আন্তর্জাতিক

জি-৭ সম্মেলনে যোগ দিতে সিসিলি পৌঁছেছেন ট্রাম্প

৪৩তম জি-৭ সম্মেলনে যোগ দিতে ইতালির সিসিলি দ্বীপে পৌঁছেছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। অর্থনৈতিকভাবে শক্তিধর বিশ্বের সাতটি দেশের এই সম্মেলনে যোগ দেওয়ার পর মধ্যপ্রাচ্য ও ইউরোপে দীর্ঘ সফরের ইতি টানবেন এই মার্কিন প্রেসিডেন্ট। খবর বিবিসির।

Advertisement

ট্রাম্পের এই সফরে তার সফরসঙ্গী হয়েছেন মার্কিন ফার্স্ট লেডি মেলানিয়া ট্রাম্প। এই সম্মেলনে অর্থনীতি, বাণিজ্য এবং জলবায়ু ইস্যু নিয়ে কঠিন বিতর্ক হতে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে। কেননা ট্রাম্প বরাবরই জলবায়ু চুক্তির বিপক্ষে ছিলেন ট্রাম্প।

তার মতে, প্যারিস জলবায়ু চুক্তি যুক্তরাষ্ট্রের জন্য ভাল হয়নি। তিনি জলবায়ু পরিবর্তনের জন্য চীনকে দায়ী করেছিলেন। ২০১৫ সালের ডিসেম্বরে নির্বাচনী প্রচারণার সময় স্বাক্ষরিত প্যারিস জলবায়ু চুক্তি থেকে যুক্তরাষ্ট্রকে সরিয়ে আনার অঙ্গীকারও করেছিলেন ট্রাম্প।

চলতি বছরের মার্চের শেষের দিকে জলবায়ু নীতি পরিবর্তনে নতুন নির্বাহী আদেশে স্বাক্ষর করেন ট্রাম্প। সাবেক মার্কিন প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামার জলবায়ু নীতির মূল অংশগুলো বাতিলের জন্যই নতুন এই নির্বাহী আদেশে স্বাক্ষর করেন  তিনি। জলবায়ু চুক্তির বিষয়গুলোতে ট্রাম্পের অবস্থানকে কেন্দ্র করে জি-৭ সম্মেলনে বড় ধরনের বিতর্ক হওয়াটা তাই অস্বাভাবিক কিছু না।

Advertisement

অর্থনীতিতে শক্তিধর সাতটি দেশ কানাডা, ফ্রান্স, জার্মানি, ইতালি, জাপান, যুক্তরাজ্য, যুক্তরাষ্ট্র জি-৭য়ের সদস্য দেশ। এই সম্মেলনের প্রতিনিধিত্ব করছে ইউরোপীয় ইউনিয়ন।

ট্রাম্প এবং ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী থেরেসা মেসহ মোট চারজন জি-৭ সম্মেলনে প্রথমবারের মত অংশ নিচ্ছেন। ব্রাসেলসের ন্যাটো সম্মেলনে বৃহস্পতিবার ট্রাম্প বলেন, ন্যাটোর ২৮ সদস্যের ২৩ সদস্যই যথাযথ পাওনা পরিশোধ করছে না। এটা তাদের দেয়া উচিত। তিনি বলেন, কয়েকটি দেশের কাছে এখনও আগের বছরের অর্থ পাওনা রয়েছে।

ব্রাসেলসে পৌঁছানোর পর বেলজিয়ামের রাজা এবং রানীর সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন ট্রাম্প। সে সময় ব্রাসেলস সিটি সেন্টারে ট্রাম্পবিরোধী বিক্ষোভ করেন বিক্ষোভকারীরা। তাদের হাতে প্ল্যাকার্ড এবং ব্যানারে লেখা ছিল- ‘স্টপ ট্রাম্প, সেভ দ্য প্লানেট।’

বৃহস্পতিবার ট্রাম্পের সঙ্গে বৈঠকের পর ইউরোপিয়ান কাউন্সিলের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাস্ক জানান, বিভিন্ন ইস্যুতে তারা একমত হয়েছেন। তবে রাশিয়া ইস্যুতে তাদের মধ্যে ভিন্নতা রয়েছে। তিনি বলেন, ‘আমি শতভাগ নিশ্চিত হয়ে এটা বলতে পারি না যে, রাশিয়া ইস্যুতে আমাদের অবস্থান এক বা অভিন্ন। যদিও ইউক্রেন ইস্যুতে যখন সংঘাত সামনে আসে তখন আমরা একই অবস্থানে ছিলাম।’

Advertisement

টাস্ক যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে সম্পর্কের ক্ষেত্রে স্বাধীনতা, মানবাধিকার, মানবিক মর্যাদার প্রতি শ্রদ্ধার মতো পশ্চিমা মৌলিক মূল্যবোধের প্রতি গুরুত্বারোপ করেছেন।

সহিংস চরমপন্থার মোকাবেলায় প্রয়োজনীয় চুক্তি নিয়ে এই সম্মেলনে আলোচনা হতে পারে। এছাড়া জি-৭য়ের সদস্য দেশ জাপানের প্রধানমন্ত্রী শিনজো আবে তার দেশের ওপর উত্তর কোরিয়ার হুমকির বিষয়টি তুলে ধরবেন বলে ধারণা করা হচ্ছে।

জাতিসংঘের নিষেধাজ্ঞা স্বত্ত্বেও বার বার পারমাণবিক এবং ক্ষেপণাস্ত্র পরীক্ষা চালাচ্ছে উত্তর কোরিয়া। উত্তর কোরিয়ার এমন কর্মকাণ্ড দক্ষিণ কোরিয়া এবং জাপানের জন্য হুমকি হয়ে দেখা দিয়েছে। উত্তর কোরিয়াকে থামাতে কি কি পদক্ষেপ নেয়া যায় সেগুলোই হয়তো আলোচনা করবে জাপান।

যুক্তরাজ্যের ম্যানচেস্টারে ভয়াবহ সন্ত্রাসী হামলার ঘটনার মাত্র কয়েকদিনের মাথায় জি-৭ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হচ্ছে। সোমবার ম্যানচেস্টারে মার্কিন পপ সংগীত শিল্পী অ্যারিয়ানা গ্রান্ডের কনসার্ট শেষে ওই হামলা চালানো হয়।

হামলায় ২২ জন নিহত এবং আরো ৫৯ জন আহত হয়েছে। এদের মধ্যে বেশ কয়েকজন শিশুও আছে। এই হামলার বিষয়টি জি-৭ সম্মেলনে উপস্থাপন করবেন টেরেসা মে। তিনি বিশ্বের শীর্ষ নেতাদের সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে শক্তিশালী লড়াইয়ের আহ্বান জানাবেন।

টিটিএন/এমএস