আমাদের বাপ-দাদারা ইফতারের এ আইটেমটা ‘শেখ চূড়া কি ভর্তা’ নামে বিক্রি করতেন। ডাল চিড়া, ভাজা চিড়া, খাসির কাবাব, খাসির রানের মাংস, খাসির মগজ, খাসির কলিজা, মুরগির মাংস, হাসির মাংস, ডিম, আলুভাজি ও ঘি’র সঙ্গে ১২ প্রকারের মসলা মিশিয়ে এটি তৈরি হতো।
Advertisement
ওই সময় খাবারটি কাঁঠাল পাতায় বিক্রি হতো। গরিব-মিসকিনরা এ খাবারের সুঘ্রাণ শুকে একে-অপরকে বলতো, ‘ওই দেখ, বড় বাপের পোলায় খায়, ঠোঙায় ভইরা লইয়া যায়’।
স্বাধীনতার পর ‘শেখ চূড়া কি ভর্তা’র নামকরণ হয় ‘বড় বাপের পোলায় খায়’। দাদা-বাবাদের পর এখন বংশপরম্পরায় এ খাবার আমরা বিক্রি করছি- জানান মো. সালেকিন মিয়া।
দেশের ঐতিহ্যবাহী ইফতারের বাজার চকবাজারে রোববার বিকেলে ‘বড় বাপের পোলায় খায়’ ইফতার আইটেমের ইতিহাস সম্পর্কে জাগো নিউজকে জানাচ্ছিলেন তিনি।
Advertisement
সালেকিন মিয়া জানান, এক সময় সবগুলো আইটেমেই খাঁটি ঘি মেশানো হতো। কিন্তু এখন সবকিছুর দাম বৃদ্ধি পাওয়ায় ঘির বদলে সর্ষের তেল ব্যবহার করা হয়। আর আইটেমে হাসের মাংসের বদলে কোয়েল পাখির মাংস দেয়া হয়।
তিনি আরও জানান, এটি চকবাজারের সব আইটেম থেকে সম্পূর্ণ ব্যতিক্রম। এক ডজনেরও বেশি মশলার সঙ্গে আরও এক ডজন আইটেমের বিভিন্ন মাংস ও কাবাবের সঙ্গে ডাল চিড়া ও ভাজা চিড়ার সমন্বয়ে তৈরি খাবারটি পুরান ঢাকার মানুষের কাছে ভীষণ জনপ্রিয়।
মুখে মুখে এ খাবারের নাম ছড়িয়ে পড়ায় এখন রাজধানীর বাইরের বিভিন্ন জেলা থেকে অনেকেই ‘বড় বাপের পোলায় খায়’ কিনতে চলে আসেন। যারা টাটকা খাবারটি খেতে পারেন না তাদের ফ্রিজে রেখে খাওয়ার পরামর্শ দেন বিক্রেতারা।
প্রতি কেজি বড় বাপের পোলা ৪০০ টাকায় বিক্রি হয়। বৃটিশ আমলে যা এক আনা/দুই আনা দরে বিক্রি হতো বলে জানান সালেকিন মিয়া।
Advertisement
এমইউ/এমএআর/আরআইপি