খাদ্যে উদ্বৃত্ত শেরপুর জেলায় এবারও বোরো ধান-চাল সংগ্রহের লক্ষ্যমাত্রা অর্জিত হয়নি। বাজার মূল্যের চেয়ে সংগ্রহ মূল্য কম থাকায় চালকল মালিকরা আর্থিক ক্ষতির আশংকায় সরকারি চাহিদা মোতাবেক খাদ্য গুদামে ধান-চাল সরবরাহ না করায় এ অবস্থা হয়েছে বলে সংশ্লিষ্টরা জানিয়েছেন। এজন্য তারা ধান-চালের সংগ্রহমূল্য বৃদ্ধি এবং সময় বর্ধিতরনের কথাও জানিয়েছেন।জেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রকের অফিস সূত্রে জানা যায়, চলতি মওসুমে শেরপুর জেলার সদর, নালিতাবাড়ী, নকলা, শ্রীবরদী ও ঝিনাইগাতী উপজেলা থেকে ২ হাজার ৮৩২ মেট্রিক টন বোরো ধান এবং ৪০ হাজার ৫৫৩ মেট্রিক টন চাল সংগ্রহের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়। এ বছর বোরো ধান প্রতি কেজি ২০ টাকা এবং চাল প্রতিকেজি ৩১ টাকা সংগ্রহ মুল্য নির্ধারিত হয়। গত ১৭ মে শেরপুরে ধানচাল সংগ্রহ কার্যক্রম শুরু হয়ে চলে ৩০ আগস্ট পর্যন্ত। এজন্য জেলায় তালিকাভুক্ত ৬৭০ জন চালকল মালিকের মধ্যে ৬০৪ জন চালকল মালিক খাদ্য বিভাগের সাথে চুক্তিবদ্ধ হয়।সূত্র মতে, চুক্তি অনুযায়ী ওইসব চালকল মালিকদের সরকারী খাদ্য গুদামে ৩৩ হাজার ৬৫৮ মেট্রিক টন চাল সরবরাহ করার কথা। নির্ধারিত সময়সীমা ৩০ আগস্টের মধ্যে জেলার খাদ্য গুদামগুলোতে লক্ষ্যমাত্রার বিপরীতে ২৮ হাজার ৪৩৯ মেট্রিক টন চাল সংগ্রহ হয়েছে। কিন্তু সরাসরি কৃষকদের নিকট থেকে ধান কেনার কথা থাকলেও কোনো ধান সংগ্রহ হয়নি।শেরপুর জেলা চালকল মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক আসাদুজ্জামান রওশন বলেন, বর্তমানে ধানের মূল্য অত্যন্ত চড়া। তাই সরকার নির্ধারিত চালের দাম কম হওয়ায় চুক্তিবদ্ধ চালকল মালিকরা লোকসান দিয়ে সরকারী খাদ্য গুদামে চাল সরবরাহে উৎসাহ হারিয়ে ফেলেছে। এজন্য চলতি বোরো মওসুমে শেরপুরে সরকার নির্ধারিত সংগ্রহ লক্ষ্যমাত্রা অর্জিত হয়নি। তবে সময়সীমা বাড়িয়ে চালের দাম পুনঃনির্ধারণ করলে ওই লক্ষ্যমাত্রা অর্জিত হতে পারে বলে তিনি অভিমত ব্যক্ত করেন।এ ব্যাপারে জেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক জি.এম. ফারুক পাটোয়ারী বলেন, সংগ্রহ মওসুমের শুরুতে কৃষকদের উৎপাদিত বোরো ধান ভেজা ও অপরিচ্ছন্ন থাকায় শেরপুরে সাধারণত ধান সংগ্রহ সম্ভব হয়না। তিনি আরও জানান, ২০১২ সাল ছাড়া ২০১১ ও ২০১৩ সালেও শেরপুর জেলায় বোরো ধান-চাল সংগ্রহ লক্ষ্যমাত্রা অর্জিত হয়নি। ২০১১ সালে ৪৪ হাজার ৫৭০ মেট্রিক টন চাল সংগ্রহের লক্ষ্যমাত্রার বিপরীতে মাত্র ১৩ হাজার ৫৫৮ মেট্রিক টন এবং ২০১৩ সালে ৪২ হাজার ৪৯ মেট্রিক টন চালের বিপরীতে ৩৬ হাজার ৩৭৫ দশমিক ১ মেট্রিক টন চাল সংগৃহিত হয়েছিল। ২০১৩ সালেও কোনো ধান সংগৃহিত হয়নি।ধান-চাল সংগ্রহ মূল্যের চেয়ে বাজার মূল্য বেশি থাকায় প্রতি বছরই নির্ধারিত লক্ষ্যমাত্রা অর্জিত হচ্ছে না। তবে সংগ্রহের সময়সীমা বাড়ানো হবে বলে শোনা যাচ্ছে বলেও জানান তিনি।
Advertisement