অর্থনীতি

সুদ ও বেতনে বরাদ্দ বাড়ছে সাড়ে ১২ হাজার কোটি টাকা

আগামী (২০১৭-১৮) অর্থবছরের বাজেটে অর্থমন্ত্রীর করা ব্যয়ের হিসাবের একটি বড় অংশই চলে যাবে সরকারি কর্মচারীদের বেতন-ভাতা ও ঋণের সুদ পরিশোধে।

Advertisement

৪ লাখ ২৭০ কোটি টাকার বিশালাকার আগামী বাজেটের ৯৫ হাজার ১৩৩ কোটি টাকা খরচ হবে এ দুই খাতে।

চলতি অর্থবছরে এ দুই খাতে বরাদ্দ রয়েছে ৮২ হাজার ৬১৪ কোটি টাকা। সে হিসেবে আগামী বাজেটে আলোচিত এ দুই খাতে বরাদ্দ বাড়ছে ১২ হাজার ৫১৯ কোটি টাকা।

অর্থ মন্ত্রণালয় সূত্রে এসব তথ্য জানা গেছে।

Advertisement

এ বিষয়ে অর্থনীতিবিদ ও রাষ্ট্রীয় মালিকানাধীন অগ্রণী ব্যাংকের চেয়ারম্যান ড. জায়েদ বখত বলেন, বছর বছর সরকারের সুদ পরিশোধে ব্যয় বাড়ছে। অভ্যন্তরীণ ও বিদেশি-উভয় উৎস থেকে আগের নেয়া ঋণের সুদ পরিশোধ করতে হচ্ছে। তার সঙ্গে নতুন নতুন ঋণের সুদও যোগ হচ্ছে।

তিনি বলেন, ঘাটতি মেটাতে ঋণনির্ভরতা কমাতে না পারলে সুদ পরিশোধের এই মাশুল দিয়ে যেতেই হবে। সরকারের রাজস্ব আদায় আগের চেয়ে অনেক বেড়েছে। এরপরও আমরা ঋণ নির্ভরতা থেকে বেরিয়ে আসতে পারছি না। ঋণ নিয়ে কোথায়, কীভাবে খরচ করা হচ্ছে তার স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা থাকা উচিত।

সূত্র জানায়, ২০১৭-১৮ অর্থবছরের বাজেটের আকার হতে পারে ৪ লাখ ২৭০ কোটি টাকার। বিশাল ব্যয়ের এ বাজেটে অনুন্নয়নসহ অন্যান্য ব্যয় খাতে বরাদ্দ রাখা হয়েছে ২ লাখ ৪৬ হাজার ৯৩৬ কোটি টাকা। যা মোট দেশজ উৎপাদনের বা জিডিপির ১১ দশমিক ১ শতাংশ।

সরকারি কর্মচারীদের বেতন-ভাতাআগামী অর্থবছরের বাজেটে সরকারি সাড়ে ১২ লাখ কর্মচারীর বেতন-ভাতা পরিশোধে ৫২ হাজার ৪৮৭ কোটি টাকা বরাদ্দ রাখা হচ্ছে। চলতি অর্থবছরে যা ছিল ৪৯ হাজার ৭৫১ কোটি টাকা। চলতি অর্থবছরের তুলনায় আগামী অর্থবছরে এ খাতে বরাদ্দ বাড়ছে ২ হাজার ৭৩৬ কোটি টাকা। শতভাগ পেনশন সমর্পণকারীদের বৈশাখী ভাতা দেয়ার সিদ্ধান্তের কারণে আসন্ন বাজেটে এ ব্যয় বাড়ছে বলে জানা গেছে।

Advertisement

এছাড়া বাজেটে ৭০ বছরের ঊর্ধ্বে শতভাগ পেনশন সমর্পণকারীদের প্রতিস্থাপনের সুযোগ দেয়ার ঘোষণা আসতে পারে বলে সূত্র জানিয়েছে।

সুদ পরিশোধআগামী অর্থবছরের বাজেট শুধু আকারের দিক থেকে নয়, ঘাটতির দিক থেকেও অতীতের রেকর্ড ভাঙবে। আসন্ন বাজেটে ঘাটতি ধরা হতে পারে ১ লাখ ২৯ হাজার ১০ কোটি টাকা। এটি জিডিপির ৫ দশমিক ৮ শতাংশ। চলতি বাজেটে যা ছিল ৯৭ হাজার ৮৫৩ কোটি টাকা।

ঘাটতি মেটাতে বিদেশি উৎস থেকে (নিট) নেয়া হতে পারে ৫৪ হাজার ২৩০ কোটি টাকা। ব্যাংক ব্যবস্থা থেকে ঋণ নেয়া হতে পারে ৪৮ হাজার ৯৬০ কোটি টাকা।

এছাড়া ব্যাংকবহির্ভূত খাত থেকে ২৫ হাজার ৮২০ কোটি টাকা ঋণ নেয়া হতে পারে। বছর শেষে এসব ঋণের সুদ বাবদ খরচ হবে ৪২ হাজার ৬৪৬ কোটি টাকা।

চলতি অর্থবছরে এ ঋণের সুদ বাবদ পরিশোধ করার লক্ষ্যমাত্রা ছিল ৩২ হাজার ৮৬৩ কোটি টাকা।

এমইউএইচ/এসআর/পিআর