অর্থনীতি

সিগারেটে মূল্যস্তর প্রথায় রাজস্ব ফাঁকি দিচ্ছে কোম্পানিগুলো

অর্থনীতিবিদ ড. কাজী খলীকুজ্জমান আহমদ বলেছেন, সিগারেটের উপর মূল্যস্তর প্রথা রাখা যাবে না। মূল্যস্তর প্রথায় কোম্পানিগুলো রাজস্ব ফাঁকি দেয়। তামাকে কর ব্যক্তির আয়ের চেয়ে বেশি হারে বাড়াতে হবে। বাজেটে তামাক চাষ নিরুৎসাহিত করতে বিকল্প চাষে পুঁজি, প্রশিক্ষণ ও প্রযুক্তি ব্যবহারের জন্য বরাদ্দ রাখা ও তা বাস্তবায়ন করতে হবে।

Advertisement

সোমবার জাতীয় প্রেস ক্লাবে জনস্বাস্থ্য সুরক্ষায় তামাকের ব্যবহার হ্রাস করতে আগামী বাজেটে তামাক পণ্যে কার্যকরভাবে সুনির্দিষ্ট কর আরোপের দাবিতে ‘কেমন তামাক কর চাই’ শীর্ষক সংবাদ সম্মেলনে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।

খলীকুজ্জমান বলেন, ১ শতাংশ স্বাস্থ্য সারচার্জ তহবিলে ৬০০ কোটি টাকা জমা হয়েছে। কিন্তু এ টাকার ব্যবহার বিধিমালা না থাকায় খরচ করা যাচ্ছে না। দ্রুত বিধিমালা করা হলে এ টাকা কাজে লাগবে। প্রধানমন্ত্রী ২০৪০ সালের মধ্যে তামাকমুক্ত দেশ গড়ার কথা বলেছেন। ২০৩০ সালে তো এসডিজির শেষ বছর। পারলে ২০৩০ সালের আগেই কমিয়ে আনা উচিত।

প্রজ্ঞা ও অ্যান্টি টোব্যাকো মিডিয়া অ্যালায়েন্সের যৌথ উদ্যোগে তামাকবিরোধী সংগঠন ন্যাশনাল হার্ট ফাউন্ডেশন, ঢাকা আহছানিয়া মিশন, অ্যাসোসিয়েশন ফর কমিউনিটি ডেভেলপমেন্ট (এসিডি), ইয়ং পাওয়ার ইন সোশ্যাল অ্যাকশন (ইপসা), তামাকবিরোধী নারী জোট (তাবিনাজ) আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে বেশ কিছু দাবি করে।

Advertisement

বলা হয়, তামাক পণ্যে বিশেষ ট্যাক্স (সুনির্দিষ্ট করারোপ) আরোপ করলে সরকার তামাক পণ্য (সিগারেট, বিড়ি ও ধোঁয়াবিহীন তামাক পণ্য) থেকে বছরে সাড়ে ৬০০ কোটি টাকার অতিরিক্ত রাজস্ব পাবে। সে জন্য আগামী অর্থবছরের (২০১৭-১৮) বাজেটে সিগারেট ও বিড়ি উপর মূল্যস্তর প্রথা পর্যায়ক্রমে তুলে দিয়ে বিশেষ কর আরোপ করতে হবে।

সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগের অধ্যাপক ড. রুমানা হক। তিনি বলেন, কার্যকরভাবে কর আরোপের মাধ্যমে তামাকের দাম বাড়ালে তামাক ব্যবহার সন্তোষজনক হারে হ্রাস পাবে।

এনবিআরের সাবেক সদস্য (করনীতি) মো. আমিনুর রহমান বলেন, রাজস্ব হারানো ও রাজস্ব ফাঁকির ভয়ে এনবিআর তামাকের কর কাঠামোয় পরিবর্তন করে না। ধোঁয়াবিহীন তামাক শনাক্ত ও কর আদায়ে এনবিআরের প্রাতিষ্ঠানিক দুর্বলতা রয়েছে। এনবিআরের টোব্যাকো সেলকে কার্যকর করতে হবে। একই সঙ্গে নতুন ভ্যাট আইনের ৫৮ ধারা অনুযায়ী, সুনির্দিষ্ট করারোপ করলে রাজস্ব ক্ষতি হবে না।

সভাপতির বক্তব্যে ন্যাশনাল হার্ট ফাউন্ডেশন অব বাংলাদেশ এর প্রতিষ্ঠাতা জাতীয় অধ্যাপক বিগ্রেডিয়ার (অব.) আব্দুল মালিক বলেন, হৃদরোগসহ সকল রোগের মূল কারণ তামাক। ৪০ বছরের নিচে যেসব রোগী হৃদরোগে আক্রান্ত তা ধূমপানের কারণে। সুস্থ জাতি পেতে হলে তামাকের ব্যবহার কমাতে হবে। তামাকজনিত ক্ষতি বিবেচনায় তামাকে কর বাড়ানো উচিত।

Advertisement

এমএ/আরএস/জেআইএম