অর্থনীতি

এপ্রিলে রেমিট্যান্স কমেছে ৭৮৮ কোটি টাকা

চলতি বছরের এপ্রিলে ১০৯ কোটি ২৬ লাখ মার্কিন ডলারের সমপরিমাণ রেমিট্যান্স পাঠিয়েছেন প্রবাসীরা। যা গত বছরের একই মাসে ছিল ১১৯ কোটি ১১ লাখ ডলার। সে হিসেবে বছরের ব্যবধানে রেমিট্যান্স কমেছে ৯ কোটি ৮৫ লাখ ডলার বা ৮ দশমিক ২৭ শতাংশ। টাকার হিসেবে (প্রতি ডলার ৮০ টাকা ধরে) প্রায় ৭৮৮ কোটি টাকা। বাংলাদেশ ব্যাংকের বৈদেশিক মুদ্রানীতি বিভাগের হালনাগাদ প্রতিবেদন থেকে এ তথ্য জানা গেছে।

Advertisement

রেমিট্যান্স কমে যাওয়ার কারণ হিসেবে সংশ্লিষ্টরা বলছেন, হুন্ডি বা অবৈধ পথে টাকা পাঠানো বেড়ে যাওয়া, মধ্যপ্রাচ্যজুড়ে চলা রাজনৈতিক ও সামাজিক অস্থিরতাসহ বেসরকারি পর্যায়ে জনশক্তি রফতানিতে ভাটার কারণে রেমিট্যান্স প্রবাহ কমছে।

কেন্দ্রীয় ব্যাংকের তথ্যানুযায়ী, চলতি বছরের মার্চের তুলনায় এপ্রিলে রেমিট্যান্সের পরিমাণ কিছুটা বেড়েছে। ২০১৬-১৭ অর্থবছরের দশম মাস এপ্রিলে ১০৯ কোটি ২৬ লাখ মার্কিন ডলার রেমিট্যান্স এসেছে। আগের মাসে এসেছিল ১০৭ কোটি ৭৪ লাখ। সেই হিসাবে এক মাসের ব্যবধানে রেমিট্যান্স বেড়েছে ১ কোটি ৫১ লাখ ডলার।

এপ্রিলে প্রবাসীরা রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংকগুলোর মাধ্যমে রেমিট্যান্স পাঠিয়েছেন ২৬ কোটি ৩ লাখ ডলার। বিশেষায়িত একটি ব্যাংকের মাধ্যমে ৯৭ লাখ ডলার পাঠিয়েছেন প্রবাসীরা। এছাড়া বেসরকারি ব্যাংকগুলোর মাধ্যমে ৮১ কোটি ৩ লাখ ডলার এবং বিদেশি ব্যাংকগুলোর মাধ্যমে ১ কোটি ২২ লাখ ডলার রেমিট্যান্স এসেছে।

Advertisement

এবারও ইসলামী ব্যাংকের মাধ্যমে সবচেয়ে বেশি রেমিট্যান্স এসেছে। ব্যাংকটির মাধ্যমে রেমিট্যান্স এসেছে ১৮ কোটি ৭১ লাখ মার্কিন ডলার। এছাড়া অগ্রণী ব্যাংকের মাধ্যমে ১০ কোটি ২৮ লাখ ডলার, সোনালী ব্যাংকের মাধ্যমে ৮ কোটি ডলার এবং জনতার মাধ্যমে ৬ কোটি ৬১ লাখ ডলার রেমিট্যান্স এসেছে।

কেন্দ্রীয় ব্যাংকের মুখপাত্র ও নির্বাহী পরিচালক শুভঙ্কর সাহা বলেন, মোবাইল ব্যাংকিংয়ের মাধ্যমে হুন্ডি বা অবৈধ পথে প্রবাসী আয় পাঠানো বেড়ে যাওয়ায় রেমিট্যান্স কমছে। বিষয়টি নিয়ে কেন্দ্রীয় ব্যাংক উদ্বিগ্ন। অবৈধ পথে প্রবাসী আয় পাঠানো রোধ ও বৈধ পথে রেমিট্যান্স পাঠাতে উৎসাহী করতে কেন্দ্রীয় ব্যাংক কাজ করছে। ইতোমধ্যে রেমিট্যান্স প্রবাহ বাড়াতে নগদ প্রণোদনা দিতে অর্থ মন্ত্রণালয়ের কাছে প্রস্তাব দিয়েছে সংস্থাটি।

বাংলাদেশ ব্যাংকের পরিসংখ্যানে দেখা যায়, ২০১৫-১৬ অর্থবছরে পুরো সময়ে রেমিট্যান্স আসে এক হাজার ৪৯৩ কোটি ডলার। যা আগের অর্থবছরে ছিল এক হাজার ৫৩১ কোটি ডলার। সেই হিসেবে ২০১৫-১৬ অর্থবছরে তার আগের অর্থবছরের তুলনায় ২ দশমিক ৫১ শতাংশ কম রেমিট্যান্স আসে।

এদিকে স্বাধীনতার পর বাংলাদেশের ইতিহাসে বছরের হিসাবে ২০১৩ সালে প্রথমবারের মত রেমিটেন্স প্রবাহ কমে। এর পর থেকেই রেমিট্যান্স নিম্নমুখী আছে। সদ্য সমাপ্ত ২০১৬ সালেও নিম্নগতি অব্যাহত ছিল। ২০১৬ সালে দেশে ব্যাংকিং চ্যানেলে রেমিট্যান্স এসেছে ১ হাজার ৩৬১ কোটি মার্কিন ডলার। যা ২০১৫ সালে ছিল ১ হাজার ৫৩১ কোটি মার্কিন ডলার। সে হিসেবে এক বছরের ব্যবধানে রেমিট্যান্স কমেছে ১৭০ কোটি ৬১ লাখ মার্কিন ডলার বা ১১ দশমিক ১৪ শতাংশ। টাকার অংকে যার পরিমাণ দাঁড়ায় প্রায় সাড়ে ১৩ হাজার কোটি টাকা।

Advertisement

এসআই/জেএইচ/এএইচ/এমএস