আন্তর্জাতিক

ভারতের প্রধান বিচারপতির বিরুদ্ধে জামিন অযোগ্য গ্রেফতারি পরোয়ানা

ভারতের প্রধান বিচারপতিসহ দেশটির সুপ্রিম কোর্টের সাত বিচারকের বিরুদ্ধে জামিন অযোগ্য গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করেছেন কলকাতা হাইকোর্টের বিচারক সিএস কারনান। কলকাতার এই বিচারকের মানসিক স্বাস্থ্য পরীক্ষার নির্দেশ দেয়ার পর পাল্টা সুপ্রিম কোর্টের প্রধান বিচারপতিসহ সাত বিচারকের বিরুদ্ধে ওই পরোয়ানা জারি করেছেন কারনান।

Advertisement

কলকাতা হাইকোর্টের এক বিচারপতি কারনানের মানসিক স্বাস্থ্য পরীক্ষা করে দেখার নজিরবিহীন নির্দেশ দেয়ার পরে ওই বিচারক বলেছেন, তিনি মানসিক স্বাস্থ্য পরীক্ষা করাতে দেবেন না। বরং ভারতের প্রধান বিচারপতির নেতৃত্বাধীন সুপ্রিম কোর্টের যে বেঞ্চ ওই নির্দেশ দিয়েছিলেন, সেই সদস্যদের মানসিক স্বাস্থ্য পরীক্ষার নির্দেশ জারি করেছেন সিএস কারনান।

ভারতের বিচারবিভাগের ইতিহাসে এ ধরনের নজিরবিহীন টানাপোড়েনের ঘটনা এর আগে দেখা যায়নি। কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি সিএস কারনান নিজের বাসভবনে এক বিশেষ আদালত বসিয়ে পাল্টা নির্দেশনা জারি করেছেন। তবে তার এই নির্দেশের আইনী বৈধতা নেই বলে বিশেষজ্ঞরা জানিয়েছেন।

বিচারপতি কারনানের আইনজীবী পিটার রমেশ বিবিসি বলেছেন, কারনান মেডিকেল পরীক্ষায় সহযোগিতা করবেন না। সুপ্রিম কোর্টে একটি আদালত অবমাননার মামলা চলছে তার বিরুদ্ধে। এ ধরনের মামলায় মেডিকেল পরীক্ষার আদেশ দেয়া যায় না।

Advertisement

তিনি বলেন, বিচারপতি কারনান মনে করেন, সর্বোচ্চ আদালতের যে বিচারকরা এ নির্দেশ দিয়েছেন, তাদেরই পরীক্ষার প্রয়োজন আছে। কারণ তারা বিচারপতি কারনানের মতো একজন সুস্থ মস্তিষ্কের বিচারকের মানসিক স্বাস্থ্য পরীক্ষা করানোর নির্দেশ দিয়েছেন।

এর আগে সোমবার ভারতের প্রধান বিচারপতি জেএস খেহার নেতৃত্বাধীন বেঞ্চ জানায়, যেভাবে বিচারপতি কারনান বেঞ্চের সাতজন বিচারককে কলকাতায় তার আদালতে হাজিরা দেয়ার নির্দেশ দিয়েছেন, সেই সংক্রান্ত যে বিবৃতি সংবাদমাধ্যমে প্রকাশিত হয়েছে, সেগুলো দেখে সুপ্রিম কোর্টের মনে হয়েছে যে বিচারপতি কারনান হয়তো আদালত অবমাননার মূল মামলায় নিজের পক্ষে ঠিকমতো সওয়াল করতে পারবেন না।

আর এজন্যই কলকাতায় একটি চিকিৎসক দলকে তার মানসিক সুস্থতা খতিয়ে দেখে সুপ্রিম কোর্টের কাছে প্রতিবেদন জমা দিতে বলা হয়েছে।

কলকাতার বাংলা দৈনিক আনন্দবাজার বলছে, ভারতের বিচার ব্যবস্থা, সুপ্রিম কোর্ট ও মাদ্রাজ হাইকোর্টের বিচারপতিদের বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ তুলে প্রধানমন্ত্রীর দফতরে চিঠি লিখেছিলেন বিচারপতি কারনান। রীতি ভেঙে এমন চিঠি পাঠানোয় তার বিরুদ্ধে স্বতঃপ্রণোদিত ভাবে মামলা দায়ের করে শীর্ষ আদালত। কারনানের বিচার বিভাগীয় ও প্রশাসনিক দায়িত্ব সাময়িক ভাবে কেড়ে নেয়া হয়। তিনি মামলায় হাজিরা না-দেয়ায় সমনও জারি করা হয় তার বিরুদ্ধে।

Advertisement

শীর্ষ আদালত জানায়, কারনান ৮ মে’র মধ্যে বক্তব্য না-জানালে ধরে নেয়া হবে, আত্মপক্ষ সমর্থনে তার কিছু বলার নেই। ডিভিশন বেঞ্চ দেশের সব আদালত, ট্রাইব্যুনাল এবং কমিশনকে নির্দেশ দিয়েছে, ৮ ফেব্রুয়ারির পরে কারনানের জারি করা কোনও নির্দেশ বা রায়কে যেন কোনও রকম গ্রাহ্য করা না হয়।

এসআইএস/জেআইএম