ব্যাংকিং খাতে বেড়েই চলেছে খেলাপি ঋণের পরিমাণ। চলতি বছরের মার্চ শেষে এ খাতে খেলাপি ঋণের পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ৭৩ হাজার ৪০৯ কোটি টাকা। যা মোট বিতরণ করা ঋণের ১০ দশমিক ৫৩ শতাংশ।
Advertisement
খেলাপি ঋণের ওপর কেন্দ্রীয় ব্যাংকের তৈরি করা মার্চ’১৭ প্রান্তিকের সর্বশেষ প্রতিবেদনে এ তথ্য জানা গেছে। বিশ্লেষকরা বলছেন, একদিকে ঋণ বিতরণে অদক্ষতা, অব্যবস্থাপনা, অনিয়ম-দুর্নীতি হচ্ছে। অন্যদিকে যাচাই-বাছাই না করেই দেয়া হচ্ছে ঋণ। এছাড়া বিশেষ সুবিধায় নিয়মিত করা ঋণ আবারও খেলাপি হয়ে পড়ছে।
এতে লাগামহীনভাবে বাড়ছে খেলাপি ঋণ। তাই খেলাপি বিষয়ে সতর্ক ও সচেতন না হলে আগামীতে অনেক ব্যাংক তাদের অস্তিত্ব হারাবে বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা।কেন্দ্রীয় ব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী, ২০১৭ সালের মার্চ শেষে ব্যাংক খাতে বিতরণের পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ৬ লাখ ৯৭ হাজার কোটি টাকা। এর মধ্যে খেলাপি ঋণের পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ৭৩ হাজার ৪০৯ কোটি টাকা, যা ডিসেম্বর ২০১৬ শেষে ছিল ৬২ হাজার ১৭২ কোটি টাকা। অর্থাৎ তিন মাসে খেলাপি ঋণ বেড়েছে ১১ হাজার ২৩৭ কোটি টাকা।
আর এক বছরের ব্যবধানে খেলাপি ঋণ বেড়েছে প্রায় ১৪ হাজার কোটি টাকা। ২০১৬ সালের মার্চ প্রান্তিক শেষে ব্যাংকিং খাতে খেলাপি ঋণের পরিমাণ ছিল ৫৯ হাজার ৪০০ কোটি টাকা।
Advertisement
প্রতিবেদনের তথ্য বিশ্লেষণে দেখা যায়, চলতি বছরের মার্চ শেষে রাষ্ট্রায়ত্ত সোনালী, অগ্রণী, জনতা, রূপালী, বেসিক ও বাংলাদেশ ডেভেলপমেন্ট ব্যাংকের খেলাপি ঋণের পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ৩৫ হাজার ৭১৬ কোটি টাকা, যা আগের ডিসেম্বর’১৬ প্রান্তিকের চেয়ে ৪ হাজার ৬৯১ কোটি টাকা বেশি।
প্রতিবেদনে আরও দেখা যায়, মার্চ’১৭ শেষে বেসরকারি খাতের ব্যাংকগুলোতে খেলাপি ঋণের পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ২৯ হাজার ৭২৭ কোটি টাকা, যা তিন মাসের ব্যবধানে ৬ হাজার ৬৭০ কোটি টাকা বেশি। আর বিদেশি খাতের ব্যাংকগুলোতে মার্চ’১৭ প্রান্তিকে ১২৩ কোটি টাকা কমায় খেলাপি ঋণের পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ২ হাজার ২৮২ কোটি টাকা।
এ বিষয়ে বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক গভর্নর সালেহ উদ্দিন আহমেদ বলেন, অনিয়ম-দুর্নীতির আর অব্যবস্থাপনায় ব্যাংকিং খাতে খেলাপি ঋণ বেড়েছে। বিশেষ করে সরকারি ব্যাংকগুলোর খেলাপি ঋণ। তাদের যেন কোনো জবাবদিহিতা নেই। তাই এখন কেন্দ্রীয় ব্যাংককে এ বিষয়ে কার্যকর পদক্ষেপ নিতে হবে। একই সঙ্গে পরিচালনা পর্ষদ ও ব্যবস্থাপকদের জবাবদিহিতার মধ্যে আনতে হবে।
তিনি আরও বলেন, এছাড়াও খেলাপি ঋণ কমাতে ব্যাংকগুলোকে টার্গেট নির্ধারণ করে দিতে হবে। আর যেসব ব্যাংক তা অর্জন করতে পারবে না ওই ব্যাংকের কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে শস্তিমূলক ব্যবস্থা নিতে হবে। আর যারা ভালো করবেন তাদের পুরস্কৃত করতে হবে, যাতে অন্যরা উৎসাহ পায়।
Advertisement
এসআই/এসআর/আরআইপি