সুপ্রিম কোর্ট প্রাঙ্গণে স্থাপিত ভাস্কর্যটি গ্রিক দেবীর নয়। এটি শাড়ি পরা একটি বাঙালি মেয়ে। যে মেয়েটি দাড়িপাল্লা হাতে বিচারপতির প্রতীক নিয়ে দাঁড়িয়ে আছে। এটা গ্রিক দেবী হলো কী করে? এর মধ্যে গ্রীক দেবীর কোনো মিল নেই। যদি কেউ আমেরিকা-ব্রিটিশ বলে তাহলে তো হবে না।
Advertisement
খুব আক্ষেপ ও কান্নাজড়িত কণ্ঠে এ কথাগুলো বলেছেন ভাস্কর্যটির নির্মাতা মৃণাল হক। বৃহস্পতিবার রাতে সুপ্রিম কোর্ট প্রাঙ্গণ থেকে ভাস্কর্যটি অপসারণের সময় শোকে-ক্ষোভে গণমাধ্যমকর্মীদের তিনি এ কথাগুলো বলেন।
মৃণাল হক বলেন, ‘আমার কিছুই বলার নেই। অনেকের অনেক ধরনের ক্ষমতা আছে। আমি বলতে চাই না। এটা আমি বানিয়েছি এবং গতকাল আমাকে নির্দেশ দেয়া হচ্ছে এটি ভাঙতে। আমাকে বলা হয়েছে এটি সরাতে। নির্দেশদাতাদের উপরেও নির্দেশদাতা রয়েছে। সরাতে গেলে এটি ভেঙে যাবে। ভাস্কর্যের অস্তিত্ব খুঁজে পাওয়া যাবে না। সুপ্রিম কোর্ট প্রাঙ্গণ থেকে এই ভাস্কর্যটি সরিয়ে সম্ভবত অ্যানেক্স ভবনের সামনে বসানো হবে।’
তিনি আরও বলেন, ‘আমি দেড় থেকে দুই কোটি টাকা লস খেয়েছি। সরকার বা কোনো পক্ষ এটি নিয়ে কোনো ‘ইয়ে’ করেনি। আমার মতিঝিলের ভাস্কর্যে হামলা হয়েছে, নরসিংদীতে হামলা হয়েছে। এগুলো বলতে গেলে তো বিপদ।’
Advertisement
মৃণাল হক বলেন, ‘আমি আমেরিকায় রাজকীয়ভাবে ছিলাম। নিউইয়র্ক সিটির বিউটিফিকেশনের দায়িত্বে ছিলাম। আমি সব ফেলে দিয়ে নিজের দেশে এসেছি। আমরা খালি দেশকে মুখে ভালোবাসি। অন্তরে ভালোবাসি না।’
তিনি অভিযোগ করে বলেন, ‘অনেকেই আমার বিরুদ্ধে আছে। আমি নিজে কাজ জানি। দেশের মঙ্গলের জন্য কাজ করে যাই। আমি পুরো দেশে ভাস্কর্য ছড়িয়ে দিয়েছি। মতিঝিলে ভাস্কর্য বানিয়েছি। শেরাটনের সামনে ঘোড়ার ঘাড়ি। এভাবে ঢাকা শহরে আমি ২৫টির মতো ভাস্কর্য বানিয়েছি। অনেকে এগুলো নিয়ে ক্রিটিসাইজ করে। যারা ক্রিটিসাইজ করে তারা তো কাজ জানে। তারা কেন এসে এগুলো করে না? তারা কেন ঢাকা শহরে নিজের পকেটের পয়সা দিয়ে কাজ করে না। আমি ঢাকা শহরে কাজ করেছি প্রতিটা আমার নিজের পকেটের টাকা দিয়ে করা। স্পন্সর পায়নি। তবুও কাজ করেছি।’
ভাস্কর্যের বিষয়ে মৃণাল হক বলেন, ‘দেখেন এটা দেখলে কী পাওয়া যায়? এখানে শাড়ি, ব্লাউজ ও পেটিকোট পরা একটি বাঙালি মেয়ে। এটা কী করে গ্রিক হলো? ড্রেসে নাই চেহারায় গ্রিক নাই। গ্রিক বললে তো এটা গ্রিক হবে না। এটা সম্পূর্ণ একটি বাঙালি মেয়ে। যে মেয়েটি হাতে দাড়িপাল্লা নিয়ে বিচারের প্রতীক নিয়ে দাঁড়িয়ে আছে। আর কিছুই না। এটাকে যদি কেউ আমেরিকা-ব্রিটিশ বলে তাহলে তো হবে না।’
এমএসএস/বিএ
Advertisement