মানুষের ঈমান গ্রহণের পর নামাজ প্রতিষ্ঠা এবং জাকাত আদায় হলো পরিপূর্ণ মুমিন হওয়ার প্রকৃত নিদর্শন। এ কারণে আল্লাহ তাআলা তাঁর বান্দাদেরকে ঈমানদার হিসেবে আখ্যায়িত করে কুরআনুল কারিমের অনেক স্থানে নামাজ প্রতিষ্ঠার নির্দেশ প্রদানের সঙ্গে সঙ্গে জাকাত আদায়ের প্রতি গুরুত্ব দিয়েছেন।
Advertisement
আর রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ঈমান গ্রহণ না করা, নামাজ প্রতিষ্ঠা না করা এবং জাকাত আদায় না করা ব্যক্তিদের সঙ্গে লড়াই করার জন্য আদিষ্ট হয়েছিলেন বলে হাদিসে পাকে ঘোষণা দিয়েছেন।
ঈমান, নামাজ ও জাকাত ইসলামি রাষ্ট্রের নাগরিকদের জন্য আবশ্যক পালনীয় প্রযোজ্য কাজ। যারা এ কাজগুলো পালন করবে আর যারা তা পালন করবে না, তাদের করণীয় সম্পর্কে প্রিয়নবি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম হাদিসে পাকে সুস্পষ্ট বর্ণনা দিয়েছেন।
হজরত আবদুল্লাহ ইবনে ওমর রাদিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত তিনি বলেন, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, আমাকে এ মর্মে আদেশ করা হয়েছিল যে, লোকেরা যে পর্যন্ত এ সাক্ষ্য প্রদান না করে যে, আল্লাহ ব্যতিত কোনো মাবুদ নেই; মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম আল্লাহর রাসুল; আর নামাজ প্রতিষ্ঠা না করে, জাকাত আদায় না করে, সে পর্যন্ত আমি যেন তাদের বিরুদ্ধে লড়াই করে যাই।
Advertisement
অতঃপর তারা যখন এ সব কাজ করবে, তখন আমার পক্ষ হতে তাদের জীবন ও সম্পদ নিরাপদ থাকবে। কিন্তু ইসলামের বিধান অনুযায়ী কোনো দণ্ড পাওয়ার যোগ্য অপরাধ করলে তা তাকে অবশ্যই ভোগ করতে হবে। আর (তাদের অন্তরের ব্যাপারে) হিসাব-নিকাশের ভার আল্লাহর উপরই ন্যস্ত। (বুখারি-মুসলিম)
হাদিসের আলোচনাঈমানের পর শুধুমাত্র নামাজ ও জাকাতের কথা উল্লেখ করার মধ্যে রয়েছে মুমিন বান্দার জন্য অনেক উপকারিতা। আর তা হলো->> মানুষের ঈমান গ্রহণ হলো শুধুমাত্র মৌখিক স্বীকৃতি। ঈমান লাভের পর নামাজ প্রতিষ্ঠা এবং জাকাত আদায়ের মাধ্যমে মানুষ পরিপূর্ণ মুমিন হওয়ার যোগ্যতা অর্জন করে।
>> মানুষের জন্য পরিপূর্ণভাবে ইসলামে প্রবেশের মাধ্যম হলো নামাজ এবং জাকাতের বিধান বাস্তবায়ন করা।
>> ঈমানের পর ইসলামের গুরুত্বপূর্ণ দু’টি রুকন হলো নামাজ ও জাকাত। যা মানুষের ঈমানকে দৃঢ় ও মজবুত করে।
Advertisement
>> হাদিস বিশারদগণের মতে, ইসলামি শরিয়তে ফরজ ও ওয়াজিব তরককারীদের বিরুদ্ধে লড়াই করা অপরিহার্য। যার প্রমাণ হলো- হজরত আবু বকর রাদিয়াল্লাহ আনহু কর্তৃক নির্দেশিত ফরমান যে, জাকাত অস্বীকারকারীদের বিরুদ্ধে আমরণ লড়াই চালিয়ে যাওয়া।
সুতরাং পরিপূর্ণ মুমিন হতে হলে মানুষকে ঈমান গ্রহণের পর নামাজ প্রতিষ্ঠা এবং জাকাত আদায় অপরিহার্য বিষয়। যে কারণে প্রিয়নবি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম নামাজ ও জাকাতের প্রতি অধিক গুরুত্বারোপ করেছেন।
আল্লাহ তাআলা মুসলিম উম্মাহকে ঈমান লাভের পর নামাজ প্রতিষ্ঠা এবং জাকাত আদায় করার মাধ্যমে হাদিসের ওপর পরিপূর্ণ আমল করার তাওফিক দান করুন। আমিন।
এমএমএস/পিআর