হাদিসে পাকে প্রিয়নবি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বর্ণনা করেন যে, মুসলিম ব্যক্তির জীবন-সম্পদের জিম্মাদার আল্লাহ এবং তাঁর রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম। ইসলামের বিধান ব্যতিত কোনো মুসলমানের জীবন-সম্পদ-ইজ্জতের ওপর হস্তক্ষেপ করা যাবে না। যে মুসলিমের জিম্মাদার আল্লাহ এবং তাঁর রাসুল, সে মুসলিমের পরিচয় স্বয়ং রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তুলে ধরেছেন। হাদিসে এসেছে-
Advertisement
হজরত আনাস রাদিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত তিনি বলেন, ‘রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, ‘যে ব্যক্তি আমাদের ন্যায় নামাজ পড়ে, আমাদের কিবলাকেই কিবলা হিসেবে স্বীকার করে এবং আমাদের জবাইকৃত পশু খায়; সে অবশ্যই মুসলমান। তার (জীবন-সম্পদ রক্ষার) ব্যাপারে আল্লাহ এবং তাঁর রাসুলই জিম্মাদার। অতএব তোমরা আল্লাহর প্রতিশ্রুতি ভঙ্গ কর না। (বুখারি)
এ হাদিসে রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনটি জিনিসকে প্রকৃত মুসলমান হওয়ার নির্দশন হিসেবে উল্লেখ করেছেন।
>> নামাজ পড়া। ঈমানের সাক্ষ্যের কথা উল্লেখ করা হয়নি। কারণ, যাদের ঈমান নেই তাদের নামাজ পড়ার প্রশ্ন আসে না। সুতরাং কেউ নামাজ আদায় করলে বুঝতে হবে সে অবশ্যই কালিমায় বিশ্বাসী।
Advertisement
>> কা’বাকে কিবলারূপে গ্রহণ করা। মুসলমানগণ কিবলামুখী হয়ে নামাজ আদায় করে। ইসলামের প্রথম যুগে ইয়াহুদি নাসারাদের কিছু অংশ ইসলাম গ্রহণ করে। কিন্তু তাদের কিবলা বাইতুল মুকাদ্দাসের পরিবর্তে বাইতুল্লাহকে কিবলা করতে দ্বিধা প্রকাশ করে।
পরে রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তাদের মন জয়ের জন্য ১৬/১৭ মাস বাইতুল মুকাদ্দাসকে কিবলা মেনে নামাজ আদায় করেন। পরে বিশ্বনবি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের ইচ্ছা অনুযায়ী আল্লাহ তাআলা বাইতুল্লাহকে পুনরায় কিবলা হিসেবে সাব্যস্ত করেন। যা অমুসলিমরা মেনে নিতে পারছিলেন না। তাই বাইতুল্লাহকে কিবলা মেনে নেয়াও মুসলমানের নিদর্শন।
>> ইয়াহুদি ও খ্রিস্টানদের মধ্যে যারা ইসলাম গ্রহণের দাবি করতো। তাদের অনেকেই মুসলিমদের জবেহকৃত পশুর গোশত খেতে অনীহা প্রকাশ করতো। তাই রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম মুসলমানদের জবেহকৃত প্রাণীর গোশত খাওয়াকে মুসলমানের নিদর্শন হিসেবে উল্লেখ করেছেন।
এ কারণেই প্রিয়নিব সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম নামাজ আদায়কারী; কিবলার প্রতি বিশ্বাস স্থাপনকারী এবং মুসলমানদের জহেবকৃত পশুর গোশত যারা খায়; তাদের জীবন ও সম্পদ রক্ষার দায়িত্ব আল্লাহ ও তাঁর রাসুলের।
Advertisement
আল্লাহ তাআলা মুসলিম উম্মাহকে বিশ্বনবি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের হাদিস মোতাবেক আমল করে খাঁটি মুসলমান হওয়ার এবং দুনিয়া ও পরকালীন জীবনে আল্লাহ ও তাঁর রাসুলের জিম্মাদারী লাভ করার তাওফিক দান করুন। আমিন।
এমএমএস/পিআর