন, তার বিবরণ উল্লেখ করেছেন। যা ছিল ইসলামের ইতিহাসের প্রথম জিহাদ ও বিজয়। যে জিহাদে আল্লাহ তাআলা মুসলমানগণকে বিজয় দান করেছিলেন।

আল্লাহ তআলা মুসলিম উম্মাহকে কুরআন বুঝে পড়ার এবং তাঁর ওপর আমল করার পাশাপাশি নিজেদের আকিদা-বিশ্বাসকে শিরকমুক্ত রাখার তাওফিক দান করুন। আমিন।

এমএমএস/জেআইএম