রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, ‘কিয়ামতের দিন সর্ব প্রথম নামাজের হিসাব গ্রহণ করা হবে। যে ব্যক্তি নামাজের হিসাব সুন্দরভাবে দিতে পারবে; তার পরবর্তী হিসাব সহজ হয়ে যাবে।’ হাদিসের আলোকে বুঝা যায় দুনিয়ায় সব ইবাদতের মধ্যে ঈমানের পর নামাজের গুরুত্ব সর্বাধিক।
Advertisement
আল্লাহ তাআলা কুরআনে অনেক জায়গায় নামাজের ব্যাপারে তাগিদ দিয়েছেন। আল্লাহ তাআলা মানুষের জন্য পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ ফরজ করেছেন। ফরজ নামাজ আদায় করা আবশ্যক। ফরজ আদায়ের পর মানুষের উচিত সময় পেলেই বেশি বেশি নফল নামাজ পড়া।
সামনে আসছে রহমত মাগফেরাত ও নাজাতের মাস রমজান। এ মাসের নফল ইবাদতে রয়েছে অন্য মাসের ফরজ ইবাদতের সমান সাওয়াব। প্রিয়নবি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম পরকালের মুক্তিতে নফল নামাজের প্রতি বিশেষ তাগিদ প্রদান করেছেন।
পরকালে কঠিন বিপদের সময় এ নফল নামাজই মানুষের চূড়ান্ত ফয়সালায় কাজে আসবে। হাদিসে এসেছে-হজরত আবু হুরায়রা রাদিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত তিনি বলেন, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, কিয়ামতের দিন মহান আল্লাহ তাআলা বান্দার কাছ থেকে সর্বপ্রথম তার ফরজ নামাজের হিসাব নিবেন।
Advertisement
যদি ফরজ নামাজ পরিপূর্ণ ও ঠিক থাকে তাহলে সে সফলকাম হবে এবং মুক্তি পাবে। আর যদি ফরজ নামাজে কোনো ঘাটতি দেখা যায়, তখন ফেরেশতাদের বলা হবে, দেখো তো আমার বান্দার কোনো নফল নামাজ আছে কিনা?
তার যদি নফল নামাজ থেকে থাকে তাহলে তা দিয়ে আমার বান্দার ফরজের এ ঘাটতি পূরণ করো। অতঃপর অন্যান্য ‘আমলগুলোও (রোজা ও জাকাত) এভাবে গ্রহণ করা হবে। (তিরমিজি, আবু দাউদ, ইবনে মাজাহ, নাসাঈ)
উল্লেখিত হাদিস থেকে বুঝায় যায় যে, নফল ইবাদত নামাজ, রোজা, দান-অনুদান; যা-ই হোক না কেন? পরকালের চূড়ান্ত মুক্তিতে এ নফল ইবাদতের বিকল্প নেই।
কারণ, নফল নামাজ যদি ফরজের ঘাটতি পুরনে সহায়ক হয়; তবে নফল রোজা ফরজ রোজার ভুল-ত্রুটি থেকে মুক্তি লাভে সহায়ক হবে।
Advertisement
আবার যাদের ওপর জাকাত আদায় করা ফরজ; তাদের জন্য আল্লাহর রাহে দান-অনুদান অনেক উপকারে আসবে। জাকাত আদায়ের ক্ষেত্রে যদি কোনো ভুল হয়ে যায়; তবে আল্লাহ তাআলা বান্দার দান-অনুদানের কারণে তাঁকে জাকাতের মতো ফরজ ইবাদতের ভুলত্রুটি থেকে রক্ষা করতে পারেন।
পরিশেষে...আল্লাহ তাআলা কর্তৃক নির্ধারিত ফরজ ইবাদতসমূহ পালনের পাশাপাশি নফল ইবাদতসমূহের প্রতি মনোযোগী হওয়া আবশ্যক। আর তা যদি হয় পবিত্র মাস রমজানে। তাহলে তো কথাই নেই। কারণ আল্লাহ তাআলা রমজানের প্রতিটি ইবাদতের মর্যাদা, গুরুত্ব ও ফজিলত বৃদ্ধি করেছেন।
হাদিসের ঘোষণা অনুযায়ী ফরজ ইবাদত-বন্দেগির পাশাপাশি যদি কেউ নফল ইবাদত-বন্দেগি করে; তবে ফরজ ইবাদতের ঘাটতি এ নফল ইবাদত-বন্দেগি দ্বারাই পূরণ করা হবে।
আল্লাহ তাআলা মুসলিম উম্মাহকে ফরজ ইবাদত-বন্দেগি যথাযথ পালনের পাশাপাশি নফল ইবাদত-বন্দেগি করার তাওফিক দান করুন। আমিন।
এমএমএস/জেআইএম