মতামত

আমরা কতটা প্রস্তুত?

তথ্যপ্রযুক্তির চরম উৎকর্ষের এই যুগে প্রযুক্তিগত সুবিধা যেমন বেড়েছে তেমনি এর অনৈতিক ব্যবহারের কারণে বেড়েছে ঝুঁকিও। বাংলাদেশ ব্যাংকের রিজার্ভ চুরির ঘটনায় প্রথম হ্যাকারদের অপতৎপরতা সম্পর্কে ওয়াকিবহাল হয় দেশবাসী। বিপুল অংকের রিজার্ভের অর্থ চুরি যাওয়ায় উদ্বেগ ছড়ায় বিশ্বেও। এবার বিশ্বের শতাধিক দেশে একযোগে সাইবার হামলা হয়েছে। আর্থিক, স্বাস্থ্য, টেলিকম, পরিবহনসহ বিভিন্ন খাতের কম্পিউটার নেটওয়ার্কের ফাইলে নিয়ন্ত্রণ স্থাপন করে মোটা অঙ্কের পণ দাবি করে হ্যাকাররা। ‘ওয়ানাক্রাই’ ভাইরাস দিয়ে হামলাটি চালানো হয় বলে প্রযুক্তি বিশেষজ্ঞরা বলছেন। ‘ওয়ানাক্রাই’র দ্বিতীয় সংস্করণ দিয়ে দু-এক দিনের মধ্যে আবারও হামলা চালানো হতে পারে এমন আশঙ্কাও করা হচ্ছে। এ ধরনের হামলার সাথে বিশ্ব নতুনভাবে পরিচিত হচ্ছে। তাই হামলা মোকাবেলায় প্রযুক্তিগত পারদর্শিতা অর্জন করতে হবে। বাড়াতে হবে সাইবার সিকিউরিটি।

Advertisement

বাংলাদেশেরও কিছু প্রতিষ্ঠান এই হামলার শিকার হয়েছে। তবে আশার কথা হচ্ছে এর প্রভাব খুব বেশি নয়। এতে অবশ্য স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেলার কিছু নেই। কারণ এ ধরনের হামলার ঘটনা যে কোনো সময় ঘটতে পারে। হ্যাকিংয়ের মাধ্যমে বাংলাদেশ ব্যাংকের রিজার্ভের প্রায় ৮০০ কোটি টাকা হাতিয়ে নেয় দুর্বৃত্তচক্র। তখন থেকেই এ ধরনের হ্যাকিং মোকাবেলার বিষয়টি সামনে চলে আসে। নতুন নতুন প্রযুক্তি আসছে। সেই সঙ্গে আসছে নতুন নতুন চ্যালেঞ্জও। হ্যাকড হওয়ার ঘটনা বাংলাদেশ ব্যাংকের জন্য প্রথম হলেও বিশ্বে এ ধরনের অপরাধ কিন্তু নতুন নয়। সাম্প্রতিক সাইবার অ্যাটাকের ঘটনায় যা আবারো দেখা গেল।

এ ধরনের সাইবার অ্যাটাক মোকাবেলায় বাংলাদেশকেও প্রস্তুত থাকতে হবে। দক্ষতা অর্জন করতে হবে হামলা মোকাবেলার। বাংলাদেশ প্রযুক্তিগতভাবে অনেকদূর এগিয়েছে। ‘ডিজিটাল বাংলাদেশ’ নামে দেশ এখন পরিচিত হচ্ছে। কিন্তু প্রযুক্তিখাতের দুর্বৃত্তদের হামলায় সবকিছু অচল হয়ে যেতে পারে। এ জন্য সার্বিক প্রস্তুতি রাখতে হবে। সত্যি বলতে কি প্রতিরোধ শক্তি বিচারে বাংলাদেশ খুবই নাজুক অবস্থায় রয়েছে। এখনো অনেক প্রতিষ্ঠান সাইবার সিকিউরিটি বিশেষজ্ঞ নিয়োগ দেয়নি, সিকিউরিটি কন্ট্রোলও প্রতিষ্ঠা করেনি অনেকে। এ সেক্টরে দক্ষ জনশক্তি গড়ে তোলার কোনো বিকল্প নেই। সারাবিশ্বব্যাপী সাইবার অ্যাটাকের ঘটনা থেকে শিক্ষা নিয়ে সে অনুযায়ী করণীয় ঠিক করতে হবে আমাদেরও।

এইচআর/জেআইএম

Advertisement