রাজধানীর বনানীর দ্য রেইন ট্রি হোটেলে বিশ্ববিদ্যালয় পড়ুয়া দুই ছাত্রী ধর্ষণ মামলার প্রধান দুই আসামি সাফাত আহমেদ ও সাদমান সাকিফ বুধবার রাতে সিলেট নগরের পাঠানটুলার রশিদ মঞ্জিলে আশ্রয় নেয়। পাঠানটুলার ওই বাসার মালিক মামুনুর রশিদ যুক্তরাজ্য প্রবাসী।
Advertisement
এই ভবনে প্রবাসীর মা এবং নুরনবী নামের একজন কেয়ারটেকার থাকেন। মামুনুর রশিদের গ্রামের বাড়ি হবিগঞ্জের নবীগঞ্জ উপজেলার দেবপাড়া এলাকায়।
কেয়ারটেকার নুরনবী জানান, বুধবার রাত সাড়ে ১১টার দিকে মামুনুর রশিদের পরিচিত মহানগরের কাজিরবাজার এলাকার মাসুম বিল্লাহ নামের একজন সাফাত এবং সাদমানকে নিয়ে এসে ওই বাসায় রাখতে বলেন। তারপর থেকেই এই দুইজন রশিদ মঞ্জিলের দ্বিতীয়তলার একটি কক্ষে অবস্থান করছিলেন।
একটি নির্ভরযোগ্য সূত্র জানিয়েছে, মাসুম বিল্লাহ নামের ওই ব্যক্তি সাবেক ছাত্রলীগ নেতা। তার সঙ্গে সাফাতের পরিবারের ঘনিষ্ঠতা রয়েছে। সেই সূত্র ধরে মাসুম তার বন্ধু মামুনুর রশিদের বাসায় থাকার জায়গা দেন।
Advertisement
বৃহস্পতিবার রাত ৯টার দিকে সিলেট নগরের পাঠানটুলা এলাকার ‘রশিদ মঞ্জিল’ নামের বাসাটি পুলিশ সদর দফতরের একটি বিশেষ দল, সিলেট জেলা ও মহানগর পুলিশের সহায়তায় বিপুলসংখ্যক পুলিশ ঘেরাও করে। কিছুক্ষণ পরই উপরে উঠে পুলিশ তাদের ধরে নিয়ে যায়।
রাত পৌনে ১০টায় এ দুজনকে গ্রেফতারের কথা জাগো নিউজকে মুঠোফোনে জানান সিলেট মহানগর পুলিশের মুখপাত্র অতিরিক্ত উপকমিশনার জেদান আল মুসা।
তিনি জানান, রশিদ মঞ্জিলে সাফাত ও সাদমান তাদের এক আত্মীয়ের বাসায় আত্মগোপনে ছিল। পুলিশ সদর দফতরের একটি বিশেষ দল বিষয়টি জানতে পেরে সিলেট জেলা ও মহানগর পুলিশের সহায়তায় তাদের গ্রেফতার করে ঢাকার উদ্দেশে রওনা দেয়।
উল্লেখ্য, গত ২৮ মার্চ বন্ধুর সঙ্গে জন্মদিনের অনুষ্ঠানে গিয়ে ‘দ্য রেইন ট্রি’ হোটেলে ধর্ষণের শিকার হন দুই বিশ্ববিদ্যালয় পড়ুয়া তরুণী। ওই ঘটনায় গত ৬ মে রাজধানীর বনানী থানায় অভিযুক্ত সাফাত আহমেদ, নাঈম আশরাফ ও সাদমান সাকিফসহ পাঁচজনের বিরুদ্ধে মামলা করেন দুই তারা।
Advertisement
গ্রেফতার সাফাত আপন জুয়েলার্সের স্বত্বাধিকারী দিলদার আহমেদের ছেলে। আর সাদমান সাকিফ রেগনাম গ্রুপের মালিকের ছেলে এবং ওই গ্রুপের পরিচালক।
এর মধ্যে সাফাতের বাবার বাড়ি সিলেটের গোলাপগঞ্জ উপজেলার ঢাকা দক্ষিণ ইউনিয়নের নগরগ্রামে।
অপরদিকে নাঈম আশরাফ নিজেকে আওয়ামী লীগ নেতার ছেলের বন্ধু বলে পরিচয় দিলেও তার গ্রামের বাড়ি সিরাজগঞ্জে বলে জানা গেছে।
মামলার অপর আসামিরা হলেন- সাফাতের গাড়িচালক বিল্লাল ও দেহরক্ষী আবুল কালাম আজাদ।
ছামির মাহমুদ/বিএ