মতামত

চিকুনগুনিয়ার প্রাদুর্ভাব : মশা নিধন করুন

রাজধানী ঢাকায় গত দুইমাসে চিকুনগুনিয়া ভাইরাসে আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা অনেক বেড়েছে। এ নিয়ে উদ্বেগ-উৎকণ্ঠা দেখা দিয়েছে লোকজনের মধ্যে। যদিও স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেছেন চিকনগুনিয়া ও ডেঙ্গু রোগের প্রাদুর্ভাবের কোনো আশঙ্কা নেই। গতকাল বুধবার সচিবালয়ে চিকনগুনিয়া রোগ বিস্তাররোধে করণীয় সংক্রান্ত এক সভায় সভাপতিত্বকালে তিনি একথা জানান। চিকনগুনিয়া মরণঘাতী কোনো রোগ নয় উল্লেখ করে এ নিয়ে অহেতুক ভীত বা আতঙ্কিত না হয়ে সচেতন থাকার জন্য দেশবাসীর প্রতি অনুরোধ জানিয়েছেন তিনি। সেইসঙ্গে এ দুই জ্বরের ভাইরাস প্রতিরোধে গণসচেতনতা কার্যক্রম জোরদার করার আহ্বান জানিয়েছেন মন্ত্রী।

Advertisement

চিকুনগুনিয়া মশাবাহিত একটি ভাইরাসের নাম। ডেঙ্গু রোগের ভাইরাস বহনকারী মশাই চিকুনগুনিয়া ভাইরাস বহন করে। গ্রামাঞ্চলে অনেকে একে ‘ল্যাংড়া জ্বর’ বলে। এ রোগের লক্ষণ হচ্ছে প্রথমদিন থেকেই রোগীর অনেক বেশি তাপমাত্রায় জ্বর ওঠে। কাঁপুনি দিয়ে জ্বর আসে। প্রায়ই তা একশ’ চার বা পাঁচ ডিগ্রি ফারেনহাইট তাপমাত্রায় উঠে যায়। একইসঙ্গে প্রচণ্ড মাথা ব্যথা, শরীর ব্যথা, বিশেষ করে হাড়ের জয়েন্টে ব্যথা হয়। জ্বর ভালো হলেও অনেকদিন ধরে ভোগান্তির কারণ হয়ে দাঁড়ায়। এ রোগের কোনো ভ্যাকসিন আবিষ্কার হয়নি। তাই প্রতিকারের আগে প্রতিরোধ গড়ে তোলা জরুরি। সেজন্য আমাদের সচেতন হতে হবে।

যেহেতু মশার কারণে রোগটি ছড়ায়, তাই মশার কামড় থেকে বাঁচার ব্যবস্থা করতে হবে। এ জন্য ঘরের বারান্দা, আঙিনা বা ছাদ পরিষ্কার রাখতে হবে। এসি বা ফ্রিজের নিচেও যেন পানি জমে না থাকে। মশাটি দিনের বেলায় কামড়ায়, তাই দিনে কেউ ঘুমালে অবশ্যই মশারি ব্যবহার করতে হবে। মশা মারার জন্য স্প্রে ব্যবহার করা যেতে পারে।বাচ্চাদের হাফপ্যান্টের বদলে ফুলপ্যান্ট পরাতে হবে। সবার খেয়াল রাখতে হবে যেন মশা ডিম পাড়ার সুযোগ না পায়। আর জ্বরাক্রান্ত রোগীকে বেশি মাত্রায় পানি, কিংবা শরবত খাওয়ানো যেতে পারে।

চিকুনগুনিয়ার প্রকোপ থেকে বাঁচতে হলে মশক নিধনে ঢাকার দুই সিটি করপোরেশনকে আরো সক্রিয় হতে হবে যাতে এডিস মশার সংখ্যা বৃদ্ধি না পায়। এ লক্ষ্যে সরকার, স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়, গণমাধ্যমসহ সংশ্লিষ্ট সংস্থাগুলোকে এক সঙ্গে কাজ করতে হবে। মানুষজনকে সচেতন করে তুলতে হবে। মনে রাখতে হবে প্রতিষেধকের চেয়ে প্রতিরোধই উত্তম।

Advertisement

এইচআর/পিআর