বিখ্যাত শিক্ষাবিদ এবং লেখক ড. আনিসুজ্জামান বাঙালির একটা সংজ্ঞা দিয়েছিলেন। তিনি বলেছিলেন, যেসব বাঙালি কয়েকপুরুষ ধরে বাংলায় বসবাস করছেন কিন্তু ঠিকমতো বাংলা বলতে পারেন না তারা কখনই বাঙালি নয়, কিন্তু যেসমস্ত অবাঙালি কয়েকপুরুষ ধরে বাংলায় বসবাস করার পর বাংলা ভাষাকে রপ্ত করে নিয়েছেন তারাই বাঙালি।ড. আনিসুজ্জামানানের কথা এখানে টানতে হলো তার কারণ, বাংলা ভাষার গায়েও এখন বিশ্বায়নের হাওয়া লেগেছে। বাংলার বর্তমান প্রজন্মের অধিকাংশই যখন মাতৃভাষায় কথা বলে তখন এই ধারণাটাই সত্যি হয়।প্রবীণ সাহিত্যিক সমরেশ মজুমদার। বাঙালি ছেলে-মেয়েরা যখন ইংরেজি মাধ্যমে পড়াশুনো করার দোহাই দিয়ে বাংলা-হিন্দি-ইংরেজি তিনটি ভাষার সংমিশ্রনে কথা বলে তখন গোঁড়া বাঙালিরাও বলছেন বাংলা ভাষায় বাঙালি তার বাঙালিয়ানা হারাচ্ছে।কবি কৃষ্ণা বসু এ প্রসঙ্গে বলেন, বাংলা-হিন্দি-ইংরেজি ভাষার সংমিশ্রণে একটি বাজারি ভাষার প্রচলন হয়েছে। তার শিকার এই তরুণ প্রজন্ম। তার আক্ষেপ, যে ভাষার জন্য পৃথিবী মাতৃভাষা দিবস পেয়েছে সেই ভাষাই এই প্রজন্মের কাছে অবহেলিত।বি-টেক পাঠরতা রক্তিমা ঘোষের যুক্তি, হায়ার এডুকেশনে যেহেতু বাংলার প্রয়োজন নেই, পশ্চিমবঙ্গের বাইরেও খুব একটা বাংলার প্রয়োজন হয় না। এমনকি বিভিন্ন চাকরির ইন্টারভিউতেও যেহেতু বাংলাভাষার ব্যবহার থাকে না তাই বাংলাভাষার গ্রহণযোগ্যতা কমছে।রবীন্দ্রভারতীর ক্লাসিক্যাল মিউজিকের ছাত্রী মধুমন্তী মুখার্জি এর জন্য পারিপার্শ্বকতাকেই দায়ী করেছে। খানিকটা ক্ষোভ-হতাশা মিশিয়েই প্রবীণ সাহিত্যিক সমরেশ মজুমদারের আবেদন, আর কিছু চাই না, শুধু এই প্রজন্ম যেন বাংলাভাষাটাকে একটু সম্মান করে।বিএ/আরআই
Advertisement