দেশজুড়ে

নাগেশ্বরীতে মুক্তিযোদ্ধা বাছাইয়ে বাণিজ্যকরণের অভিযোগ

কুড়িগ্রামের নাগেশ্বরীতে মুক্তিযোদ্ধা যাচাই-বাছাই কমিটির বাণিজ্যকরণের অভিযোগ এবং প্রকাশিত তালিকার প্রতিবাদে বিক্ষোভ-সমাবেশ করেছে মুক্তিযোদ্ধারা।

Advertisement

বুধবার দুপুরে উপজেলা পরিষদ মাঠে প্রতিবাদসভা অনুষ্ঠিত হয়। সভায় নতুন তালিকায় রাজাকার, আলবদর, আলশামস, তৎকালীন মুসলীমলীগ ও জামায়াতে ইসলামীসহ স্বাধীনতাবিরোধীদের নাম টাকার বিনিময়ে অন্তর্ভুক্ত করেছে যাচাই কমিটি।

সমাবেশে বীর মুক্তিযোদ্ধা মজিবর রহমান বীরবলের সভাপতিত্বে উপজেলা কমান্ডের ডিপুটি কমান্ডার মতিয়ার রহমান নান্টু, পৌর কমান্ডার নুর মোহাম্মদ নুরু, বীর মুক্তিযোদ্ধা বেলায়েত হোসেন, হযরত আলী, নওশাদ হোসেন, এটিএম আজাদ আলী, মতিয়ার রহমান মতি ও সন্তোষপুর ইউনিয়ন কমান্ডার আব্দুল খালেকসহ অনেকে বক্তব্য রাখেন।

বক্তারা অভিযোগ করেন, সদ্য প্রকাশিত তালিকায় হাতেগোনা কয়েকজন ছাড়া অধিকাংশই স্বাধীনতাবিরোধী ছিলেন। অনেকে মুক্তিযুদ্ধকালীন শিশু ছিলেন। মোটা অংকের টাকা নিয়ে যাচাই-বাছাই কমিটির সভাপতি মুক্তিযোদ্ধা কেন্দ্রীয় কমান্ড কাউন্সিলের সহ-সাংগাঠনিক সম্পাদক ওসমান গণি ও উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার আবু বকর সরকারসহ সংশ্লিষ্ট কয়েকজন নাম অন্তর্ভুক্ত করেন বলেও অভিযোগ করেন তারা।

Advertisement

এ কাজে জড়িতদের প্রতি ঘৃণা প্রকাশ করে তাদের শাস্তি দাবি করেন। একই সঙ্গে তালিকা সংশোধন করে প্রকৃত মুক্তিযোদ্ধাদের নাম অন্তর্ভুক্ত করতে সংশ্লিস্ট কর্তৃপক্ষের প্রতি আবেদন জানান বক্তারা।

একপর্যায়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আবু হায়াত মো. রহমতুল্লাহ বিক্ষোভকারীদের সঙ্গে কথা বলে প্রকাশিত তালিকায় কারো বিষয়ে সুনির্দিষ্ট অভিযোগ থাকলে তা লিখিতভাবে জানালে জামুকায় পাঠানোর আশ্বাস দেন।

তবে মুক্তিযোদ্ধা যাচাইয়ে টাকা লেনদেনের বিষয়টি সঠিক নয় বলে দাবি করে উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার আবু বকর সরকার বলেন, সরকারি নির্দেশনা মতো যাচাই-বাছাই শেষে তালিকা করা হয়েছে। আমাদের বিরুদ্ধে যারা সন্দেহের আঙুল তুলেছে তাদের বিরুদ্ধে খুব শিগগিরই নতুন, পুরাতন মুক্তিযোদ্ধা ও সন্তান কমান্ডকে সঙ্গে নিয়ে আমরাও সমাবেশ করব।

এ বিষয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আবু হায়াত মো. রহমতুল্লাহ বলেন, হাজারেরও বেশি আবেদনকারীর মধ্যে যাচাই করে ২২৪ জনের নাম তালিকায় উঠেছে। বাকিদের চাওয়া থাকতে পারে। এর জন্য ঊর্ধ্বতন কমিটি ‘জামুকা’ আছে। সেখানে আবেদন বা অভিযোগ করতে পারবে।

Advertisement

এ বিষয়ে কথা বলতে উপজেলা যাচাই-বাছাই কমিটির সভাপতি মুক্তিযোদ্ধা কেন্দ্রিয় কমান্ড কাউন্সিলের সহ-সাংগাঠনিক সম্পাদক ওসমান গণির মুঠোফোনে একাধিকবার কল করলেও রিসিভ হয়নি।

প্রসঙ্গত, গত ২১ মে নাগেশ্বরী উপজেলার ২২৪ জন নতুন মুক্তিযোদ্ধার নামের তালিকা প্রকাশ করা হয়। ওইদিন মুক্তিযোদ্ধাদের এক অংশ দেয়ালে লাগানো তালিকা ছিঁড়ে ফেলেন।

এর আগে ১৮ জানুয়ারি থেকে যাচাই-বাছাই শুরু হয়। শেষে ২০ মে ফলাফল প্রকাশ করে সংশ্লিষ্ট কমিটি। শুরু থেকে যাচাই-বাছাই নিয়ে অনেক কথা ওঠে মুক্তিযোদ্ধাদের মধ্যে।

নাজমুল হোসাইন/এএম/পিআর