ফিচার

সৌন্দর্য হারাচ্ছে ধলাপাড়া মোগল মসজিদ

সংস্কারের অভাবে সৌন্দর্য হারাচ্ছে দৃষ্টিনন্দন ও শৈল্পিক কারুকাজে সমৃদ্ধ ধলাপাড়া মোগল জামে মসজিদ। কালের সাক্ষী ও স্মৃতি হয়ে এখনো দাঁড়িয়ে আছে প্রাচীনতম এ মসজিদ। দেশের বিভিন্ন জেলা ও উপজেলার মতো টাঙ্গাইলের ঘাটাইল উপজেলায় রয়েছে নতুন পুরনো অনেক মসজিদ। তবে এ উপজেলার একমাত্র শত বছরের পুরনো মসজিদ এই ধলাপাড়া জামে মসজিদ।

Advertisement

ঘাটাইল উপজেলা সদর থেকে ১৪ কিলোমিটার দূরে ঘাটাইল-সাগরদিঘী সড়কের পাশে ধলাপাড়া বাজারে মসজিদটি অবস্থিত। মসজিদটিতে রয়েছে সুদৃশ্য সাতটি গম্বুজ। মূল অংশের উপরে রয়েছে তিনটি গম্বুজ। মূল অংশের উত্তর ও দক্ষিণ পাশের গম্বুজের চেয়ে মাঝের গম্বুজটি একটু বড়। বারান্দায় রয়েছে চারটি ছোট আকারের গম্বুজ। এর গম্বুজগুলো দেখতে অনেকটা মোগল আমলের মসজিদের মতো। তাই স্থানীয়রা একে মোগল মসজিদ বলে থাকেন।

মসজিদটির দৈর্ঘ্য ও প্রস্থ যথাক্রমে ৩৬ ও ২৭ হাত। এর প্রতিটি দেয়ালের পুরত্ব প্রায় আড়াই হাত। মসজিদটির মূল অংশে ও বারান্দায় রয়েছে পাঁচটি করে দরজা। দরজাগুলোর উপরে রয়েছে লোহার খাঁজকাটা কারুকাজ। বাহির থেকে আলো-বাতাস যেন অনায়াসে প্রবেশ করতে পারে তার জন্যই এ ব্যবস্থা। মসজিদের প্রতিটি দেয়ালে প্রচুর কারুকাজ থাকলেও পশ্চিমের দেয়ালে রয়েছে সর্বোচ্চ কারুকাজ। যা সবার দৃষ্টি কাড়ে।

তবে স্থানীয়রা মোগল মসজিদ বলে থাকলেও দৃষ্টিনন্দন কারুকাজ সমৃদ্ধ মসজিদটির বাইরের পূর্বপাশের ফলকের লেখা থেকে জানা যায়, ১৩২৩ বঙ্গাব্দ ও ইংরেজি ১৯১৭ সালে তৎকালীন ধলাপাড়ার জমিদার ছমির উদ্দিন চৌধুরী নির্মাণ করেছিলেন এই মসজিদটি।

Advertisement

সরেজমিন ও স্থানীয়দের দেওয়া তথ্যে জানা যায়, মসজিদটি নির্মাণে ব্যবহার করা হয়েছে চুন, সুরকি ও সাদা সিমেন্ট। মসজিদটির পূর্বপাশে রয়েছে সুউচ্চ মিনার যার কারুকাজও চোখে পড়ার মতো। মসজিদটিতে প্রায় ২ শতাধিক মুসল্লি একসঙ্গে নামাজ আদায় করতে পারেন। শত বছর ধরে এ উপজেলায় ঐতিহ্যের নিদর্শন আর জমিদারি মনোভাবের সাক্ষী হয়ে দাঁড়িয়ে আছে মসজিদটি।

দীর্ঘদিন ধরে সংস্কার না হওয়ার ফলে ইতোমধ্যেই ভিতরের আস্তরগুলো খুলে পড়তে শুরু করছে। সংস্কারের অভাবে মুসলিম ঐতিহ্য আর চোখজুড়ানো এই শৈল্পিক স্থাপনাটি দিনদিন হারাচ্ছে তার নিজস্ব বৈচিত্রময় সৌন্দর্য। তবে দিনের পর দিন এভাবে সংস্কারহীন থাকলে খুব দ্রুতই মসজিদটি জরাজীর্ণ হয়ে পড়বে এমনটাই ধারণা করছেন স্থানীয়রা। তাই দ্রুত মসজিদটি সংস্কারে স্থানীয় প্রশাসনের হস্তক্ষেপ দাবি করছেন মসজিদের দায়িত্বরত সদস্যসহ স্থানীয়রা।

মসজিদটির দেখভালের দায়িত্বে থাকা ও জমিদার ছমির উদ্দিন চৌধুরীর বংশধর ববিন হায়দার চৌধুরী জাগো নিউজকে বলেন, ‘আমরা মসজিদটির পূর্বপাশের মিনারের সংস্কার কাজ করেছি। তবে মসজিদের ভিতর ও বাহিরের সংস্কার কাজ করাটা অনেক ব্যায়বহুল।’

যে কারণে ববিন হায়দার চৌধুরীসহ এলাকার সাধারণ মানুষের দাবি, স্থানীয় প্রশাসন মসজিদটির ঐতিহ্য ধরে রাখতে যেন সংস্কারের উদ্যোগ নেন।

Advertisement

এসইউ/এমএস