কৃষি ও প্রকৃতি

জেনে নিন বীজ সংরক্ষণের উপায়

গ্রামবাংলার কৃষকরা তাদের অর্জিত জ্ঞানের আলোকে কৃষিকাজ করে থাকে। এমনকী পূর্ববর্তীদের অনুসরণে ফসলের বীজও সংরক্ষণ করে থাকে। কেননা এখনো অনেক গ্রামাঞ্চলে আধুনিক প্রযুক্তি পৌঁছায়নি। তাই তারা নিজেদের জ্ঞান ব্যবহার করে বিভিন্ন সমস্যার সমাধান করেন।

Advertisement

দক্ষিণ-পশ্চিম উপকূলীয় অঞ্চলের কৃষকরা বিশেষ পদ্ধতিতে গোলাঘরে বীজ সংরক্ষণ করেন। খুব অল্প খরচে এ পদ্ধতি ব্যবহার করা যায়। এতে বীজের গুণগত মানেরও কোনো ক্ষতি হয় না।

বীজ সংরক্ষণ প্রক্রিয়া১. মাটি থেকে এক-দেড় ফুট উঁচুতে ৬ থেকে ৮টি পিলারের মতো গোল মোটা কাঠ বা গাছের গুঁড়ির ওপর পাটাতন বানিয়ে তার ওপর এই গোলাঘর তৈরি করা যায়।২. পিছনে আড়াআড়ি কয়েকটি কাঠের তক্তা পেতে বাঁশের খণ্ড দিয়ে গোলাঘরের পাটাতন তৈরি করতে হবে।৩. গোবর ও ধানের তুষ মিশিয়ে পাটাতনের মেঝেতে প্রলেপ দিতে হবে। এতে পাটাতনের নিচ দিয়ে বাতাস ঢুকে গোলাঘরের সংরক্ষিত শস্য নষ্ট হবে না।৪. প্রথমে কাঁচা গাব ছেঁচে পানিতে একদিন ভিজিয়ে রাখতে হবে। এরপর গাবমিশ্রিত পানি দিয়ে পাটাতনে প্রলেপ দিলে পাটাতন মজবুত হয়। পাশাপাশি পোকামাকড়ের আক্রমণ থেকে রক্ষা পাওয়া যায়।৫. পাটাতনের ওপর বাঁশের চাটাই দিয়ে গোলাঘরের জন্য গোলাকার বেড়া তৈরি করা যায়।৬. গোলাঘরের চালের ছাউনি হিসেবে ধানের খড়, নাড়া অথবা গোলপাতা ব্যবহার করা যায়।৭. ছাউনির মাথার উপরে একটি পাত্র এমনভাবে রাখতে হবে যেন ঝড় বা বাতাসে গোলঘরের ছাউনি উড়ে না যায়।৮. একটি গোলাঘরের উচ্চতা ৮-৯ ফুট, নিচের অংশের দৈর্ঘ্য ৮-১০ ফুট এবং প্রস্থ ৯-১২ ফুট হয়ে থাকে।

যে ফসল সংরক্ষণ করবেনখাদ্য হিসেবে ধান খোলা অবস্থায় আর বীজ ধান বস্তায় ভরে রাখা হয়। নিচে পাটাতনের ফাঁকা জায়গায় ওল, মুখিকচু ও হলুদসহ নানা ধরনের কন্দাল ফসলের বীজ সংরক্ষণ করা হয়।

Advertisement

সতর্কতাগোলায় সংরক্ষিত ফসল বীজ মাঝে মধ্যে বের করে রোদে শুকাতে হয়।

উপকারিতাগোলাঘরে ধানের বীজ রাখলে বীজ ভালো থাকে। শোবার ঘরে ধান রাখলে ইঁদুর ও সাপের প্রকোপ বেড়ে যায়। তাই গোলাঘরে বীজ সংরক্ষণ নিরাপদ। বাড়ির আঙিনায় একাধিক গোলাঘর আর্থিক স্বচ্ছলতা প্রকাশ করে।

এসইউ/এমএস

Advertisement