খেলাধুলা

সৌম্যর ‘পেরিস্কোপ’ দেখে আম্পায়ারও মুগ্ধ

পেরিস্কোপ শটের আবিস্কারক কে? ভুল বললাম, বলুন পেরিস্কোপের আবিস্কারক কে? জানার জন্য সাধারণ জ্ঞানের বই খুলে বসতে পারেন। তার আগে এ প্রসঙ্গের অবতারনা কেন, সেটা জানা প্রয়োজন। বাংলাদেশের ওপেনার সৌম্য সরকারের নিজস্ব এক আবিষ্কার আছে, যেটার নাম পেয়ে গেছে পেরিস্কোপ শট। দিলশানের ‘দিলস্কুপ’ কিংবা মহেন্দ্র সিং ধোনির ‘হেলিকপ্টার’ শটের মত। বাংলাদেশের আশরাফুলও একটি বিশেষ শট খেলতেন। যেটির নাম কিছুদিনের জন্য হয়ে গিয়েছিল ‘অ্যাশ শট’।

Advertisement

পেরিস্কোপ শটকে এতটা মুগ্ধতার পর্যায়ে নিয়ে যাবেন সৌম্য সরকার, সেটা সম্ভবত তিনি নিজেও ভাবতে পারেননি। ব্যাটকে গিটার চালানোর ভঙ্গিতে যে বাউন্সারগুলো বা শর্ট বলগুলোকে তিনি উইকেটরক্ষক কিংবা প্রথম স্লিপের মাথার ওপর দিয়ে পাঠিয়ে দেন, সেগুলোকেই পেরিস্কোপ (যে যন্ত্র দিয়ে ডুবোজাহাজ থেকে ওপরের দৃশ্য দেখা হয়ে থাকে) শট বলা হয়ে থাকে। বুকের কাছাকাছি উঠে আসা বলগুলো শচীন টেন্ডুলকারও আপার কাট করে খেলেছেন; কিন্তু সৌম্য সেগুলো খেলেন কিছুটা দেরিতে, বলের লাইন কিছুটা দেখে তারপর আপার কাট করেন, এ কারণেই সেটার নাম পেয়ে গেছে ‘পেরিস্কোপ’। পায়ের পাতায় ভর দিয়েও এ শট খেলেন সৌম্য।

২০১৫ সালে পাকিস্তানের বিপক্ষে সিরিজেই প্রথম পেরিস্কোপ শটের ক্যারিশমা দেখান সৌম্য। এরপর সুযোগ পেলেই নিজের আবিস্কারে ‘শান’ দিয়ে নেন তিনি। তবে, শুক্রবার ডাবলিনের মালাহাইদে স্বাগতিক আয়ারল্যান্ডের বিপক্ষে যে অসাধারণ পেরিস্কোপ শটটি খেলেছেন সৌম্য, সেটিই মুগ্ধ করেছে মাঠে দাঁড়ানো খোদ আম্পায়ারকেও।

আয়ারল্যান্ডের ১৮১ রানের জবাব দিতে নেমে ব্যাট করছিল বাংলাদেশ। খেলা চলছে ২৫তম ওভারের। তৃতীয় বলটি করলেন ব্যারি ম্যাকার্থি। বলটা লাফিয়ে উঠেছিল বুক বরাবর। সৌম্য পেছন দিকে একটু ঝুঁলে পড়লেন। বুকের ওপর বলটিকে আসার সুযোগ করে দিতে সময় নিলেন। বল যখন তার লাইন ছেড়ে বেরিয়ে যাচ্ছিল তখনই গিটার চালানোর ভঙিতে ব্যাটটা ঠেলে দিলেন। উইকেটরক্ষক এবং প্রথম স্লিপের ওপর দিতে বল চলে গেলো সোজা মাঠের বাইরে।

Advertisement

অসাধারণ আত্মবিশ্বাস দেখা গিয়েছিল সৌম্যর শটটিতে। দেখলেই যে কেউ এই শটে মুদ্ধ হয়ে যাওয়ার কথা। মাঠে তখন ননস্ট্রাইকিং প্রান্তে দাঁড়িয়েছিলেন আম্পায়ার ইংলিশ আম্পায়ার রোলি ব্ল্যাক। সৌম্যর শট দেখে তিনি এতটাই মুগ্ধ হয়েছেন যে, সঙ্গে সঙ্গেই মৃদু হাততালি দিয়ে অভিবাদন জানালেন সৌম্যকে।

শেষ পর্যন্ত সৌম্য অপরাজিত ছিলেন ৬৮ বলে ৮৭ রানে। ১১টি বাউন্ডারি এবং ২টি ছক্কায় এই রান করেন তিনি। বাংলাদেশকে জয় উপহার দেন ৮ উইকেটের ব্যবধানে। 

আইএইচএস/এমএস

Advertisement