দেশজুড়ে

হার না মানা সেই শারমিন পেল জিপিএ-৪.৩২

নিজের বাল্যবিয়ে ঠেকিয়ে ‘ইন্টারন্যাশনাল উইমেন অব কারেজ অ্যাওয়ার্ড’ পাওয়া শারমিন আক্তার এসএসসি পাস করেছেন।

Advertisement

মায়ের বিরুদ্ধে মামলা করে জোরপূর্বক বিয়ে ঠেকিয়ে দক্ষিণ এশিয়ার কিশোরীদের জন্য দৃষ্টান্ত সৃষ্টি করা শারমিন ঝালকাঠির রাজাপুর পাইলট বালিকা উচ্চ মাধ্যমিক বিদ্যালয় থেকে ৪ দশমিক ৩২ পেয়ে পাস করেছেন।

এই ফলাফলে দারুণ উচ্ছ্বাসিত শারমিন। জানায়, ভবিষ্যতে আইনজীবী হয়ে নির্যাতিত ও অসহায় নারীদের পাশে দাঁড়াতে চাই।

শারমিন জানায়, আমার এসএসসি পরীক্ষাই দেয়া হত না যদি আমি মায়ের বিরুদ্ধে মামলা না করতাম। পরীক্ষার ফলাফল যা হোক না কেন হাসি মুখে মেনে নেব। তবে আমার ওপর নির্যাতন নেমে না আসলে অনেক ভালো ফলাফল করতাম।

Advertisement

শারমিনের ভাষ্য, অনেক চড়াই উৎরাই পেরিয়ে আমি এসএসসি পরীক্ষা দিয়েছি। এ ফলাফলেই আমি সন্তুষ্ট। তবে এখন থেকে আরও অনেক বেশি বেশি পড়াশোনা করব। আগামীতে একজন আইনজীবী হওয়ার স্বপ্ন দেখছি। আর আইনজীবী হয়ে দেশ ও দেশের নির্যাতিত নারীদের পাশে দাঁড়ানোই হবে আমার একমাত্র ব্রত।

শারমিনের স্কুলের প্রধান শিক্ষক গাজী গোলাম মোস্তফা জানান, নবম শ্রেণিতে পড়ার সময় ২০১৫ সালের আগস্টের শুরুর দিকে ৩২ বছর বয়সী এক পাত্রের সঙ্গে শারমিনের বিয়ে ঠিক করে তার মা। বিয়েতে রাজি না হওয়ায় খুলনায় নিয়ে তাকে পাত্রের সঙ্গে আটকে রাখা হয়।

পরে সেখান থেকে কৌশলে পালিয়ে রাজাপুরে আসার পরও মা আর সেই যুবকের নির্যাতন সহ্য করতে হয় তাকে। শেষে এক সহপাঠীর সহযোগিতায় রাজাপুর থানায় মা আর ওই যুবকের বিরুদ্ধে মামলা করে শারমিন। তখন থেকেই ওর পাশে আছি। এত নির্যাতন, এত ঝড়-বিপত্তির পর এই ফলাফল সত্যিই প্রশংসার।

এর আগে সাহসিকতার সঙ্গে নিজের বাল্যবিয়ে ঠেকিয়ে দেয়া শারমিন আক্তারের হাতে গত ২৯ মার্চ ‘ইন্টারন্যাশনাল উইমেন অব কারেজ’ পুরস্কার তুলে দেন যুক্তরাষ্ট্রের ফার্স্ট লেডি মেলানিয়া ট্রাম্প।

Advertisement

এএম/আরআইপি