ভারতের রাষ্ট্রপতির খোঁজে কংগ্রেস সভানেত্রী সোনিয়া গান্ধীর সঙ্গে বৈঠক করেছেন পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী ও তৃণমূল কংগ্রেস প্রধান মমতা ব্যানার্জি। মঙ্গলবার বিকেলে দিল্লির ১০ জনপথে সোনিয়ার বাসভবনেই ভারতের এই প্রধান দুই বিরোধী নেত্রী একান্তে বৈঠক করেন।
Advertisement
আগামী জুলাইয়ে ভারতের রাষ্ট্রপতি নির্বাচন। মে মাসের শেষের দিকে স্থির হবে নির্বাচনের দিনক্ষণ। তাই এক মাস আগে থেকেই রাষ্ট্রপতি পদপ্রার্থী হিসেবে বিরোধী শিবির থেকে সহমতের ভিত্তিতে প্রার্থী বাছাইয়ের প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে।
বিষয়টি নিয়ে ইতোমধ্যেই বিহারের মুখ্যমন্ত্রী ও জনতা দল ইউনাইটেড প্রধান নীতিশ কুমার, সিপিআইএম সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক সীতারাম ইয়েচুরি, সিপিআই নেতা ডি. রাজা, এনসিপি প্রধান শারদ পাওয়ার, আরজেডি প্রধান লালু প্রসাদ যাদব, সমাজবাদী পার্টির প্রধান ও উত্তর প্রদেশের সাবেক মুখ্যমন্ত্রী অখিলেশ যাদবসহ কয়েকজন নেতার সঙ্গে প্রাথমিক আলোচনা সেরে ফেলেছেন কংগ্রেস সভানেত্রী।
বাদ ছিলেন বিরোধী শিবিরে মমতার মতো গুরুত্বপূর্ণ নেত্রীর মতামত। তাই এবার বিষয়টি নিয়ে মমতার পরামর্শ নেন সোনিয়া। এদিন সোনিয়ার বাসভবনে বৈঠক শুরু হয় বিকেল ৫টা নাগাদ, বৈঠক চলে প্রায় আধা ঘন্টা। বৈঠকের মাঝে এসে যোগ দেন রাহুল গান্ধীও।
Advertisement
বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের সামনে মমতা বলেন, ‘খুব গুরুত্বপূর্ণ বৈঠক হয়েছে। আমরা দুইজনের মধ্যে বিভিন্ন ইস্যুতে মতবিনিময় করেছি। রাষ্ট্রপতি নির্বাচনের পাশাপাশি অন্য বিষয় নিয়েও আমাদের মধ্যে আলোচনা হয়েছে।’
যদিও রাষ্ট্রপতি পদে কারও নাম নিয়ে আলোচনা হয়নি বলে জানান তিনি। মমতা বলেন, ‘রাষ্ট্রপতি পদে কারও নাম নিয়ে আলোচনা হয়নি। তবে আমরা চাই যেই হোন না কেন তিনি হবেন সর্বসম্মত এবং যেটা দেশের জন্য মঙ্গলজনক হবে। বিষয়টি নিয়ে আগামী সপ্তাহে ফের বৈঠক হতে পারে। এবং অন দলের সঙ্গেও আলোচনা হবে।’
রাষ্ট্রপতি পদে ইতোমধ্যেই বর্তমান রাষ্ট্রপতি প্রণব মুখার্জি, পশ্চিমবঙ্গের সাবেক রাজ্যপাল গোপাল কৃষ্ণ গান্ধী, লোকসভার সাবেক স্পীকার মীরা কুমারসহ একাধিক নাম নিয়ে আলোচনা হয়েছে বিরোধীদের মধ্যে। বিহারের মুখ্যমন্ত্রী প্রণব মুখার্জিকেই ফের রাষ্ট্রপতি করার প্রস্তাব দিয়েছেন। প্রণবের প্রতি দুর্বলতা রয়েছে মমতারও। প্রণবে আপত্তি নেই সীতারাম ইয়েচুরিরও।
যদিও প্রণব মুখার্জি জানিয়ে দিয়েছেন তিনি একটি শিবিরের প্রার্থী হতে চান না। সবদলের পক্ষ থেকে যদি সর্বসম্মতিক্রমে তার নাম রাষ্ট্রপতি পদের জন্য প্রস্তাব করা হয় তবেই তিনি বিষয়টিতে রাজি হবেন। তবে শেষপর্যন্ত সর্বসম্মতিক্রমে প্রণব মুখার্জি বা অন্য কেউ নির্বাচিত না হলে গোপাল কৃষ্ণকেই বিরোধীদের প্রার্থী করা হতে পারে।
Advertisement
অন্যদিকে রাষ্ট্রপতি নির্বাচনে সংখ্যাগরিষ্ঠতা পেতে বিজেপি তাদের নিজেদের পথ মসৃণ করে রেখেছে বলেই খবর। ইতোমধ্যেই রাষ্ট্রপতি পদের জন্য বেশ কয়েকটি নাম নিজেদের তালিকায় রেখেছে বিজেপি। যার মধ্যে অন্যতম ঝাড়খন্ডের রাজ্যপাল আদিবাসী নেত্রী দ্রৌপদী মুর্ম, লোকসভার বর্তমান স্পিকার সুমিত্রা মহাজন, পররাষ্ট্রমন্ত্রী সুষমা স্বরাজ।
তবে বিরোধীদের তুলনায় কিছুটা ধীর গতিতে চলছে গেরুয়া শিবির। বিজেপি দেখতে চাইছে বিরোধী দলগুলো কাকে প্রার্থী করতে চায়। তারপরই চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেবেন নরেন্দ্র মোদি। বিজেপি চাইছে এমন একজনকে রাষ্ট্রপতি করা হোক যিনি সবদিক থেকেই যোগ্য। তাকে নিয়ে বিরোধী দলও সমালোচনা করার সুযোগ পাবে না।
বিএ