দেশজুড়ে

প্রচুর আম ক্রেতা নেই

চাঁপাইনবাবগঞ্জের আমের সুনাম দেশজুড়ে। সেই আম এখন বাজারে আসতে শুরু করেছে। তবে ইতোমধ্যে প্রচুর আম বাজারে এলেও তেমন ক্রেতা লক্ষ্য করা যায়নি। বলা যায়, আম থাকলেও ক্রেতা কম থাকায় জমে ওঠেনি আমের বাজার।

Advertisement

এ অবস্থায় আমের ব্যবসায়ীরা অলস সময় কাটাচ্ছেন। অনেকেই সারাদিন আম নিয়ে বসে আছেন; তবে হাতেগোনা কয়েক কেজি বিক্রি করেছেন। কেউ দু-চার কেজি বিক্রি করেছেন।

ব্যবসায়ীরা জানান, একদিকে রোজা, আবার মাসের শেষ সপ্তাহ, সেই সঙ্গে পরিচিত জাতের আম বাজারে না আসায়মূলত বাজারে ক্রেতা নেই। তবে ব্যবসায়ীরা আশা করছেন আগামী এক সপ্তাহের মধ্যেই বাজার জমে উঠবে।

গতকাল মঙ্গলবার সকালে চাঁপাইনবাবগঞ্জ শহরের আম বাজার ঘুরে দেখা গেছে, ব্যবসায়ীরা ক্রেতার অভাবে অলস সময় কাটাচ্ছেন। কেউ কেউ দু-চার কেজি বিক্রি করছেন। এখন বাজারে গোপালভোগ ও কিছু গুটি জাতের আম পাওয়া যাচ্ছে। গোপালভোগ আমের মণ বিক্রি হচ্ছে ১ হাজার ৬০০ থেকে ২ হাজার টাকায়। পাশাপাশি এসব আমের কেজি ৪০ থেকে ৪৫ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। 

Advertisement

তবে গোপালভোগ আমের নির্দিষ্ট সময়সীমা মাত্র দেড় থেকে দুই সপ্তাহ। যদিও গোপালভোগের ফলন এ বছর খুব একটা ভালো নয়। জেলার পাঁচ থানায় গোপালভোগ জাতের গাছ রয়েছে প্রায় এক লাখ।

স্থানীয় আম ব্যবসায়ীদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, স্থানীয় প্রশাসন ২৫ মে পর্যন্ত আম পাড়ার ওপর নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে। গত ৪ মে তারা এই নিষেধাজ্ঞা জারি করেন। গত শুক্রবার থেকে বাজারে আম এলেও পর্যাপ্ত বেচাকেনা না হওয়ায় ব্যবসায়ীরা কিছুটা হতাশ। তবে অধিকাংশ ব্যবসায়ী আশা করছেন আগামী এক সপ্তাহের মধ্যে বাজার জমে উঠবে।

চাঁপাইনবাবগঞ্জ শহরের মিস্ত্রি পাড়ার আম ব্যবসায়ী মো. টিটু ও আজাইপুর মহল­ার বাদল বলেন, রোজা মাসের শুরু, ইংরেজি মাসের শেষ সপ্তাহ ও পরিচিত জাতের আম বাজারে না আসার কারণে মূলত বাজারে ক্রেতা নেই। জুলাই মাসের প্রথম সপ্তাহে বাজারে আসবে খিরসাপাত (হিমসাগর)। এই আমটি বেশ মিষ্টি-সুস্বাদু এবং জেলা ও জেলার বাইরের মানুষের কাছে বেশি পরিচিত হওয়ায় এর চাহিদাও বেশি। তাই খিরসাপাত আম বাজারে আসলে জেলার বাইরে থেকেও ব্যাপারিরা আসবে এবং মাসের শুরু হওয়ায় চাকরিজীবীরা বেতন পাবে। তখন জমে উঠবে চাঁপাইনবাবগঞ্জের আম বাজার।

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, বর্তমানে গোপাল ভোগ আমের মণ বিক্রি হচ্ছে ১ হাজার ৬০০ টাকা থেকে ২ হাজার টাকা পর্যন্ত। এসব আমের কেজি ৪০ থেকে ৪৫ টাকা।

Advertisement

চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের উপ-পরিচালক কৃষিবিদ মো. মঞ্জুরুল হুদা বলেন, এবার জেলার ৫ উপজেলায় ২৬ হাজার ১৫০ হেক্টর জমিতে প্রায় ২০ লাখ আম গাছ রয়েছে। গত বছর ২৪ হাজার ৪৭০ হেক্টর জমিতে আম উৎপাদন হয়েছিল ২ লাখ ৪০ হাজার মেট্রিক টন।

তিনি আরও বলেন, এবছর ঝড় ও শিলা বৃষ্টিতে জেলার ৫০ ভাগ বাগানের প্রায় ৩০ ভাগ আম ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। ফলন কম হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। তবে সমষ্টিক ওজনে কতটা প্রভাব পড়বে এটা এখনও বলা সম্ভব নয় বলে জানান তিনি।

চাঁপাইনবাবগঞ্জ/এএম/এমএস