খেলাধুলা

নিউজিল্যান্ডকে ২৫৮ রানের লক্ষ্য দিল বাংলাদেশ

নিজেদের দ্বিতীয় ম্যাচে বড় স্কোরের সম্ভাবনা জাগিয়েছিল বাংলাদেশ! সেটা বাস্তবে রূপ নিল কই? শেষ দিকে যখন হাত খুলে খেলার কথা ছিল মাহমুদউল্লাহ-মোসাদ্দেকদের, তখনই ছন্দ পতন। উইকেট পতনের মিছিলে যোগ দেন ব্যাটসম্যানরা। তাতে নির্ধারিত ৫০ ওভারে ৭ উইকেট হারিয়ে বাংলাদেশের ইনিংস থামে ২৫৭ রানে। জয়ের জন্য নিউজিল্যান্ডের সামনে ২৫৮ রানের লক্ষ্য ছুড়ে দিয়েছে মাশরাফি বিন মর্তুজার দল।

Advertisement

ডাবলিনের ক্লনটার্ফ ক্রিকেট ক্লাব গ্রাউন্ডে টস হেরে প্রথমে ব্যাট করে বাংলাদেশ। কিউইদের বিপক্ষে দারুণ সূচনা পেয়েছেন টাইগাররা। উদ্বোধনী জুটিতে এসেছে ৭২ রান। এই জুটি ভাঙেন জিমি নিশাম। তামিম ইকবালকে তিনি তালুবন্দী করান কলিন মুনরোর।

সৌম্য সরকারের সঙ্গে ইনিংসের গোড়াপত্তন করতে নামেন তামিম। সাবধানেই পা ফেলেন তিনি। গড়ে তোলেন প্রতিরোধের প্রাচীর। কিন্তু নিশামের ধাক্কায় সেই প্রাচীর ভেঙ্গে গেছে। তামিম থেমেছেন ২৩ রানে। ৪২ বল মোকাবেলা করে তিনটি চারের সাহায্যে ইনিংসটি সাজান বাংলাদেশি এই ওপেনার।

ওয়ানডেতে তিনে ব্যাট করতে নামেন সাব্বির রহমান রুম্মন। টপ-অর্ডার এই ব্যাটসম্যানের কাছে অনেক বেশি প্রত্যাশা টাইগারদের। কিন্তু আজও হতাশ করলেন সাব্বির। আগের ম্যাচে আয়ারল্যান্ডের বিপক্ষে রানের খাতাই খুলতে পারেননি। আর দ্বিতীয় ম্যাচে কিউইদের বিপক্ষে ৪ বল খেলে সাব্বির করতে পেরেছেন মাত্র ১ রান। মিচেল স্যান্টনারের বলে সরাসরি বোল্ড হন তিনি।

Advertisement

সৌম্য সরকার ফিফটি করলেন। এরপর ইনিংসটাকে বড় করার চেষ্টা করেছিলেন। কিন্তু পারলেন না। সেঞ্চুরি না পাওয়ার আক্ষেপ নিয়ে আবারও ফিরতে হলো সাজঘরে। দারুণ ব্যাটিং করেছেন সৌম্য। ইশ সোধির কাছে পরাস্ত হয়েছেন বাংলাদেশি এই ওপেনার। সোধির বলটি উড়িয়ে মারতে গিয়ে শট মিড উইকেটে তিনি ধরা পড়লেন টম লাথামের হাতে। বিদায়ের আগে ৬৭ বলে ৫টি চারের সাহায্যে সৌম্য করেছেন ৬১ রান।

সৌম্যর বিদায়ের পর ব্যাট করতে নামেন সাকিব আল হাসান। নিজেকে মেলে ধরতে পারেননি বিশ্বসেরা অলরাউন্ডার। প্রথম ম্যাচের পর দ্বিতীয় ম্যাচেও ব্যাট হাতে সাকিব দিলেন ব্যর্থতার পরিচয়। মাত্র ৬ রান করতে পেরেছেন তিনি। ইশ সোধির কাছে পরাস্ত হয়েছিলেন সৌম্য; তার জায়গায় ব্যাট করতে নেমে সাকিবও শিকার হয়েছেন ওই সোধির।

