জাতীয়

কৌতূহলীদের পছন্দের তালিকায় ‘বড় বাপের পোলায় খায়’

পবিত্র রমজান মাসের আজ প্রথম দিন। সারাদিন সিয়াম সাধনার পর রোজার প্রথম দিনে পরিবারের সঙ্গে ইফতার করতে চান সবাই। ইফতারের মেন্যুতেও যোগ করতে চান বিশেষ কিছু।

Advertisement

প্রতিবারের মতো এবারও ঐতিহ্য আর আভিজাত্যের ধারায় মোগল আমলের শাহী মসজিদ ঘিরে ইফতারি পণ্যসামগ্রী বেচা-কেনায় মুখর হয়ে উঠেছে পুরান ঢাকার চকবাজার।

প্রথম রমজানের দিন বিশেষ ইফতার কিনতে দূর-দূরান্ত থেকে সব বয়সী রোজাদাররা এখানে আসছেন। বাহারি দোকানগুলোতে উপচে পড়া ভিড়ও ছিল দুপুরের পর থেকে। তবে ক্রেতাদের আকর্ষণের শীর্ষে ছিল পুরান ঢাকার ঐতিহ্যবাহী ‘বড় বাপের পোলায় খায়, ঠোঙায় ভইরা লইয়া যায়।’

চকবাজারের ঐতিহ্যবাহী ইফতারের বাজার ঘুরে দেখা গেছে, ১২ পদের মসলাসহ প্রায় ৩০ আইটেম দিয়ে তৈরি ‘বড় বাপের পোলায় খায়’। প্রতি কেজি বিক্রি হচ্ছে ৩৮০ থেকে ৪০০ টাকায়। একজন ক্রেতা ১০০ টাকায় সর্বনিম্ন ২৫০ গ্রাম কিনতে পারবেন।

Advertisement

পুরান ঢাকার মোহাম্মদ সালেকিন। ৭২ বছর ধরে চকবাজারে ‘বড় বাপের পোলায় খায়’ বিক্রি করছেন। তার মতো আরও অনেকে বড় বাপের পোলা বিক্রি করলেও সালেকিন নিজেকে ‘একমাত্র আসল’ বিক্রেতা বলে দাবি করেন।

খাবারটি সম্পর্কে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ৩২ জন বাবুর্চি মিলে এটি তৈরি করা হয়। দাম আগের মতোই, ৪০০ টাকা। অন্যরা বেশি দাম নেয়। আমাদের বিক্রি বেশি তাই দাম বাড়াইনি।

রাজকীয় এ খাবার ডিম, গরুর মগজ, আলু, ঘি, কাঁচা ও শুকনো মরিচ, গরুর কলিজা, মুরগির মাংসের কুচি, মুরগির গিলা-কলিজা, সুতি কাবাব, মাংসের কিমা, চিড়া, ডাবলি, বুটের ডাল ও মিষ্টি দিয়ে তৈরি।

বিকেল পর্যন্ত প্রথম রোজায় বিক্রি কেমন- জানতে চাইলে বিক্রেতা ওয়ারেস বলেন, প্রথমদিন এমনিতেই অনেক জমজমাট থাকে। আজ বিক্রি ভালো। কেউ কেউ এক কেজি করে নিচ্ছেন। কেউ কৌতূহলবশত টেস্টের জন্য আড়াইশ গ্রাম নিচ্ছে।

Advertisement

জুলহাস নামের এক ক্রেতা জানান, খাবারটির নাম অনেক শুনেছি। প্রতিবারই আসব, আসব করে আর আসা হয় না। আধা কেজি নিয়েছি। ভালো লাগলে আবার আসব।

জুবায়ের হোসেন নামে নাজিমুদ্দীন রোডের এক ক্রেতা বলেন, আগে টাকার তুলনায় অনেক ভালো খাবার ছিল এটি। কিন্তু এখন এর মান অনেক কমেছে। একেক বিক্রেতা ভিন্ন ভিন্ন স্বাদের তৈরি করছেন। আসল স্বাদ কোনটা এটাই বুঝতে পারা দায়।

তিনি আরও বলেন, অনেকে বাসি মুরগি ও মশলা দিয়ে একই খাবার তৈরি করেন। প্রতিবছরই এমনটি হয়। ফলে রাজকীয় এ খাবারের মান হারাচ্ছে। এ বিষয়ে সংশ্লিষ্টদের নজর দেয়া উচিত।

এআর/এএস/এমএআর/জেআইএম