বিএনপির সর্বোচ্চ নীতিনির্ধারণী ফোরাম জাতীয় স্থায়ী কমিটির সদস্য ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদ বলেছেন, আওয়ামী লীগ ধর্ম নিরপেক্ষতার কথা বলে ঠিকই কিন্তু তারা নিজেরাই তা মানে না। এখন ভোট পাওয়ার জন্য হেফাজতের সঙ্গে সম্পর্ক করছে। এসব করে লাভ নেই।
Advertisement
সোমবার দুপুরে রাজধানীর ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশন মিলনায়তনে বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা জিয়াউর রহমানের ৩৬তম শাহাদৎবার্ষিকী উপলক্ষে আয়োজিত এক আলোচনা সভায় তিনি এসব কথা বলেন।
তিনি বলেন, অতীতে আওয়ামী লীগ খেলাফতে মজলিসের সঙ্গে ৫ দফা চুক্তি করেছিল ভোটের জন্য। আজকের পরিস্থিতি বিবেচনায় মনে হয়, আওয়ামী লীগ সুবিধাবাদী দল। বহু বছর হয়েছে, দেশের মানুষ এখন পরিবর্তন দেখতে চায়।
মওদুদ বলেন, তিনটি বিশেষগুণে শহীদ জিয়া রাষ্ট্রনায়ক। তিনি একটি দর্শন দিয়েছেন, স্বপ্ন দিয়েছেন এবং দর্শন বাস্তবায়নে বিএনপি প্রতিষ্ঠা করেছিলেন। জমির আইলে আইলে হেঁটে হেঁটে মানুষের সঙ্গে সম্পর্ক গড়েছেন। সরকারি কর্মকর্তারা সঙ্গে ছিলেন।
Advertisement
সাবেক এই আইনমন্ত্রী বলেন, একাত্তর সালে বাংলাদেশের স্বাধীনতা ঘোষণা করে পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীর বিরুদ্ধে দেশের জনগণকে সক্রিয় করেছিলেন। জিয়াউর রহমানের ইমেজ ছিল ক্লিন। যতই ষড়যন্ত্র আর ইতিহাস বিকৃতি করেন না কেন তিনি মানুষের হৃদয়ে স্থান করে নিয়েছেন। তিনি অমর হয়ে থাকবেন।
একই অনুষ্ঠানে দলের আরেক স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন বলেন, শহীদ জিয়া মাত্র ১০ বছরে বাংলাদেশের মানুষের মণিকোঠায় স্থান করে নেন তার অনন্য গুণাবলি দ্বারা। তিনি দিশেহারা মানুষের মাঝে অকুতোভয় চিত্তে দেশের স্বাধীনতার ঘোষণা দেন। এমনকি নিজেও যুদ্ধ করেন, সেক্টর কমান্ডার ছিলেন। যুদ্ধে নেতৃত্ব দেন। আমাদের জাতিসত্তার পরিচয়টা দিয়ে গেছেন। সংবিধানে বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম অন্তর্ভুক্ত করেন। এটা মুছে ফেলা যাবে না।
তিনি আরও বলেন, শহীদ জিয়া আধুনিক বাংলাদেশের স্বপ্নদ্রষ্টা। আজকে গায়ের জোরে ক্ষমতায় অধিষ্ঠিত আওয়ামী লীগ সরকার ফ্যাসিবাদী আচরণ করছে। কারণ তাদের জনভিত্তি নেই।
আরেক নীতিনির্ধারক মির্জা আব্বাস বলেন, জিয়াউর রহমান মানুষের কথা বলার স্বাধীনতা দিয়েছিলেন। যখন গণমাধ্যমের গলা টিপে ধরা হয়েছিল। আজও গণমাধ্যমের গলা টিপে ধরা হয়েছে। বলতে পারেন না, লিখতে পারেন না। আমি মনে করি এ সরকারই শেষ সরকার নয়। আসুন আমরা শহীদ জিয়ার আদর্শ বাস্তবায়নে ঐক্যবদ্ধ হই।
Advertisement
স্থায়ী কমিটির আরেক সদস্য নজরুল ইসলাম খান বলেন, দেশকে সমৃদ্ধকরণের জন্য যা দরকার তার সবই করেছিলেন শহীদ জিয়া। স্বাধীনতার পর একটি ভঙ্গুর দেশকে তলাবিহীন ঝুড়ির খেতাব ঘুচিয়েছিলেন। শিল্প কারখানা প্রতিষ্ঠার মাধ্যমে নারীর কর্মসংস্থান করেছিলেন। বেকারদের কর্মসংস্থানের জন্য বিদেশে কর্মসংস্থান তৈরি করেছিলেন।
তিনি আরও বলেন, ১৯৭৬ সালে সাড়ে ৮ হাজার লোক মধ্যপ্রাচ্যে পাঠিয়ে শ্রমবাজার প্রতিষ্ঠা করেন জিয়া। কৃষকের কাছে গিয়ে মাঠে কাজ করেছেন, খোঁজ নিয়েছেন। এটা দূরদর্শী মনোভাব না হলে হয় না। আজকে ক্ষমতাসীন সরকার আমাদের গণতান্ত্রিক অধিকার কেড়ে নিয়েছে। আসুন আরেকটিবার দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়ার নেতৃত্বে আন্দোলন করি।
সভায় আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী বলেন, জিয়া কখনোই মুক্তিযুদ্ধকে পুঁজি করে রাজনীতি করেননি। এখান থেকে বহু দূরে ছিলেন। অথচ বর্তমান সরকার তা করছে। এখানেই জিয়া সারাবিশ্বে অনন্য দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছেন।
তিনি আরও বলেন, দেশ স্বাধীনের পর জাতি যখন পরিচয় সঙ্কটে ভুগছিলেন তখনই শহীদ জিয়া জাতির পরিচয় দিয়েছেন। তিনি বাংলাদেশি জাতীয়তাবাদের ভিত্তিতে আমাদের পরিচয়টা দিয়েছিলেন। আজকে রেইনবো জাতির ভিত্তি হলো সেই বাংলাদেশি জাতীয়তাবাদ। এর মাধ্যমে আমরা সামনের দিকে এগিয়ে যাব।
আলোচনা সভায় সভাপতিত্ব করেন দলের মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।
এমএম/আরএস/পিআর