অর্থনীতি

সময়ের অপেক্ষায় লাফার্জ ও হোলসিমের একীভূতকরণ

বিনিয়োগকারীদের জন্য সু-সংবাদ। বিশ্বের শীর্ষস্থানীয় দুই সিমেন্ট কোম্পানি ফ্রান্সভিত্তিক লাফার্জ ও সুইজারল্যান্ডভিত্তিক হোলসিম একীভূত হওয়া এখন সময়ের ব্যপার। লাফার্জ সিমেন্ট ও হোলসিমের প্রস্তাবিত একীভূতকরণ বিশ্বের সিমেন্ট খাতের ‘মেগা মার্জার’ হিসেবে আলোচিত এ প্রক্রিয়া সব বাধা শেষ হয়েছে। সম্প্রতি ৬৫০ কোটি ইউরো সমপরিমাণ সম্পদ বিক্রির অনুমোদন দিয়ে মার্জার চুক্তিকে এগিয়ে নেওয়ার পথ সুগম করেছে ইউরোপীয় ইউনিয়ন (ইইউ) নিয়ন্ত্রক সংস্থাগুলো। আগামী জুনের মধ্যে এ চুক্তি সম্পন্ন হতে পারে। এ জন্য চলতি মে মাসের ৮ তারিখে শেয়ারহোল্ডারদের মধ্যে ভোট হওয়ার কথা রয়েছে। ইতোমধ্যেই যৌথ কোম্পানির প্রধান নির্বাহী কে হচ্ছেন তাও ঠিক হয়ে গেছে। শীর্ষ দুই সিমেন্ট কোম্পানি লাফার্জ ও হোলসিম একীভূত হলে নতুন কোম্পানির দায়িত্ব নেবেন বর্তমানে লাফার্জ সিমেন্টের নির্বাহী এরিক ওলসেন।আইরিশ টাইমস-এর এক খবরে বলা হয়েছে, বিশ্বের সর্ববৃহৎ কোম্পানি হতে গত বছর লাফার্জ ও হোলসিম তাদের মধ্যে চার হাজার কোটি ইউরোর চুক্তিতে সম্মত হয়। কিন্তু ইইউ নিয়ন্ত্রক সংস্থাগুলো বলেছিল, মার্জারের পর নতুন কোম্পানিটি প্রতিযোগিতার বাজার হারিয়ে ফেলবে- এমন আশঙ্কায় তাদের ৬৫০ কোটি ইউরোর সম্পদ ছেড়ে দিতে হবে।ইউরোপীয় ইউনিয়ন জানায়, বর্তমানে তারা এই সম্পদ আইরিশ ভবন সামগ্রী গ্রুপ সিআরএইসের কাছে বিক্রির অনুমতি দিয়েছে। এতে তারা হোলসিম-লাফার্জের সঙ্গে আলাদা কোনো প্রতিযোগিতা তৈরি হওয়ার ঝুঁকি দেখছেন না।গত বছরের ডিসেম্বরে মার্জার প্রক্রিয়া হতে পারে বলে জানিয়েছিল ইউরোপীয় কমিশন। এ জন্য লাফার্জকে কমিশন বলেছিল, জার্মানি, রোমানিয়া ও ব্রিটেনে তাদের ব্যবসা ছাড়তে হবে। আর হোলসিমকে ফ্রান্স, হাঙ্গেরি, স্লোভাকিয়া, স্পেন ও চেক প্রজাতন্ত্রে তাদের ব্যবসা ছাড়ার কথা বলে।অন্যান্য দেশ যেমন যুক্তরাষ্ট্র ও ব্রাজিলের নিয়ন্ত্রক সংস্থা দাবি করে, প্রতিযোগিতার বিষয়ে উদ্বেগ কাটাতে দুই কোম্পানিকে তাদের কিছু সম্পদ ছেড়ে দিতে হবে।প্রসঙ্গত, নতুন কোম্পানির নাম হতে যাচ্ছে লাফার্জহোলসিম। এতে কাজ করবে এক লাখ ৩০ হাজার কর্মী। আর যৌথ কোম্পানিটির বছরে বিক্রি হবে ৩ হাজার ২০০ কোটি ইউরো। এতে তাদের বার্ষিক মুনাফা হবে ৬৫০ কোটি ইউরো।এদিকে সিলেটের সুনামগঞ্জের ছাতকে অবস্থিত দেশের বেসরকারি সিমেন্ট কারখানাগুলোর মধ্যে লাফার্জ সিমেন্ট হচ্ছে একমাত্র স্বয়ংসম্পূর্ণ কারখানা। সিমেন্টের প্রধান কাঁচামাল ক্লিংকার উৎপাদন করে সেখান থেকে সিমেন্ট তৈরি করে থাকে প্রতিষ্ঠানটি। পাশাপাশি তিন থেকে চার লাখ টন উদ্বৃত্ত ক্লিংকার দেশের অভ্যন্তরে ছোট ও মাঝারি মানের বিভিন্ন কোম্পানির কাছে বিক্রি করা হয়।বর্তমানে লাফার্জের নিজস্ব দুটি সিমেন্ট কারখানায় প্রতিবছর ১৪ থেকে ১৫ লাখ টন সিমেন্ট উৎপাদন করা হয়, যা দেশের মোট চাহিদার ৭ থেকে ৮ শতাংশ। হোলসিমের সঙ্গে একীভূতকরণ সম্পন্ন হলে সক্ষমতা দ্বিগুণ হবে।এসআই/বিএ/আরআইপি

Advertisement