অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম বলেছেন, এখন পর্যন্ত ট্রাইব্যুনালের মামলায় যে কয়জনের ফাঁসি হয়েছে তাদের মধ্যে শিরোমনি হলো দেলওয়ার হোসেন সাঈদী। রোববার সাঈদীর আপিলের রায়ের রিভিউ শুনানির পর সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি এ মন্তব্য করেন। সাংবাদিকরা জানতে চান- সাঈদীর রিভিউয়ের রায়ে আপনি কি আশা করেন, জবাবে অ্যাটর্নি জেনারেল বলেন, সেটা আদালতের বিষয় আমরা আদালতে উপস্থাপন করেছি।এর আগে মানবতাবিরোধী অপরাধের দায়ে আপিলের রায় পুনর্বিবেচনা চেয়ে জামায়াত নেতা সাঈদী ও রাষ্ট্রপক্ষের করা দুটি আবেদনের উপর শুনানি শুরু হয় রোববার।এদিন বেলা ১২টার দিকে প্রধান বিচারপতি সুরেন্দ্র কুমার (এসকে) সিনহার নেতৃত্বাধীন আপিল বিভাগের পাঁচ বিচারপতির বেঞ্চে রিভিউ শুনানি শুরু হয়। প্রথম দিন প্রায় এক ঘণ্টা শুনানির পর মামলার কার্যক্রম সোমবার পর্যন্ত মুলতবি করেন আদালত।পরে রাষ্ট্রপক্ষের প্রধান আইন কর্মকর্তা অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম নিজ কার্যালয়ে সাংবাদিকদের বলেন, ‘দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদীর সাজার বিরুদ্ধে রিভিউ পিটিশন দায়ের করেছিল এই বলে যে, (সাঈদী) ওই সময় পিরোজপুরের পারেরহাটে ছিলেন না। আদালত এই বিষয়টি ঠিকমত নেননি।’ ‘এছাড়া রিভিউতে আরেকটি বিষয়ে বলা হয়, যেসব চার্জে সাঈদীকে আমৃত্যুকারাদণ্ড দেয়া হয়েছে সেটি নাকি নানারকম বিষয় বিবেচনা না করেই আদেশ দেওয়া হয়েছে।’ অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম বলেন, ইব্রাহীম কুট্টি ও বিশাবালী হত্যাকণ্ডের সঙ্গে সাঈদী সরাসরি জড়িত। তবে সুপ্রিম কোর্ট রায়ে বলেছেন, বিশাবালী হত্যাকাণ্ডে সে(সাঈদী) আদেশ দিলেও সে মুখ্য আসামি না। সে সহায়তাকারী। এটার বিরুদ্ধে আমরা রিভিউ করেছি। তিনি বলেন, আমাদের দাবি, সর্বোচ্চ আদালত বলেছে সে অপরাধী। তাই তাকে ফাঁসি দেয়াটাই ছিল বাঞ্ছনীয়। সে ফাঁসির জন্যই আমাদের রিভিউ। হুকুমদাতা হিসেবেই হোক বা সেখানে উপস্থিত থেকে প্ররোচণাকারী হিসেবেই হোক। হত্যাকাণ্ডে সে জড়িত ছিল। তাই তার সর্বোচ্চ শাস্তি চাই। ‘এখন পর্যন্ত যুদ্ধাপরাধ মামলায় যে কয়জনের ফাঁসি হয়েছে তাদের মধ্যে শিরোমনি হলো দেলওয়ার হোসেন সাঈদী।’সাংবাদিকরে এক প্রশ্নের জবাবে অ্যাটর্নি জেনারেল বলেন,‘নরমালি রিভিউ পিটিশন খারিজ হয় এটাই দেখে আছি। আদালত সে বিষয়েই মন্তব্য করেছেন। বলেছেন, রিভিউ পিটিশন আমাদের সামনে উপস্থাপন করলেই আমরা খারিজ করে দেব, এটা ঠিক না। তাতে যদি সারবত্তা থাকে অবশ্যই আমরা বিবেচনা করবো।’অন্যদিকে সাঈদীর আইনজীবী খন্দকার মাহবুব হোসেন সাংবাদিকদের বলেন, তিনটা অভিযোগের উপর শুনানি করেছি। আমি বলেছি, এ অভিযোগুলোতে ট্রাইব্যুনাল কোনো সাজা দেয়নি। কিন্তু আপিল বিভাগ তিনটিতেই আমৃত্যু কারাদণ্ড সাজা দিয়েছে। আমরা সাক্ষ্য-প্রমাণ দিয়ে দেখাতে চেষ্টা করেছি, যেসব সাক্ষ্য-প্রমাণের উপর ভিত্তি করে এ সাজা দেয়া হয়েছে সেটি সঠিক হয়নি। এর পুণর্বিবেচনা দরকার। ‘বিশেষ করে ডিসেন্ডিং জাজমেন্ট, বিচারপতি মো. আবদুল ওয়াহহাব মিঞা যে রায় দিয়েছেন সেটিও আমরা তুলে ধরেছি। সবকিছু শুনে আপিল বিভাগ আগামীকাল অ্যাটর্নি জেনারেলকে বক্তব্য উপস্থাপন করতে বলেছেন।’এফএইচ/এমএমএ
Advertisement