আন্তর্জাতিক

রক্তাক্ত কাশ্মিরে চুরি যাওয়া শৈশব

সমাজের অন্যসব মানুষের চেয়ে একজন শিল্পীর সামাজিক দায়-দায়িত্ব অনেক বেশি থাকে। স্বজাতির আত্মার স্পন্দন উপলব্ধি করে তা শিল্পে রূপ দেন শিল্পীরা। সেই শিল্পের মধ্য দিয়ে অন্যদের প্রভাবিত করার চেষ্টা করেন তারা। যুদ্ধ, সহিংসতা ও দমন-পীড়ন চললে শিল্পীর সেই দায়িত্ব আরও বেড়ে যায়। তাদের সৃষ্ট কর্মের ভিতর প্রতিকূলতা তাড়ানোর বীজমন্ত্রও লক্ষ করা যায়।

Advertisement

সম্প্রতি কাশ্মিরের স্কুলের শিক্ষার্থীরা তারই প্রমাণ দিয়েছেন। ক্ষুদে এই আঁকিয়েরা তাদের চারপাশের সহিংস পরিবেশকে তুলির অাঁচড়ে ফুটিয়ে তুলেছে। সেখানে আতঙ্কিত মানুষজন কীভাবে গৃহবন্দী জীবন পার করছেন, তার চিত্র যেমন ফুটে উঠেছে। উঠে এসেছে নিজেদের নিরাপত্তা চেয়ে আকুতিও।

ছবির মাধ্যমে ক্ষুদে এই শিল্পীরা তাদের স্কুলকে রক্ষার জন্য বিশ্ব বিবেকের কাছে দাবি জানিয়েছে। শিশুদের এসব ছবিতে দেখা গেছে স্কুলের ভেতর বাচ্চারা মা, মা বলে চিৎকার করছে; আর বিদ্যালয়টির ছাদে আগুন জ্বলছে।

আরেক ছবিতে লাল রঙে ফোঁটা ফোঁটা করে রক্তের ছবি এঁকেছে একজন। সেখানে ক্যাপশনে দেখা যায়, সেগুলো কাশ্মিরের লোকজনের রক্ত। অবশ্য কাশ্মিরের প্রাকৃতিক সৌন্দর্য্যও তুলে ধরেছেন কোনো কোনো শিক্ষার্থী।

Advertisement

সহিংসতায় অন্ধ হয়ে যাওয়া নারী ও পুরুষের ছবি এঁকেছেন কেউ। আবার ছবিতে লিখে রেখেছেন, আমি আর কোনোদিন পৃথিবীর সৌন্দর্য্য দেখতে পারব না, আমার বন্ধুদেরও আর কোনো দিন দেখতে পারব না। কারণ আমি অন্ধ। সহিংসতার শিকার হওয়ার আগের ও পরের দৃশ্য তুলে ধরা হয়েছে কোনো কোনো ছবিতে।

২০১৪ সালের সেপ্টেম্বরে কাশ্মিরে ভয়াবহ রকমের বন্যা হয়েছিল। আর ২০১৬ সালে এসে রক্তের বন্যা দেখেছে তারা। বন্যার সঙ্গে তাই রক্ত ঝরার তুলনার মাধ্যমে মর্মান্তিক পরিস্থিতিও উঠে এসেছে শিশুদের আঁকা ছবিতে।

কেএ/টিটিএন/এমএস

Advertisement