এটা খুবই দুঃখজনক যে প্রশ্ন ফাঁসের মত গুরুতর অপরাধের ঘটনা ঘটেই চলেছে। নানা রকম উদ্যোগ সত্ত্বেও প্রশ্ন ফাঁস ঠেকানো যাচ্ছে না। বিভিন্ন পাবলিক পরীক্ষা থেকে শুরু করে চাকরির প্রতিযোগিতামূলক নিয়োগ পরীক্ষার প্রশ্নও ফাঁস হচ্ছে। সবশেষ এইচএসসি পরীক্ষায় গণিতের প্রশ্নপত্র ফাঁস হওয়ার অভিযোগ পাওয়া গেছে। গত শনিবার উচ্চমাধ্যমিক পরীক্ষার উচ্চতর গণিত বিষয়ের ফাঁস হওয়া প্রশ্নমালা সমাধানের উৎসব বসেছিল রাজধানীর বুয়েট এলাকায়। এ বিষয়ে গণমাধ্যমে খবরও ছাপা হয়েছে। এ নিয়ে তোলপাড় সৃষ্টি হয়েছে। প্রশ্ন হচ্ছে প্রশ্ন ফাঁসের ফাঁস থেকে মুক্তি কবে?
Advertisement
গণমাধ্যমের খবর থেকে জানা যায়, পরীক্ষা শুরুর বেশ কিছু সময় আগে প্রশ্নপত্র পরীক্ষার হলে পৌঁছালে নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে প্রশ্নপত্রের প্যাকেট খুলে মুঠোফোনের ক্যামেরায় ছবি তুলে তা ইন্টারনেটের মাধ্যমে ফাঁস করা হয়। এতে পরীক্ষার দায়িত্বে থাকা শিক্ষক বা পরীক্ষা ব্যবস্থাপক জড়িত। এরা যে অনৈতিক কর্মকাণ্ডের সাথে যুক্ত হন তাতে কোনো অবস্থায়ই শিক্ষার মতো বিষয়ে তাদের দায়িত্বে বহাল রাখা উচিত নয়। দুঃখজনক হচ্ছে এক শ্রেণির শিক্ষার্থী এবং অভিভাবকও এই অনৈতিক প্রক্রিয়ায় প্রশ্ন সংগ্রহ করাকে উৎসাহ যোগাচ্ছেন। এ অবস্থার অবসান হওয়া অত্যন্ত জরুরি।
এটা অস্বীকার করার উপায় নেই যে প্রশ্ন ফাঁসকারী একাধিক চক্র বিরাজমান। তারা মোটা অংকের টাকার বিনিময়ে বিভিন্ন পরীক্ষার প্রশ্ন ফাঁস করে। তারা প্রযুক্তির অপব্যবহার করেও প্রশ্ন ফাঁস করছে। এদের পেছনে শক্তিশালী হাত থাকাও অসম্ভব কোনো ব্যাপার নয়। অভিযোগ আছে সর্ষের ভেতরেই রয়েছে ভূত। নাহলে এই চক্রকে কেন সামাল দেয়া যাচ্ছে না। প্রশ্নফাঁসের কারণে দেখা দিচ্ছে বিশৃ্ঙ্খলা। পরীক্ষার্থীরা নানা রকম গুজবে কান দিয়ে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। অভিভাবকরাও যার পর নাই চিন্তিত। এ অবস্থায় যে কোনো মূল্যে প্রশ্ন ফাঁস রোধ করতে হবে।
প্রশ্নপত্র ফাঁসকারীদের বিরুদ্ধে কঠোর শাস্তির বিধানসহ আইন রয়েছে। কিন্তু সেই আইনে কারো সাজা হয়েছে এমন নজির মেলা ভার। দুষ্টের দমন ও শিষ্টের লালন ছাড়া সমাজে আইন প্রতিষ্ঠা কঠিন। যত ব্যবস্থার কথাই বলা হোক না কেন অপরাধীর শাস্তি না হলে কোনো অবস্থায়ই অপরাধ বন্ধ করা যাবে না। সবচেয়ে বড় কথা হচ্ছে সর্ষের ভেতরের ভূত আগে তাড়াতে হবে। অভ্যন্তরীণ কোনো সহযোগিতা ছাড়া প্রশ্নফাঁস অসম্ভব ব্যাপার। শনিবারের ঘটনায় এটা আবারো প্রমাণিত হল। এই বিষয়টিকে গুরুত্ব দিয়ে প্রশ্নফাঁস রোধে সর্বাত্মক প্রতিরোধ গড়ে তুলতে হবে।
Advertisement
এইচআর/আরআইপি