যুক্তরাষ্ট্র প্রবাসী আলিদা শিকদারকে ইসলামী সলিডারিটি গেমসের জন্য কারা নির্বাচন করেছিলেন, তিনি বাকুতে গিয়ে দুটি ইভেন্টের একটিতেও কেন অংশ না নিয়েই আমেরিকা ফিরে গেলেন সেটা এখন বড় প্রশ্ন ক্রীড়াঙ্গনে। অনেকের কাছে রহস্যও; কিন্তু সে রহস্যের জট কিছুতেই খুলছে না।
Advertisement
বাংলাদেশ কন্টিনজেন্টের শেফ দ্য মিশন বাংলাদেশ হ্যান্ডবল ফেডারেশনের সভাপতি নুরুল ফজল বুলবুল দেশে না ফেরা পর্যন্ত সে জট খুলবে বলেও মনে হচ্ছে না। কারণ, বাকুতে আসলে কী ঘটেছিল, তা সেফ দ্য মিশনই বলতে পারবেন।
আলিদাকে নির্বাচন করা হয়েছিল গেমসের ১০০ মিটার স্প্রিন্ট ও লং জাম্পের জন্য। তার ইভেন্ট ছিল প্রথমে ১০০ মিটার, পরে লং জাম্প। স্প্রিন্টের হিটে অংশ না নেয়ার পরই আলিদা চলে আসেন আলোচনায়। বাংলাদেশ অ্যাথলেটিক ফেডারেশন থেকে তখন ব্যাখ্যা দেয়া হয়েছিল দীর্ঘ ভ্রমণক্লান্তি ও শারিরীক অসুস্থার জন্য আলিদা ১০০ মিটারে খেলেননি। লংজাম্প নাকি আলিদার ফেভারিট ইভেন্ট। তাই ওই ইভেন্টের কথা মাথায় রেখেই নাকি ১০০ মিটারে ট্র্যাকে নামেননি তিনি।
কিন্তু পরের দিন যখন লং জাম্পেও খেলেননি যুক্তরাষ্ট্র প্রবাসী এ বাংলাদেশি অ্যাথলেট তখন তাকে নিয়ে ডালপালা ছড়ায় নানা প্রশ্নের। শুরু হয় তাকে নির্বাচন করার নেপথ্য কাহিনী। বাংলাদেশ অ্যাথলেটিক ফেডারেশন অবশ্য তাকে নির্বাচনের দায় নিচ্ছে না। কারণ বর্তমান অ্যাডহক কমিটি গঠনের আগেই বিওএ ক্রীড়াবিদ নির্বাচন করে নাম পাঠিয়েছিল আয়োজকদের কাছে।
Advertisement
এই গেমসে পাঠানো হয়েছিল দু’জন অ্যাথলেট আলিদা ও আবদুর রউফক। রউফের নির্বাচন নিয়ে কারো কোনো প্রশ্ন নেই। কারণ তিনি ট্রায়ালে হারিয়েছেন দেশের দ্রুততম মানব মেজবাহ আহমেদকে। প্রশ্ন উঠেছে আলিদার নির্বাচন নিয়ে। দেশের দ্রুততম মানবী শিরিন আক্তারকে কোনো সুযোগই দেয়া হয়নি তার নিজের যোগ্যতা প্রমাণের। আমেরিকায় থাকেন বলে আলিদা বিনা পরীক্ষায় নির্বাচিত হয়েছেন ইসলামী সলিডারিটি গেমসের জন্য। এ নিয়ে শিরিন হতাশাও প্রকাশ করেছেন ‘আমি ট্রায়ালে বাদ পড়লে কোনো দুঃখ থাকতো না।’
বিওএ এবং অ্যাথলেটিক ফেডারেশন নানাভাবে বলছে শিরিনের চেয়ে আলিদার টাইমিং ভালো। হতে পারে; কিন্তু সে টাইমিং কি পদক জয়ের মতো ছিল? যদি তাই না হয়, তাহলে দেশের দ্রুততম মানবীকে কেন বঞ্চিত করা হলো একটি আন্তর্জাতিক গেমসে অংশ নেয়ার অভিজ্ঞতা থেকে? এটা তো স্বীকৃত যে শিরিন বাংলাদেশের সব নারীদের চেয়ে বেশি জোরে দৌড়ান। আলিদা অংশ না নেয়ায় শিরিনের আপসোসটা নিশ্চয় আরো বেড়েছে। প্রশ্ন হলো, বছরজুড়ে কষ্ট করা শিরিনকে বঞ্চিত করায় লাভ হলো কার? বরং না খেলে গেমস থেকে ক্রীড়াবিদ ফিরে যাওয়ায় দেশের সুনামহানিও বটে।
বাংলাদেশ অলিম্পিক অ্যাসোসিয়েশন (বিওএ) আলিদার বিষয়ে আনুষ্ঠানিক কোনো মন্তব্য করছে না। সংস্থার মহাসচিব সৈয়দ শাহেদ রেজা গণমাধ্যমকে বলেছেন, ‘আমি যতটুকু জানি সে অসুস্থই ছিল। তা নাহলে তো একজন ক্রীড়াবিদের গেমসে গিয়ে না খেলার কোনো কারণ নেই। তারপরও আমাদের শেফ দ্য মিশন দেশে না ফেরা পর্যন্ত কিছু বলতে পারবো না। তিনি ফিরলেই জানতে পারবো আসলে আলিদার কি হয়েছিল, কেন অংশ নেয়নি। তবে এখন থেকে আন্তর্জাতিক গেমসের জন্য ট্রায়াল ছাড়া ক্রীড়াবিদ নির্বাচন করা হবে না। এ নিয়ে নীতিমালা তৈরি করা হবে।’
আরআই/আইএইচএস/জেআইএম
Advertisement