আন্তর্জাতিক

পুনর্গঠনে দিল্লিকে পাশে চায় কাঠমান্ডু

গত ২৫ এপ্রিলের শক্তিশালী ভূমিকম্পে ধ্বংসস্তূপে পরিণত হয়েছে হিমালয়কন্যা নেপাল। এখন পর্যন্ত প্রায় সাড়ে সাত হাজার মৃতদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। আহতের সংখ্যাও প্রায় ২০ হাজার। ধ্বংসস্তূপ কাঠমান্ডুর সর্বত্র। এরই মধ্যে উদ্ধার কাজ সমাপ্তি ঘোষণা করেছে নেপাল সরকার। এবার কাজ পুনর্গঠন ও পুনর্বাসনের। বিদেশি উদ্ধারকারীদের ফিরে যেতে বলেছে নেপাল। সেই সঙ্গে এই মৌসুমে এভারেস্ট অভিযান বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছে প্রধানমন্ত্রী সুশীল কৈরালার সরকার। পুনর্গঠন ও পুনর্বাসনের কাজে দিল্লির সাহায্য চেয়েছে কাঠমান্ডু।ভূমিকম্পের পর নেপালে ৩৪টি দেশের সাড়ে চার হাজার উদ্ধারকর্মী উদ্ধারকাজে অংশ নিয়েছেন। তাদের মধ্যে বেশির ভাগই সব চেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত কাঠমান্ডু উপত্যকা, সিন্ধুপালচক ও গোর্খা এলাকায় কাজ করেছেন। মঙ্গলবার নেপালের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বামদেব গৌতমের নেতৃত্বাধীন কেন্দ্রীয় প্রাকৃতিক বিপর্যয় ত্রাণকমিটি সিদ্ধান্ত নেয়, উদ্ধারকারীদের আর নেপালে থাকার প্রয়োজন নেই। সে কথা তাদের জানিয়েও দেওয়া হয়েছে। ভারতীয় বিপর্যয় মোকাবিলা বাহিনীর (এনডিআরএফ) ডিজি ও পি সিংহ জানিয়েছেন, ইতিমধ্যেই বাহিনী ফেরানোর কাজ শুরু করেছেন তারা।ভারতের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র লক্ষ্মীপ্রসাদ ধকলের কথায়, নিয়ম অনুযায়ী সাতদিন উদ্ধারকার্য চালাতে হবে। তখনই ধ্বংসস্তূপে জীবিতদের খুঁজে পাওয়ার সম্ভাবনা সবচেয়ে বেশি। এখন উদ্ধারের যেটুকু কাজ বাকি রয়েছে তা নেপালি সেনা ও পুলিশই করতে পারবে। তবে প্রত্যন্ত এলাকায় বিদেশি স্বেচ্ছাসেবী সংস্থার সাহায্যে কিছু কাজ করা চলবে বলে জানিয়েছেন তথ্যমন্ত্রী মীনেন্দ্র রিজাল।বিপর্যয়ের জেরে এই মৌসুমের মতো এভারেস্ট অভিযান বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছে সুশীল কৈরালা সরকার। এভারেস্টে ওঠার পথ রক্ষণাবেক্ষণের দায়িত্বে রয়েছেন শেরপাদের বিশেষ দল ‘আইসফল ডক্টরস’। তারা জানিয়েছেন, ভূমিকম্পের ফলে প্রচুর তুষারধস হয়েছে। তাতে এভারেস্টের পথ এমন ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে যে তা এই মৌসুমে আর সরানো সম্ভব নয়।ত্রাণের ক্ষেত্রে গোড়া থেকেই নেপালের পাশে দাঁড়িয়েছিল ভারত। এবার পুনর্বাসন ও পুনর্গঠনেও দিল্লির সাহায্য চেয়েছে কাঠমান্ডু। বুধবার দেশটির পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র বিকাশ স্বরূপ জানিয়েছেন, এই বিষয়েও নেপালের পাশে আছে ভারত। ধ্বংসস্তূপ সরানোর জন্য প্রয়োজনীয় ভারী যন্ত্রপাতি দ্রুত সে দেশে পাঠানোর ব্যবস্থা করছে দিল্লি।ভূমিকম্পে প্রবল ক্ষতির ফলে কার্যত বিধ্বস্ত নেপালের পর্যটন শিল্প। সেই সঙ্গে বিপুল পরিমাণ ক্ষতিপূরণ দেওয়ার প্রস্তুতি শুরু করেছে সে দেশের বিমা সংস্থাগুলি। এ ধরনের বিপর্যয়ের জন্য কিছুটা প্রস্তুতি সব সময়েই নেওয়া থাকে বলে জানান বিভিন্ন নেপালি বিমা সংস্থার কর্তারা। কোনো কোনো ক্ষেত্রে বাড়তি নিরাপত্তার জন্য ভারতীয় বিমা সংস্থার সঙ্গে গাঁটছড়া বাঁধা রয়েছে তাদের।ভারত তার ‘ভাইয়ের’ পাশেই আছে বলে মন্তব্য করেছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। বুদ্ধের জন্মস্থান নেপাল এবং ভারতে হতাহতদের স্মরণে সেখানে এক মিনিট নীরবতা পালন করা হয়। মোদি বলেন, শুধু বুদ্ধের বাণীই আমাদের সঠিক পথ দেখাতে পারে। গুজরাটে সচিবালয়ের বাইরে বুদ্ধের মূর্তি বসিয়েছিলাম। আমার সমালোচকদের বোধহয় তা চোখে পড়েনি।বিএ/আরআই

Advertisement