সঞ্চয়পত্রের সুদ হার কমানোসহ বাজার নিয়ে ইতিবাচক বক্তব্যে ঘুরে দাঁড়িয়েছে দেশের পুঁজিবাজার। সোমবার ঢাকার শেয়ারবাজারে চলতি বছরের টাকার অংকে সর্বোচ্চ লেনদেন হয়েছে। বেড়েছে সব ধরণের সূচক ও অধিকাংশ প্রতিষ্ঠানের শেয়ার দর। এ নিয়ে টানা পাঁচ কার্যদিবস ঊর্ধ্বমূখী অবস্থায় শেয়ারবাজার। সোমবার দিন শেষে লেনদেন হয়েছে ৫৯৬ কোটি ৭১ লক্ষ টাকা।এর আগে ১৯ এপ্রিল রোববার ৫৬৩ কোটি ৩৮ লাখ টাকার শেয়ার ও মিউচুয়াল ফান্ড ইউনিটের লেনদেন হয়েছিল। যা ছিল এ বছরের সর্বোচ্চ লেনদেন।দর বাড়ার কারণ হিসেবে সংশ্লিষ্টরা বলছেন, বেশ কিছুদিন দরপতনের পর দেশের দায়িত্বশীল ব্যাক্তিরা পুঁজিবাজার নিয়ে ইতিবাচক কথা বলায় বিনিয়োগকারীদের মধ্যে কিছুটা আস্থা ফিরতে শুরু করেছে। যার কারণে পুঁজিবাজারে সূচকের পাশাপাশি বাড়ছে লেনদেনের পরিমাণও।গত বৃহস্পতিবার এক অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রীর তথ্য ও প্রযুক্তি উপদেষ্টা সজীব ওয়াজেদ জয় বলেছিলেন, বিদেশি বিনিয়োগের মাধ্যমে পুঁজিবাজার চাঙ্গা হবে। দেশের শেয়ারবাজারে বিদেশি আইটি কোম্পানি তালিকাভুক্তি হচ্ছে। এ জন্য তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি খাতের জরুরি আধুনিকায়ন এবং এ জন্য দেশের বর্তমান টেলিযোগাযোগ নীতিমালা সংশোধন করা হবে বলেও জানান তিনি।প্রধানমন্ত্রীর তথ্য ও প্রযুক্তি উপদেষ্টা আরো বলেছিলেন, ফরেন মিউচুয়াল ফান্ডের মাধ্যমে বিদেশি আইটি কোম্পানিগুলোকে ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে তালিকাভুক্তির প্রক্রিয়া চলছে। আগামী মাস নাগাদ এ প্রক্রিয়া সফলতার মুখ দেখতে পারে। এতে বিদেশি বিনিয়োগকারী ও বাংলাদেশ উভয় পক্ষই লাভবান হবে। চাঙ্গা হয়ে উঠবে শেয়ারবাজারও।এছাড়া গত ৬ মে বুধবার একটি অনুষ্ঠানে শেয়ারবাজারে ব্যাংকের বিনিয়োগ সংক্রান্ত জটিলতা দ্রুত নিস্পত্তি করতে কেন্দ্রীয় ব্যাংকে পরামর্শ দেন বাণিজ্য মন্ত্রী তোফায়েল আহমেদ।সর্বশেষ ১০ মে রোববার সঞ্চয়পত্রের সুদের হার কমানো হয়েছে বলে জানিয়েছেন অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত। এখন থেকে পাঁচ বছর মেয়াদি বাংলাদেশ সঞ্চয়পত্রের সুদের হার প্রায় ২ শতাংশ কমিয়ে ১১ দশমিক ১৯ শতাংশে নামিয়ে আনা হয়েছে। যা এতোদিন এ সঞ্চয়পত্র কিনলে সরকার সুদ দিতো ১৩ দশমিক ২৬ শতাংশ।এসব ইতিবাচক বক্তব্য আর পদক্ষেপের কারণে ঘুড়ে দাঁড়িয়েছে শেয়ারবাজার। সোমবার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) টাকায় মোট লেনদেনের পরিমাণ ৫৯৬ কোটি ৭১ লক্ষ ১২ হাজার ৩৩৫ টাকা। যা আগের দিনের চেয়ে ৭৫ কোটি ৮৯ লাখ টাকা বেশি।ডিএসইতে প্রধান সূচক ডিএসইএক্স ৭২ পয়েন্ট বেড়ে চার হাজার ৩৪৯ পয়েন্টে অবস্থান করছে এবং ডিএসইএস সূচক ১ পয়েন্ট বেড়ে ১ হাজার ৪৩ পয়েন্ট ও ডিএস৩০ সূচক ৭ পয়েন্ট বেড়ে ১ হাজার ৬২৪ পয়েন্টে অবস্থান করছে।ডিএসইতে ৩১৪টি প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও মিউচ্যুয়াল ফান্ডের লেনদেন হয়েছে। এর মধ্যে ২০৮টির দাম বেড়েছে, কমেছে ৮৭টির আর অপরিবর্তিত রয়েছে ১৯টি প্রতিষ্ঠানের শেয়ারের।দেশের অপর শেয়ারবাজার চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জে (সিএসই) সিএসসিএক্স সূচক ১৬৯ পয়েন্ট বেড়ে ৮ হাজার ১৮০ পয়েন্টে অবস্থান করছে। এদিন সিএসইতে মোট ২৫০টি কোম্পানি ও মিউচ্যুয়াল ফান্ডের মধ্যে শেয়ার লেনদেন হয়েছে। এর মধ্যে দর বেড়েছে ১৭১টির, কমেছে ৬৩টির আর অপরিবর্তিত রয়েছে ১৬টি কোম্পানির শেয়ার দর। টাকার পরিমাণে লেনদেন হয়েছে ৫০ কোটি ৮১ লাখ টাকা।এসআই/আরএস/আরআইপি
Advertisement