দেশজুড়ে

জঙ্গি-সংশ্লিষ্টতার অভিযোগ র‌্যাবের, পরিবারের দাবি ‘নিরপরাধ’

কোনো রকম সংঘর্ষ, হামলা-পাল্টা হামলা ও রক্তপাত ছাড়াই নরসিংদী শহরের গাবতলী উত্তরপাড়া এলাকায় জঙ্গি আস্তনা সন্দেহে ঘিরে রাখা বাড়িটিতে র‌্যাবের অভিযান শেষ হয়েছে। ওই বাড়িতে অবস্থানরত যুবকদের আত্মসমর্পণের মধ্য দিয়ে রোববার বেলা ১১টার দিকে শেষ হয় এই অভিযান।

Advertisement

অভিযানে ঘটনাস্থল থেকে কোনো প্রকার অস্ত্র বা গোলাবারুধ উদ্ধার হয়নি। তবে আত্মসমর্পণকারীদের সঙ্গে সিলেটের আতিয়া মহলের জঙ্গিদের যোগসূত্র রয়েছে বলে জানিয়েছে র‌্যাব।

কিন্তু ওই যুবকদের স্বজনরা বলছেন, তাদের সন্তানরা জঙ্গিবাদের সঙ্গে জড়িত নয়। পড়াশোনার সুবাদেই ওই বাড়িতে থাকতো তারা।

শনিবার সন্ধ্যা ৬টার দিকে গাবতলী এলাকার দুবাই প্রবাসী মাঈন উদ্দিনের মালিকানাধীন একতলা বিশিষ্ট বাড়িটি ঘেরাও করে র‌্যাব-১১ এর একটি দল। পরবর্তীতে পরিস্থিতি মোকাবেলায় রাতেই আশপাশের বাসিন্দাদের সরিয়ে নেয়া হয়। জারি করা হয় ১৪৪ ধারা। রোববার বেলা ১১টার দিকে একে একে পাঁচজনকে ওই বাড়ি থেকে বের করে আনা হয়। পরে অধিকতর জিজ্ঞাসাবাদের জন্য তাদের র‌্যাব-১১ কার্যালয়ে নিয়ে যাওয়া হয়েছে।

Advertisement

আত্মসমর্পণকারীরা হলো- নরসিংদী চরাঞ্চলেল চরদিঘলদী গ্রামের আবদুর রহমানের ছেলে সালাহউদ্দিন, নরসিংদী সদর উপজেলার চরভাসানিয়া এলাকার নুরুল ইসলামের ছেলে বাছিকুল ইসলাম, নারায়ণগঞ্জের আড়াইহাজারের আবদুর রাজ্জাকের ছেলে আবু জাফর, গাজীপুরের বোর্ড বাজার এলাকার আব্দুল মজিদের ছেলে মাসুদুর রহমান ও কিশোরগঞ্জের ভৈরব এলাকার মশিউর।

র‌্যাব ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, প্রবাসী মঈন উদ্দিনের বাড়ির কাছে দেশের সর্ববৃহৎ ইসলামী শিক্ষা প্রতিষ্ঠান নরসিংদী জামেয়া কাশেমিয়া ইসলামিয়া মাদরাসা। সালাউদ্দিন নামের ওই মাদরাসার কামিল শ্রেণির একজন ছাত্র পরিচয় দিয়ে চলতি মাসের (মে মাসে) ৩ তারিখ বাড়িটি ভাড়া নেন। এরপর ওই বাড়িতে সালাউদ্দিনসহ চার থেকে পাঁচজন বসবাস করে আসছেন।

র‌্যাব জানায় , তারা জেএমবির সক্রিয় সদস্য এবং সিলেটের আতিয়া মহলে জঙ্গি হামলায় জড়িত জঙ্গিদের সঙ্গে তাদের যোগসূত্র রয়েছে। একই সঙ্গে ওই বাড়িটিতে ছদ্মবেশে অবস্থান নিয়ে তারা নাশকতার পরিকল্পনা করছিল।

তবে র‌্যাবের বোম্ব ডিসপোজাল টিম বাড়িটি থেকে কোনো ধরেনের বোমা তৈরির সরঞ্জাম বা জেহাদি বই উদ্ধার করেতে পারেনি।

Advertisement

অভিযান শেষে র‌্যাবের গণমাধ্যম শাখার পরিচালক মুফতি মাহমুদ খান ঘটনাস্থলে সাংবাদিকদের বলেন, যুবকদের আত্মসমর্পণ করানোই ছিল আমাদের মূল উদ্দেশ্য। তাছাড়া সিলেটের আতিয়া মহলে যে জঙ্গিরা ছিল তাদের সঙ্গে এখানে অবস্থানরতদের যোগসূত্র রয়েছে। তার কিছু প্রমাণ আমরা পেয়েছি। আমরা মোটামুটি নিশ্চিত এই পাঁচ জনের মধ্যে কয়েকজন সেই জঙ্গিদের সঙ্গে সম্পৃক্ত।

অস্ত্র ও বিস্ফোরক উদ্ধার প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ওই বাড়ির তিনটি কক্ষ তল্লাশি করে কোনো অস্ত্র বা বিস্ফোরক পাওয়া যায়নি। আমরা আটকদের জিজ্ঞাসাবাদ করে তথ্য পাওয়ার চেষ্টা করব।

নরসিংদীর শেখেরচর পৌলানপুর জামিয়া ইসলামিয়া মাদরাসার শিক্ষক আবদুর রহমান বলেন, আমার ছেলে সালাউদ্দিন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে সমাজবিজ্ঞানে মার্স্টার্স শেষ করার পর এলাকায় ফিরে ওই বাসায় থেকে টিউশনি করার পাশাপাশি বিসিএস এর প্রস্তুতি নিচ্ছিল। ও জঙ্গি না।

সঞ্জিত সাহা/আরএআর/জেআইএম