বাংলাদেশে ধান উৎপাদনের সাফল্যের বিষয়ে বাংলাদেশ ও শ্রীলঙ্কার প্রতিনিধিদলের মধ্যে মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। সোমবার বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা কাউন্সিলের সভাকক্ষে এ সভা হয়।
Advertisement
সভায় ঢাকা সফররত শ্রীলঙ্কার সাবেক প্রেসিডেন্ট চন্দ্রিকা বন্দরনায়েকে কুমারাতুঙ্গা ও কৃষিমন্ত্রী মতিয়া চৌধুরীও উপস্থিত ছিলেন।
সভায় চন্দ্রিকা বন্দরনায়েকে কুমারাতুঙ্গা জানতে চান বাংলাদেশ বন্যা, জলোচ্ছ্বাস খরাসহ দুর্যোগ প্রবণ একটি এলাকা। তা সত্ত্বেও ধান উৎপাদনে বাংলাদেশ বিশাল সাফল্য দেখিয়েছে, ম্যাজিকের মতো। এর পেছনে কী কী বিষয় কাজ করেছে?
উত্তরে কৃষিমন্ত্রী মতিয়া চৌধুরী বলেন, ‘এটা কোনো ম্যাজিক নয়, সরকারের দৃঢ় মনোবল ও আন্তরিক চেষ্টার ফলেই আমাদের এই সাফল্য এসেছে।’
Advertisement
তিনি বলেন, কৃষি উৎপাদনের ক্ষেত্রে কৃষককে সরকারের পক্ষ থেকে বিভিন্ন কৃষি উপকরণ সরবরাহ করা, সরকারি-বেসরকারি পর্যায়ে ভালো বীজ সরবরাহ, সেচ সুবিধা দেয়া, স্বল্প সুদে কৃষকের মাঝে কৃষি ঋণ প্রদানসহ কৃষককে নানা ধরনের সুযোগ সুবিধা দেয়া হয়েছে। আর এ কারণেই ধানের উৎপাদন বেড়েছে।
মতিয়া চৌধুরী বলেন, ১৯৯৬ সালে বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনার নেতৃত্বে আওয়ামী লীগ সরকার ক্ষমতায় আসার পর কৃষি সেক্টরে সরকার সবচেয়ে বেশি মনোযোগি হয়। তখন দেশে খাদ্য ঘাটতি ছিল। সরকারের দীর্ঘমেয়াদী পরিকল্পনার কারণে বিশেষ করে বিভিন্ন জাতের হাইব্রিড ধান আবিষ্কার এ সাফল্যের পেছনে বড় কারণ।
‘এছাড়া বন্যা সহিষ্ণু, খরা সহিষ্ণু ও লবণাক্ত সহিষ্ণু ধান আবিষ্কার করার পর ধানের উৎপাদন অনেক বেড়েছে। যে কারণে আমরা খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণতা অর্জন করি।’
চন্দ্রিকা কুমারাতুঙ্গা আরও জানতে চান, ধান উৎপাদনে সেচের যোগানের উৎস কী? সব ধানেই সেচ দিতে হয় কিনা।
Advertisement
উত্তরে মতিয়া চৌধুরী বলেন, ‘ইরি ধানের ক্ষেত্রে সার্বক্ষণিক সেচ দিতে হয়। ডিপ টিউবওয়েল, নদীর পানি, খাল বিলের পানিতে ইরি ধান চাষ করা হয়। এ ছাড়া রাবার ড্যাম এর মাধ্যমেও সেচ সুবিধা দেয়া হয় কৃষককে। আউস ধানের ক্ষেত্রে খুব বেশি সেচের প্রয়োজন হয় না।’
সন্তোষ প্রকাশ করে সভায় চন্দ্রিকা বন্দরনায়েকে কুমারাতুঙ্গা বলেন, ধান উৎপাদনে সাফল্যের বিষয়ে জানতে পারলাম ও দেখলাম। বিষয়গুলো খুব মজার। বাংলাদেশ আরও এগিয়ে যাবে।
এ ছাড়া মতবিনিময় সভায় বাংলাদেশের ধান উৎপাদনে সাফল্যের বিষয়ে বাংলাদেশ ধান গবেষণা ইনস্টিটিউট ও কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতর পৃথক দু’টি প্রতিবেদন উপস্থাপন করে।
প্রথম প্রতিবেদনটি উপস্থাপন করেন ড. শাহজাহান কবির। আর ড. চৈতন্য কুমার দাস দ্বিতীয় প্রতিবেদনটি উপস্থাপন করেন।
এ দু’টি প্রতিবেদনে ধান উৎপাদনসহ অন্যান্য কৃষি উৎপাদনের বিষয়ে বিস্তারিত তথ্য তুলে ধরা হয়।
অন্যদিকে অনুষ্ঠানে বাংলাদেশে ধান উৎপাদন ও অন্যান্য ফসল উৎপাদনের উপর একটি ভিডিও চিত্র প্রদর্শন করা হয়।
সভায় কৃষি মন্ত্রণালয়ের সচিব মোহাম্মদ মঈনউদ্দীন আবদুল্লাহ উপস্থিত ছিলেন।
এফএইচএস/এমএমএ/জেএইচ/এমএস