আন্তর্জাতিক

জনসনের পাউডারে ক্যান্সার : ১১০ মিলিয়ন ডলার জরিমানা

যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক বহুজাতিক কোম্পানি জনসন অ্যান্ড জনসনের তৈরি পণ্য ব্যবহারের কারণে ক্যান্সারে আক্রান্ত হয়েছেন বলে অভিযোগ এনেছিলেন এক নারী। এই অভিযোগ প্রমাণিত হওয়ায় ওই নারীকে ১১০ মিলিয়ন মার্কিন ডলার অর্থ দিতে জনসন অ্যান্ড জনসনকে নির্দেশ দিয়েছেন দেশটির মিসৌরি অঙ্গরাজ্যের আদালত।

Advertisement

এর আগে মার্কিন এই বহুজাতিক কোম্পানির পণ্য সামগ্রী ব্যবহারে ক্যান্সারের অভিযোগ উঠলেও কোনো ধরনের সতর্কতা অবলম্বন করেনি।

জনসন অ্যান্ড জনসনের তৈরি শিশুদের ট্যালকম পাউডার ব্যাপক জনপ্রিয়। দেশটিতে আরো অন্তত দুই হাজার ৪০০ জন একই ধরনের অভিযোগ এনেছেন জনসনের বিরুদ্ধে। মার্কিন এই বহুজাতিক কোম্পানির বেবি সোপ, লোশন, পাউডারসহ বিভিন্ন পণ্য সামগ্রীর বড় ধরনের বাজার রয়েছে বাংলাদেশেও। 

সেন্ট লুইসের আদালতে এসব অভিযোগ ঝুলে আছে। এর আগে আরো কমপক্ষে চারবার আদালতের কাঠগড়ায় উঠেছিল জনসন; এর মধ্যে তিনবার জনসন ও ট্যালকমের এক সরবরাহকারীকে ১৯৭ মিলিয়ন মার্কিন ডলার জরিমানা গুণতে হয়।

Advertisement

বৃহস্পতিবার ভার্জিনিয়ার বাসিন্দা লুইস স্লেম্প নামে ৬২ বছরের এক নারীর দায়ের করা মামলার রায় দেয় মিসৌরির আদালত। চার দশক ধরে তিনি জনসনের পাউডার ব্যবহার করে আসছেন। জনসনের পাউডার ব্যবহারের কারণেই তার ডিম্বাশয়ের ক্যান্সার হয়েছে বলে চিকিৎসকরা জানিয়েছেন। ২০১২ সালে তার ডিম্বাশয়ে প্রথম ক্যান্সার ধরা পড়ার পর তিনি কেমোথেরাপি নেন। সম্প্রতি মরণব্যাধি এই ক্যান্সার তার লিভারেও ছড়িয়ে পড়েছে।

স্লেম্পের অভিযোগ, চার দশক ধরে জনসন অ্যান্ড জনসনের ট্যালকম পাউডার, বেবি পাউডার ও শাওয়ার পাউডার ব্যবহার করার কারণে তার শরীরে ক্যান্সার বাসা বেধেছে।

আদালতের বিচারক জনসনকে ৫ দশমিক ৪ মিলিয়ন ক্ষতিপূরণের নির্দেশ দিয়ে বলেছেন, জনসন অ্যান্ড জনসনের অপরাধ ৯৭ শতাংশ। এছাড়া ট্যালকম পাউডার সরবরাহকারী ফরাসি প্রতিষ্ঠান ইমেরিসের ১ শতাংশ। শাস্তিমূলক ক্ষতিপূরণ হিসেবে জনসন অ্যান্ড জনসন ১০৫ মিলিয়ন ও ইমেরিস ৫০ হাজার ডলার ওই নারীকে পরিশোধ করবে বলে নির্দেশ দিয়েছেন আদালত।

আদালতের কার্যক্রম অনলাইনে সম্প্রচারকারী কোর্টরুম ভিউ নেটওয়ার্কের মাধ্যমে রয়টার্স ওই রায় দেখেছে।

Advertisement

অভিযোগকারী লুইস স্লেম্পের আইনজীবী টেড মিডোস বলেছেন, আমরা বারবার বৈজ্ঞানিক প্রমাণ উপেক্ষা করতে দেখেছি এই কোম্পানিকে। আমেরিকার নারীদের প্রতি তাদের দায়-দায়িত্ব প্রতিনিয়ত অস্বীকার করেছে জনসন অ্যান্ড জনসন।

জনসন অ্যান্ড জনসন এক বিবৃতিতে ডিম্বাশয়ের ক্যান্সারে আক্রান্ত নারীদের প্রতি সহানুভূতি প্রকাশ করলেও আদালতের রায়ের বিরুদ্ধে আপিলের পরিকল্পনার কথা জানিয়েছে।

এসআইএস/এমএস