জাতীয়

ভাস্কর সৈয়দ আব্দুল্লাহ খালিদের মৃত্যুতে ঢাবি উপাচার্যের শোক

‘অপরাজেয় বাংলা’র ভাস্কর সৈয়দ আব্দুল্লাহ খালিদের মৃত্যুতে গভীর শোক প্রকাশ করেছেন ঢাবি উপাচার্য অধ্যাপক ড. আ আ ম স আরেফিন সিদ্দিক।

Advertisement

রোববার এক শোকবাণীতে উপাচার্য বলেন, ‘অপরাজেয় বাংলা’র ভাস্কর সৈয়দ আব্দুল্লাহ খালিদ তার অনবদ্য সৃষ্টির জন্য সুপরিচিত ছিলেন। ‘অপরাজেয় বাংলা’ বাঙালির শৌর্য ও বীরত্বের চিরকালীন প্রতীক। এই কাজের মধ্য দিয়ে তিনি এ দেশের মানুষের হৃদয়ে অমর হয়ে থাকবেন।

বাণীতে অধ্যাপক ড. আ আ ম স আরেফিন সিদ্দিক মরহুমের রুহের মাগফেরাত কামনা এবং তার পরিবারের শোক-সন্তপ্ত সদস্যদের প্রতি গভীর সমবেদনা জ্ঞাপন করেন।

ফার্স্টএইড বাক্স কাঁধে একজন সেবিকা, সময়ের প্রয়োজনে রাইফেল কাঁধে তুলে নেয়া গ্রীবা উঁচু করে ঋজু ভঙ্গিমায় গ্রামের টগবগে তরুণ এবং দু’হাতে রাইফেল ধরা আরেক শহুরে মুক্তিযোদ্ধা- এই হলো অপরাজেয় বাংলা।

Advertisement

সিলেট জেলা শহরে জন্ম নেওয়া সৈয়দ আব্দুল্লাহ খালিদ ১৯৬৯ সালে তৎকালীন ইস্ট পাকিস্তান কলেজ অব আর্টস অ্যান্ড ক্রাফ্‌টস (বর্তমান ঢাবির চারুকলা ইনিস্টিটিউট) থেকে চিত্রাঙ্কন বিষয়ে স্নাতক ডিগ্রি এবং পরে ১৯৭৪ সালে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় থেকে চিত্রাঙ্কন ও ভাস্কর্যে স্নাতকোত্তর ডিগ্রি অর্জন করেন।

চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাস্কর্য বিভাগে শিক্ষকতা দিয়ে তার কর্মজীবন শুরু হয়। ১৯৭২ সালে সেখানে প্রভাষক থাকাকালীন ডাকসুর উদ্যোগে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কলাভবনের সামনে বাংলাদেশের মহান মুক্তিযুদ্ধের স্মারক ‘অপরাজেয় বাংলা’ নির্মাণের দায়িত্ব পান। অনেক প্রতিকূলতার মধ্য দিয়ে তিনি ১৯৭৩ সালে এর নির্মাণ কাজ শুরু করে ১৯৭৯ সালে ১৬ ডিসেম্বর শেষ করেন।

বাংলাদেশ টেলিভিশন কেন্দ্রের সামনে স্থাপন করা ম্যুরাল ‘আবহমান বাংলা’ এবং ১৯৯৫-১৯৯৬ সালে বাংলাদেশ ব্যাংক প্রধান কার্যালয়ের সামনে টেরাকোটার ভাস্কর্যও নির্মাণ করেন তিনি। এছাড়া তার উল্লেখযোগ্য কাজের মধ্যে রয়েছে ‘অঙ্কুর’, ‘অঙ্গীকার’, ‘ডলফিন’, ‘মা ও শিশু’ ইত্যাদি।

শিল্পকলা ও ভাস্কর্যে গৌরবজনক অবদানের স্বীকৃতিস্বরূপ আব্দুল্লাহ খালিদ ২০১৪ সালে শিল্পকলা পদক এবং ২০১৭ সালে বাংলাদেশ সরকারের সর্বোচ্চ বেসামরিক সম্মাননা একুশে পদকে ভূষিত হন।

Advertisement

উল্লেখ্য, শনিবার (২০ মে) রাত পৌনে বারোটায় বারডেম হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মৃত্যুবরণ করেন এই খ্যাতিমান ভাস্কর। তার বয়স হয়েছিল ৭৫ বছর। মৃত্যুকালে তিনি স্ত্রী, তিন ছেলে, এক মেয়ে, আত্মীয়স্বজনসহ অসংখ্য গুণগ্রাহী রেখে গেছেন।

এমএইচ/এমএমজেড/এমএস