রাজধানীর বনানীতে ‘দ্য রেইন ট্রি’ হোটেলে দুই তরুণী ধর্ষণের ভিডিওচিত্র উদ্ধারের জন্য আসামি সাফাত ও সাদমানের জব্দ করা পাঁচটি মোবাইল সেট ফরেনসিক পরীক্ষার জন্য পুলিশের অপরাধ ও তদন্ত বিভাগে (সিআইডি) পাঠানো হচ্ছে। একই সঙ্গে পাঠানো হচ্ছে তাদের ব্যবহৃত একটি পাওয়ার ব্যাংকও।
Advertisement
শনিবার মামলার তদন্ত কর্মকর্তা ডিএমপির ভিকটিম সাপোর্ট সেন্টারের পরিদর্শক ইসমত আরা এমি জব্দ করা এসব নমুনা ফরেনসিক পরীক্ষার জন্য আদালতের অনুমোদন চেয়ে আবেদন করেছেন।
আবেদনটি রোববার আদালতে উপস্থাপন করা হবে। আদালতের অনুমতির পর তা সিআইডিতে পরীক্ষার জন্য পাঠানো হবে বলে জাগো নিউজকে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন আদালতের সাধারণ নিবন্ধন (জিআর) শাখার কর্মকর্তা আব্দুল মান্নান।
আবেদন করা ডিভাইসগুলো হচ্ছে- আসামি সাফাত ও সাদমানের কাছ থেকে জব্দ করা ইংল্যান্ডের তৈরি একটি ভার্চ হ্যান্ড সেট, ওয়ালটন এল-১০ মডেলের মোবাইল একটি, হুয়াওয়ের মোবাইল ফোন একটি, নকিয়া মোবাইল ফোন একটি, আইফোন-এস একটি এবং একটি এইচ ডেল্টা ব্র্যান্ডের পাওয়ার ব্যাংক।
Advertisement
এর আগে গত বৃহস্পতিবার মহানগর হাকিম আহসান হাবিবের আদালতে সাফাত আহমেদ ও সাদমান সাকিফ হাকিম সাদবীর ইয়াসির আহসান চৌধুরীর আদালতে স্বীকারোক্তিমুলক জবানবন্দি দেন। পরে তাদের কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন আদালত।
জবানবন্দিতে সাফাত আহমেদ ও সাদমান সাকিফ বলেন, ঘটনার ১০-১৫ দিন আগে হোটেল পিকাসোতে ভিকটিম দুই তরুণীর সঙ্গে বন্ধু সাদমান সাকিফের মাধ্যমে পরিচয় হয়। পরিচয়ের সূত্র ধরে তাদের সঙ্গে মোবাইলে কথোপকথন হতো।
২৮ মার্চ সাদমানের জন্মদিনের অনুষ্ঠানে ওই হোটেলে দুই তরুণীকে আমন্ত্রণ করেন সাদমান। পার্টিতে আসার পর তারা সুইমিং পুলে গোসল করেন। গোসল শেষে জন্মদিনের কেক কাটা হয়।
এরপর দুই তরুণীকে নিয়ে সাফাত ও নাঈম পৃথক দুটি রুমে যান। রুমে কথা বলতে বলতে দুই তরুণীর সঙ্গে আরও ঘনিষ্ঠ হন তারা।
Advertisement
একপর্যায়ে সাফাত ও সাদমান জোরপূর্বক দুই তরুণীকে ধর্ষণ করেন। ওই সময় তরুণীরা কান্নায় ভেঙে পড়েন। দুই তরুণীকে তারা বোঝান। পরবর্তীতে তাদের মধ্যে বিষয়টি মীমাংসা হয়ে যায়।
এর আগে সুষ্ঠু তদন্তের জন্য মামলার প্রধান আসামি সাফাত আহমেদকে ছয়দিন ও সাদমান সাকিফকে পাঁচদিনের রিমান্ডের আদেশ দেন ঢাকা মহানগর হাকিম রায়হানুল ইসলাম।
১১ মে রাতে সিলেট থেকে সাফাত আহমেদ ও সাদমান সাকিফকে গ্রেফতার করা হয়।
গত ২৮ মার্চ ওই হোটেলে ধর্ষণের শিকার হন বিশ্ববিদ্যালয় পড়ুয়া দুই তরুণী। এ ঘটনার ৪০ দিন পর ৬ মে রাজধানীর বনানী থানায় আপন জুয়েলার্সের মালিক দিলদার আহমেদের ছেলে সাফাত আহমেদ, নাঈম আশরাফ (সিরাজগঞ্জের আবদুল হালিম) ও সাদমান সাকিফসহ পাঁচজনের বিরুদ্ধে মামলা করেন তারা।
বর্তমানে পাঁচ আসামিকেই গ্রেফতার করেছে পুলিশ। এর মধ্যে নাঈম ও বিল্লাল রিমান্ডে রয়েছে।
জেএ/এমএমএ/জেআইএম