জাতীয়

প্রথম রমজানেই যানজটের কবলে নগরবাসী

রাজধানীবাসীর পিছু ছাড়ছে না যানজট। রমজানে যানজট নিরসনে ট্রাফিক ব্যবস্থাপনার উন্নতিতে নানা কৌশল নির্ধারণের কথা থাকলেও তা টিকছে না। রমজানের প্রথম দিনেই (রোরবার) তীব্র যানজটে পড়তে হয়েছে নগরবাসীকে। স্থবির রাস্তায় অস্বস্তি আর ভোগান্তি নিয়ে যানবাহনে বসে থাকতে দেখা গেছে অফিসগামী মানুষদের।

Advertisement

এদিকে যানজট পরিস্থিতি স্বাভাবিক বলে দাবি করেছেন মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) ট্রাফিক বিভাগের কর্মকর্তারা। তাদের দাবি, খোঁড়াখুঁড়ির কারণে রাস্তায় যানজট হচ্ছে। কয়েক মাস ধরে চলা যানজটের ধারাবাহিকতা রমজানের প্রথম দিনেও তার প্রভাব পড়েছে। এছাড়া এ পরিস্থিতিকে যানজট না বলে চাপ বলতেই স্বাচ্ছন্দ বোধ করছেন ট্রাফিক কর্মকর্তারা এবং এসব নিয়ন্ত্রণের এখতিয়ার পুলিশের নেই বলে জানান।

রাজধানীর বেশ কয়েকটি এলাকায় খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, রোববার সকাল সাড়ে ৯টা পর্যন্ত বাড্ডা, মালিবাগ, শাহবাগ, পল্টন, ফার্মগেট, মিরপুরের আগারগাঁও, প্রগতি সরণি, বনানী, মতিঝিল ও পুরান ঢাকার নবাবপুরে তীব্র যানজটের সৃষ্টি হয়। যানজটে বিশেষ করে বিপাকে পড়েন অফিসগামী মানুষ। মূল সড়ক ছেড়ে যানজটের চাপ পড়ে অলিগলিতেও। তবে সর্বত্রই রাস্তায় যানচলাচল স্বাভাবিক রাখার ক্ষেত্রে ট্রাফিক কর্মকর্তাদের তৎপরতা ছিল লক্ষ্যণীয়।

মিরপুরের কালশী থেকে ঢাকা সেনানিবাসের ইসিবি চত্বর পর্যন্ত তীব্র যানজট দেখা গেছে। তবে ইসিবি চত্বর পেরিয়ে প্রয়াত রাষ্ট্রপতি জিল্লুর রহমান ফ্লাইওভার ফাঁকা ছিল। কুড়িল বিশ্বরোড এলাকায় বনানীমুখী সড়কে গাড়ির তীব্র চাপ দেখা গেছে। জিল্লুর রহমান ফ্লাইওভারের পূর্বমুখে গাড়ি চলাচলের কোনো ব্যবস্থা না থাকায় মিরপুর-গাবতলী-মোহাম্মদপুরগামী গাড়িগুলোও সড়কে আটকা পড়ে। এতে বিমানবন্দর এলাকা থেকে বনানীগামী সড়কে তীব্র যানজটের সৃষ্টি হয়।

Advertisement

মিরপুর-১ এলাকায় থাকেন বেসরকারি চাকরিজীবী আব্দুর রশিদ। জাগো নিউজকে তিনি বলেন, সকাল ১০টার অফিসে যেতে হলো ১২টায়। রাস্তায় যে যানজট তা ভাষায় প্রকাশ করতে পারছি না। রোজা রেখে ভ্যাপসা গরমে রাস্তায় হেঁটে যাওয়ার ইচ্ছেও করছিল না।

ডিএমপির উত্তর ট্রাফিক বিভাগের বাড্ডা জোনের সহকারী কমিশনার (এসি) ফেরদৌসী রহমান বলেন, প্রগতি সরণিজুড়ে সড়কের দু`পাশেই খোঁড়াখুঁড়ির কারণে প্রশস্ত কমে গেছে। এক লেনে দুটির বেশি গাড়ী যেতে পারছে না।

ট্রাফিক উত্তর বিভাগের উপ-কমিশনার (ডিসি) প্রবীর কুমার রায় জাগো নিউজকে বলেন, রাস্তা তো একটাই। একটি রাস্তায় সবাই এক সঙ্গে নামলে যানজট হবেই। তার উপর খোঁড়াখুঁড়ি। সবাই যদি নিয়ম মেনে চলে তবে যানজট থাকবে না।

ট্রাফিক পূর্ব বিভাগের উপ-কমিশনার (ডিসি) মইনুল হাসান জাগো নিউজকে বলেন, আমার এলাকায় পরিস্থিতি ভালো রয়েছে। সকাল থেকে নিজে মাঠে থেকে ঘুরছি। সকল এসিকে মাঠে থাকার নির্দেশনা দিয়েছি। রমজানে যেন যানজট এড়ানো যায়।

Advertisement

মিরপুর, গাবতলী, মোহাম্মদপুর ও ধানমন্ডির যানবাহন খামারবাড়ী হয়ে ফার্মগেটে কাজী নজরুল ইসলাম এভিনিউতে যোগ হয়ে কারওয়ানবাজারের সার্ক ফোয়ারা পর্যন্ত তীব্র যানজটের সৃষ্টি হয়েছে। বাংলামটর হয়ে শাহবাগ পর্যন্ত সড়কজুড়ে অফিসগামী শত শত বাস-প্রাইভেটকার দাঁড়িয়ে থাকতে দেখা যায়।

এ ব্যাপারে ট্রাফিক পশ্চিম বিভাগের উপ-কমিশনার (ডিসি) লিটন কুমার জাগো নিউজকে বলেন, কোথাও দীর্ঘ সময় যেন যানবাহন দাঁড়িয়ে না থাকে সে জন্য ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে। মাঠে প্রচুর ট্রাফিক পুলিশ কাজ করছে। রোজাদার যাত্রীরা যেন ভোগান্তিতে না পড়েন সে জন্য সার্বক্ষণিক ট্রাফিক ব্যবস্থাপনা মনিটরিং করা হচ্ছে। রাস্তার নাজুক অবস্থা ও খোঁড়াখুঁড়ি স্বত্ত্বেও আমরা যানজট পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা করছি।

জেইউ/আরএস/পিআর