বহুল প্রতীক্ষিত দক্ষিণ এশীয় স্যাটেলাইট ‘জিএসএটি-০৯’ সফলভাবে উৎক্ষেপণ করা হয়েছে। শুক্রবার ভারতের স্থানীয় সময় বিকেল ৫টা ৩ মিনিটে ভারতের অন্ধ্র প্রদেশের শ্রীহরিকোটা উৎক্ষেপণ কেন্দ্র থেকে স্যাটেলাইটটি সফলভাবে উৎক্ষেপণ করা হয়।
Advertisement
এই উৎক্ষেপণের ক্ষণগণনা শুরু হয় বৃহস্পতিবার দুপুরে। সার্কের ছয়টি প্রতিবেশি দেশের জন্য যোগাযোগ ব্যবস্থার বিপ্লব ঘটাতে মহাকাশে এই সর্বাধুনিক স্যাটেলাইটটি পাঠানো হয়েছে।
ভারতের উদ্যোগে ২০১৪ সালে সার্ক সম্মেলনে দক্ষিণ এশিয়ার সব দেশকে এই স্যাটেলাইটে যুক্ত হওয়ার আহ্বান জানানো হয়। শেষ পর্যন্ত পাকিস্তান ছাড়া সার্কের অন্যান্য দেশগুলো এতে যুক্ত হয়।
তিন বছর ধরে নির্মাণ করা এই স্যাটেলাইটটি মহাকাশে কার্যকরী থাকবে ১২ বছর অর্থাৎ ২০২৯ সাল পর্যন্ত। আশা করা হচ্ছে স্যাটেলাইটটি দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলোর মধ্যে টেলিযোগাযোগ, টেলি-মেডিসিন, টেলি-এডুকেশন ও অন্যান্য খাতে দ্রুত সেবা প্রদানে অবদান রাখবে। একনজরে জেনে নেয়া যাক এই স্যাটেলাইট নিয়ে গুরুত্বপূর্ণ কিছু তথ্য।
Advertisement
এই উপগ্রহ উৎক্ষেপণের কৃতিত্ব ভারতের একার নয় বলে মনে করেন দেশটির প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। তিনি বলেন, প্রতিবেশী সব রাষ্ট্রকে সঙ্গে নিয়েই ভারত মহাকাশ গবেষণায় এগিয়ে যাবে।
ভারতীয় মহাকাশ গবেষণা সংস্থা ইসরোর তৈরি দক্ষিণ এশীয় উপগ্রহটির ওজন দুই হাজার দুইশ ৩০ কেজি। তিন বছরে এ স্যাটেলাইটটি তৈরিতে খরচ পড়েছে দুইশ ৩৫ কোটি টাকা এবং পুরো প্রকল্পের খরচ চারশ ৫০ কোটি টাকা।
জিও সিনক্রোনাস স্যাটেলাইট লঞ্চ বা জিএসএলভির মাধ্যমে স্যাটেলাইটটি মহাকাশে উৎক্ষেপণ করা হয়েছে। দক্ষিণ এশীয় অঞ্চলের উন্নয়নের পথে এটা বড় পদক্ষেপ বলে ধারণা করা হচ্ছে।
উপরে অবস্থান করে ভূ-পর্যবেক্ষণ, খনিজ পদার্থ, পানির উৎসের সন্ধান, এমনকি প্রাকৃতিক দুর্যোগের পূর্বাভাসেও এই স্যাটেলাইট বড় ভূমিকা নিতে পারবে বলে মনে করা হচ্ছে।
Advertisement
পাকিস্তান ছাড়া শ্রীলঙ্কা ও আফগানিস্তানের কাছেও পূর্ণ সময়ের কমিউনিকেশন স্যাটেলাইট রয়েছে। চীনের সাহায্য নিয়ে পাকিস্তান ও শ্রীলঙ্কা এই স্যাটেলাইটগুলো তৈরি করেছে। তবে আফগানিস্তান ভারতের তৈরি পুরনো স্যাটেলাইট ইউরোপ থেকে কিনেছে। এই পথ ধরে এই বছরের মধ্যেই বাংলাদেশও স্যাটেলাইট তৈরির পথে এগিয়ে যাবে।
নতুন এই স্যাটেলাইটে ১২টি কেইউ-ব্যান্ড ট্রান্সপন্ডার রয়েছে। যা কমিউনিকেশনে বিশেষ সাহায্য করবে। প্রতিটি দেশই অন্তত এর একটি করে ট্রান্সপন্ডার ব্যবহার করতে পারবে। প্রাথমিক পরিকাঠামো তৈরিতে ভারত বাকিদের সাহায্য করবে বলেও আশ্বাস দিয়েছে।
এই স্যাটেলাইট ভারত ছাড়াও বাংলাদেশ, নেপাল, ভুটান, মালদ্বীপ, শ্রীলঙ্কা ও আফগানিস্তানকে সাহায্য করবে। সহযোগী দেশের জন্য স্যাটেলাইটে হট লাইনও থাকবে। যার ফলে প্রাকৃতিক দুর্যোগে তা বিশেষ সঙ্কেত দেবে।
পাকিস্তানেরও এই মহাকাশ গবেষণা প্রকল্পে অংশ নেয়ার কথা ছিল। তবে শেষপর্যন্ত দেশটি আর এতে অংশ নেয়নি।
কেএ/এনএফ/এমএস