ইন্দোনেশিয়ার রাজধানী জাকার্তার গভর্নরকে দুই বছরের কারাদণ্ড দিয়েছে দেশটির আদালত। সাজাপ্রাপ্ত বাসুকি তিজাহজা পুরনামা বেশি পরিচিত আহক নামে। মঙ্গলবার দক্ষিণ জাকার্তার আদালত আহকের বিরুদ্ধে ওই রায় ঘোষণা করেছে।
Advertisement
তার বিরুদ্ধে অভিযোগ, গত বছর নির্বাচনী প্রচারণা চালানোর সময় কুরআনের আয়াত বিকৃত করে ব্যাখ্যা করেছিলেন তিনি। মুসলিম সংখ্যাগরিষ্ঠ ইন্দোনেশিয়ার খ্রিস্টান গভর্নর আহক তার বিরুদ্ধে অভিযোগ অস্বীকার করে আপিল করার কথা জানিয়েছেন।
আহকের বিরুদ্ধে সাজার বিষয়টি দেশটির ধর্মীয় সহনশীলতার পরীক্ষা হিসেবে বিবেচনা করা হচ্ছে। মামলার রায় হওয়ার পরপরই আহককে কারাগারে পাঠানো হয়েছে। অক্টোবরে তার দায়িত্ব শেষ না হওয়া পর্যন্ত ডেপুটি দিজারত সাইফুল হেদায়েত জাকার্তার গভর্নরের দায়িত্ব পালন করবেন।
আদালতের বিচারক বলেছেন, অভিযুক্তের ব্যাপারে ধর্ম অবমাননার প্রমাণ মিলেছে। এজন্য তাকে দুই বছরের কারাদণ্ড দেয়া হয়েছে। দেশটির মুসলিম সংগঠনগুলো আহকের সর্বোচ্চ শাস্তির দাবিতে বিক্ষোভ করেছে। কিন্তু আহকের সমর্থকদের দাবি খুবই কঠোর রায় দেয়া হয়েছে। আহকের মুক্তির দাবিও তুলেছে তার সমর্থকরা।
Advertisement
উভয়পক্ষ আদালতের বাইরে অবস্থান নেয়ায় নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে পুলিশ ও সেনাবাহিনীর ১৫ হাজার সদস্য সেখানে মোতায়েন করা হয়। আদালতের বাইরে অবস্থান করা আহকের সমর্থকরা রায় শুনে কান্নায় ভেঙে পড়ে একে অপরকে জড়িয়ে ধরেন।
আন্দি নামের একজন মুসলিম এই রায় শুনে কান্নাজড়িত কণ্ঠে বলেন, তিনি (আহক) একজন ভাল মানুষ একইসঙ্গে মহান নেতা ছিলেন ... তিনি মানুষের মধ্যে কোনো ধর্মের ভেদাভেদ দেখতেন না। এখন তিনিই ফ্রেমে পড়ে গেছেন।
অনেকের বিশ্বাস আহকের বিরুদ্ধে মামলাটি ছিল রাজনৈতিক উদ্দেশ্য প্রণোদিত। কিন্তু একটু দূরেই আহকের সমালোচকরা তার বিরুদ্ধে ক্ষোভে ফেটে পড়ছিলেন। সালেহীন নামের এক বিক্ষুব্ধ জানান, তার সাজা খুব কম হয়ে গেছে। দোষ অনুযায়ী তার পাঁচ বছরের সাজা হওয়া দরকার ছিল।
সেখানকার মানুষজন আকাশের দিকে মুষ্টি ছুঁড়ে দিয়ে স্লোগান দিতে থাকেন, সৃষ্টিকর্তা নিশ্চয়ই বিচার করবেন। চরম উত্তেজিত দুই পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষ এড়াতে মাঝখানে অবস্থান নেয় দাঙ্গা পুলিশ। গভর্নর আহকের আপিলের সিদ্ধান্তে উপস্থিত ইসলামি সংগঠনের সদস্যরা জোরালোভাবে তার বিরোধিতা করেন।
Advertisement
২০১৬ সালের সেপ্টেম্বরে প্রাক-নির্বাচনে এক বক্তব্যের পরিপ্রেক্ষিতে তার বিরুদ্ধে ধর্ম অবমাননার অভিযোগ ওঠে। দফায় দফায় বিক্ষোভ এবং সহিংসতা হয়েছে তার বিরুদ্ধে। তবে আহকের দাবি, একটি সম্পাদনা করা ভিডিও ছড়িয়ে দেয়া হয়েছে। বিচারকার্য চলা সময়েও তিনি অভিযোগ অস্বীকার করেছেন। তবে মন্তব্যের জন্য দুঃখ প্রকাশ করেছেন তিনি।
সূত্র : বিবিসি।
কেএ/এসআইএস/পিআর