যতক্ষণ ক্রিজে ছিলেন, ততক্ষণ রানের চাকা সচল রেখেছেন মুশফিকুর রহীম। তার দায়িত্বশীল ব্যাটিংয়ে সম্ভাবনা জেগেছিল বাংলাদেশের বড় স্কোরের। চার নম্বরে ব্যাট করতে নেমে মুশফিক তুলে নিয়েছেন ফিফটি। কিন্তু সম্ভাবনা জাগিয়ে বিদায় নিলেন মুশফিক। আউট হয়েছেন দলীয় ১৮১ রানে। জিমি নিশামের বলে থার্ডম্যান অঞ্চলে মুশফিক ধরা পড়েন লুক রনকির হাতে। ৬৬ বলে চারটি চার ও একটি ছক্কায় ৫৫ রান করেছেন বাংলাদেশি এই উইকেটরক্ষক। ওয়ানডেতে এটি মুশফিকের ২৪তম ফিফটি।

মুশফিকের পর ফিফটির দেখা পেয়েছেন মাহমুদউল্লাহ রিয়াদও। ওয়ানডে ক্যারিয়ারের ১৭তম হাফ সেঞ্চুরি তুলে নেয়ার পর বেশিক্ষণ ক্রিজে থাকতে পারেননি মাহমুদউল্লাহ। বিদায় নিয়েছেন ব্যক্তিগত ৫১ রানের মাথায়। ৫৬ বলে ৬টি চারের সাহায্য মূল্যবান ইনিংসটি সাজান মাহমুদউল্লাহ। হামিশ বেনেতের বলে শট ফাইন লেগে শেঠ রাঁচির হাতে ক্যাচ দিয়ে প্যাভিলিয়নের পথ ধরেন তিনি।

Advertisement

শেষ ওভারে তিন উইকেটের পতন ঘটে বাংলাদেশের। ৫০তম ওভারের প্রথম বলে বেনেতের রাঁচির হাতে ক্যাচ তুলে দেন মোসাদ্দেক। ৪১ বলে চারটি চারের সাহায্যে ৪১ রান করেন মোসাদ্দেক। মেহেদী হাসান মিরাজ করেছেন ৬ বলে ৬ রান। মাশরাফি রানআউটে কাটা পড়েন। ১ রান দলের স্কোরশিটে যোগ করেন টাইগার অধিনায়ক। দুই অপরাজিত ব্যাটসম্যান রুবেল হোসেন ও মোস্তাফিজুর রহমান খুলতে পারেননি রানের খাতা।

নিউজিল্যান্ডের সেরা বোলার হামিশ বেনেত। ১০ ওভারে একটি মেডেনসহ ৩১ রান দিয়ে ৩ উইকেট লাভ করেন তিনি। ইশ সোধি ও জিমি নিশাম নিয়েছেন দুটি করে উইকেট। আর মিচেল স্যান্টনার নিয়েছেন একটি উইকেট।

বাংলাদেশ একাদশ : মাশরাফি বিন মর্তুজা (অধিনায়ক), তামিম ইকবাল, সৌম্য সরকার, সাব্বির রহমান রুম্মন, মুশফিকুর রহীম (উইকেটরক্ষক), সাকিব আল হাসান, মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ, রুবেল হোসেন, মেহেদী হাসান মিরাজ, মোস্তাফিজুর রহমান ও মোসাদ্দেক হোসেন সৈকত।

নিউজিল্যান্ড একাদশ : টম লাথাম (অধিনায়ক), লুক রনকি, নেইল ব্রুম, জর্জ ওয়ার্কার, রস টেলর, কলিন মুনরো, জিমি নিশাম, শেঠ রাঁচি, মিচেল স্যান্টনার, ইশ সোধি ও হামিশ বেনেত।

এনইউ/এমএস