বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের (বেরোবি) উপাচার্য, উপ-উপাচার্য ও কোষাধ্যক্ষ পদ শূন্য রেখেই রোববার থেকে শুরু হয়েছে বিশ্ববিদ্যালয়টির প্রশাসনিক কার্যক্রম। শিক্ষা কার্যক্রম শুরু হবে আগামীকাল সোমবার থেকে।
Advertisement
গত ৫ মে বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য পদটি শূন্য হয়। এছাড়া বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার পর থেকে উপ-উপাচার্য পদে কাউকে নিয়োগ দেয়া হয়নি। কোষাধ্যক্ষ পদটি দীর্ঘদিন ধরেও শূন্য রয়েছে।
সর্বশেষ ৫ মে উপাচার্য পদটি শূন্য হওয়ায় বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষা ও প্রশাসনিক কাজে বড় ধরনের স্থবিরতা নেমে আসার শঙ্কা প্রকাশ করেছেন বিশ্ববিদ্যালয় সংশ্লিষ্টরা।
গ্রীষ্মকালীন ছুটির পর রোববার থেকে শুরু হয়েছে বিশ্ববিদ্যালয়টির প্রশাসনিক কার্যক্রম। সোমবার থেকে পুরোদমে শিক্ষা কার্যক্রম শুরু হবে।
Advertisement
জানা গেছে, ২০১৩ সালের ৬ মে চার বছরের জন্য ঢাবির (ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়) সাবেক প্রক্টর ও পপুলেশন সায়েন্সেস বিভাগের অধ্যাপক ড. এ কে এম নূর-উন-নবীকে বেরোবির তৃতীয় উপাচার্য হিসেবে নিয়োগ দেন আচার্য (রাষ্ট্রপতি)। সেই হিসেবে শুক্রবার (৫ মে) তার মেয়াদকাল শেষ হওয়ার কথা। কিন্তু ছুটি থাকায় বৃহস্পতিবারই তিনি শেষ কর্মদিবস অতিবাহিত করেন।
বিশ্ববিদ্যালয় আইন অনুযায়ী উপাচার্য, উপ-উপাচার্য ও কোষাধ্যক্ষ- শীর্ষ এ তিন শূন্য পদে নিয়োগ দেবেন আচার্য।
বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন সূত্র জানায়, সদ্যবিদায়ী উপাচার্য নির্ধারিত দায়িত্ব পালনের বাইরে একাই ১৩টি পদের দায়িত্ব সামলাতেন। তাই উপাচার্য পদটি শূন্য হওয়ার মাধ্যমে বিশ্ববিদ্যালয়ের কোষাধ্যক্ষ, তিনটি অনুষদের ডিন, বিভাগীয় প্রধান ও কয়েকটি দফতরের পরিচালকসহ অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ পদেও শূন্যতা দেখা দিয়েছে।
বিশ্ববিদ্যালয়ে উপ-উপাচার্য না থাকা এবং কোষাধ্যক্ষ পদটি শূন্য থাকায় শিক্ষা ও প্রশাসনিক কাজে স্থবিরতা বিরাজ করছে।
Advertisement
বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার দফতর সূত্রে জানা গেছে, বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রারের আওতার মধ্যে যেসব প্রশাসনিক কাজ আছে তারা সেগুলো করছেন। যেসব কাজের জন্য উপাচার্য, কোষাধ্যক্ষের অনুমোদনের প্রয়োজন হয়, সেগুলো তারা সংশ্লিষ্ট দফতরে পাঠাচ্ছেন। সেখানেই ফাইল জমা পড়ে থাকছে।
দ্রুত উপাচার্য নিয়োগ না দেয়া হলে বিভিন্ন কাজের জন্য আর্থিক অনুমোদন, সিন্ডিকেট সভা, শিক্ষকদের বিদেশে যাওয়া, শিক্ষা ছুটির অনুমোদন, প্রমোশন আবেদনপত্র, শিক্ষার্থীদের ফলাফল প্রকাশ ও সনদে স্বাক্ষরের মতো কাজগুলো আটকে যাবে বলে একাধিক দফতর জানিয়েছে।
এছাড়া প্রশাসনের শীর্ষ তিন পদ শূন্য হওয়ায় শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা বিশ্ববিদ্যালয়ের সার্বিক নিরাপত্তা নিয়েও উদ্বিগ্ন।
বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর (চলতি দায়িত্ব) মীর তামান্না ছিদ্দিকা এ প্রসঙ্গে জাগো নিউজকে বলেন, উপাচার্য না থাকায় ক্যাম্পাসে নিরাপত্তা ব্যবস্থার অবনতি হবে না বলে আশা করছি। তবে যে বিষয়গুলোতে উপাচার্যের সিদ্ধান্তের প্রয়োজন হয় এবং আমার এখতিয়ারের বাইরে সেই বিষয়গুলো সমাধানে সমস্যা হবে।
দ্রুত উপাচার্য নিয়োগ দিতে বিশ্ববিদ্যালয়ের একাধিক শিক্ষক শিক্ষা মন্ত্রণালয়সহ আচার্যের (রাষ্ট্রপতি) সুদৃষ্টি কামনা করেছেন। তারা জাগো নিউজকে জানান, উপাচার্য পদটি শূন্য থাকায় আমরা অভিভাবকহীন হয়ে পড়েছি। বেশিদিন এ অবস্থা চলতে থাকলে কার্যত বন্ধ হয়ে যাবে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষা ও প্রশাসনিক কার্যক্রম। বাড়বে শিক্ষার্থীদের সেশনজট।
বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার মুহাম্মদ ইব্রাহীম কবীর জাগো নিউজকে বলেন, সাধ্যমতো প্রশাসনিক কার্যক্রম চালিয়ে নেয়ার চেষ্টা করব। তবে উপাচার্য না থাকায় অনেক সিদ্ধান্ত নেয়া সম্ভব হবে না।
সহসাই উপাচার্য নিয়োগ হবে বলে আশা প্রকাশ করেন তিনি।
নয়ন/এমএআর/এমএস