চাকরিচ্যুত সাংবাদিকদের বকেয়া বেতন-ভাতা ও অন্যান্য পাওনা পরিশোধ করতে দৈনিক ইনকিলাব সম্পাদক এ এম এম বাহাউদ্দিনকে ৭২ ঘণ্টার সময় বেঁধে দিয়েছে ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়ন (ডিইউজে)। এ সময়ের মধ্যে পাওনা বুঝিয়ে না দিলে লাগাতার কর্মসূচি ঘোষণার হুঁশিয়ারি দিয়েছেন সংগঠনের সভাপতি শাবান মাহমুদ।
Advertisement
বুধবার রাজধানীর মতিঝিলে ইনকিলাব ভবনের সামনে ডিইউজে আয়োজিত সমাবেশে এ হুঁশিয়ারি দেয়া হয়।
সমাবেশে শাবান মাহমুদ বলেন, ইনকিলাব বন্ধ করে দেয়ার পরিস্থিতি তৈরি হোক আমরা সে জায়গায় যেতে চাই না। আগামী ৭২ ঘণ্টার মধ্যে চাকরিচ্যুত সাংবাদিক-কর্মচারীদের বেতন-ভাতা ও অন্যান্য পাওনাদি পরিশোধ করুন। তা না হলে আজ ইনকিলাবের সামনে কর্মসূচি পালন করা হচ্ছে, আগামীতে প্রয়োজনে আপনার বাসভবন ঘেরাও কর্মসূচি দেয়া হবে। ৭২ ঘণ্টার মধ্যে দাবি মেনে নেয়া না হলে পরিস্থিতি ঘোলাটে হলে দায় আপনাকেই নিতে হবে।
ডিইউজে সভাপতি বলেন, শুধু ইনকিলাব নয়, অন্য যেসব পত্রিকায় সাংবাদিকদের অবৈধ ছাঁটাই করা হয়েছে, বেতন-ভাতা পরিশোধ করা হচ্ছে না সেসব সম্পাদক ও মালিকদের বিরুদ্ধেও ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়ন কর্মসূচি দেবে।
Advertisement
ইনকিলাব সম্পাদককে একজন প্রতারক উল্লেখ করে ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির (ডিআরইউ) সভাপতি সাখাওয়াত হোসেন বাদশা বলেন, আপনি রাজাকার পুত্র। হেফাজতে ইসলামকে অর্থায়ন করেন। বিদেশে টাকা পাচার করে বাড়ি ও সম্পদের পাহাড় জমিয়েছেন। দুর্নীতি দমন কমিশনকে (দুদক) বলব তদন্ত করার জন্য।
‘দৈনিক ইনকিলাব ৯-১০ হাজার ছাপা হলেও সার্কুলার ১ লাখের উপরে দেখিয়ে সুযোগ সুবিধাদি নেয়া হয়। এ ব্যাপারে তথ্য মন্ত্রণালয় পুনরায় তদন্ত করে ব্যবস্থা নিক-তা বলতে চাই না। আমরা শুধু চাই ন্যায্য পাওনা বুঝিয়ে দেয়া হোক। নইলে প্রত্যেক সাংবাদিক-কর্মচারী একটি করে আপনার বিরুদ্ধে ফৌজদারি ও প্রতারণার মামলা করবেন।’
তিনি আরও বলেন, কাল (বৃহস্পতিবার) আমরা সবাই পাওনার জন্য ইনকিলাবে যাব। যদি পাওনা বুঝিয়ে না দেয়া হয় তাহলে শনিবার নতুন কর্মসূচি দেয়া হবে।
‘দৈনিক ইনকিলাব বন্ধ করে দেয়া হবে কি হবে না, সেদিন আমরা সিদ্ধান্ত নিয়ে কর্মসূচি দেব।’
Advertisement
সমাবেশে জাতীয় প্রেসক্লাবের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ইলিয়াস খান বলেন, একটি টাকা বাদ দিয়ে কীভাবে ইনকিলাব পার পায়, তা আমরা দেখব, এটা আমাদের চ্যালেঞ্জ। আজকে ছোট সমাবেশ হয়েছে হাজার হাজার সাংবাদিকের সমাবেশ হবে।
দ্রুত বকেয়া বেতন-ভাতা পরিশোধের দাবি জানিয়ে ঢাকা সাব-এডিটরস কাউন্সিলের সাধারণ সম্পাদক কেএম ওবায়দুর রহমান বলেন, বেতন-ভাতা পরিশোধ করে প্রতিষ্ঠানে কর্মপরিবেশ তৈরি করুন। অন্যথায় লাগাতার কর্মসূচি দিতে বাধ্য হবো।
আড়াই ঘণ্টাব্যাপী চলা ওই প্রতিবাদ সমাবেশে সভাপতিত্ব করেন ডিইউজের সহ-সভাপতি আতিকুর রহমান চৌধুরী।
ডিইউজের সাধারণ সম্পাদক সোহেল হায়দার চৌধুরীর সঞ্চালনায় সমাবেশে আরও বক্তব্য দেন ডিইউজের সাবেক সাধারণ সম্পাদক ও জাতীয় প্রেসক্লাবের কার্যনির্বাহী সদস্য কুদ্দুস আফ্রাদ, বিএফইউজের যুগ্ম মহাসচিব অমিয় ঘটক পুলক, ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির (ডিআরইউ) সাধারণ সম্পাদক মুরসালিন নোমানী, যুগ্ম সম্পাদক তোফাজ্জল হোসেন, কোষাধ্যক্ষ মানিক মুনতাসির, প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক কাফি কামাল, সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক শেখ জামাল, আপ্যায়ন সম্পাদক কামাল উদ্দিন সুমন, ডিইউজের সাংগঠনিক সম্পাদক শাহজাহান মিয়া, প্রচার সম্পাদক আক্তার হোসেন, কল্যাণ সম্পাদক উম্মুল ওয়ারা সুইটি, কার্যর্নির্বাহী সদস্য ছলিমুল্লাহ সেলিম, ঢাকা সাব-এডিটরস কাউন্সিলের সভাপতি শহিদুল হক, সাবেক সভাপতি আশরাফুল ইসলাম এবং ইনকিলাব থেকে চাকরিচ্যুত সাংবাদিকদের মধ্যে শামীম খান, রবিউল্লাহ রবি, তালুকদার হারুন, আফজাল বারী, আহমদ আতিক প্রমুখ।
এইউএ/এমএমএ/এএইচ/এমএস