মতামত

চালের মূল্য স্থিতিশীল করুন

সংকট না থাকলেও চালের দাম বেড়েই চলেছে। এটা অত্যন্ত উদ্বেগজনক। ভোক্তাস্বার্থ বলে  যদি কিছু থাকতো তাহলে এই অরাজক অবস্থার সৃষ্টি হতো না। মুনাফালোভী ব্যবসায়ীদের এমনিতেই কোনো ছলের অভাব হয় না। এবার হাওর অঞ্চলের দুর্যোগকে চালের দাম বৃদ্ধির কারণ হিসেবে দেখানো হচ্ছে। অথচ যদি বন্যায় হাওর অঞ্চলের ফসল নষ্ট হয়ে না যেত তাহলেও চাল বাজারে আসতে ২/৩ মাস সময় লাগতো। কাজেই এর প্রভাব এখনই বাজারে পড়ার কথা নয়। এরপরও দাম বাড়ছে। তাই চলের মূল্য স্বাভাবিক ও স্থিতিশীল রাখতে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ অত্যন্ত জরুরি। 

Advertisement

গত কয়েক মাস ধরে বেড়েই চলেছে চালের দাম। সুনির্দিষ্ট কোনো কারণ ছাড়াই এক সপ্তাহের ব্যবধানে চালের দাম আবারও বাড়ানো হয়েছে। বিশেষ করে মোটা চালের দাম নিম্ন আয়ের মানুষের ক্রয়ক্ষমতার বাইরে চলে যাচ্ছে। মৌসুম শেষ হওয়ার অজুহাত দেখিয়ে চালের দাম বাড়িয়েছেন ব্যবসায়ীরা। লাগামহীনভাবে চালের দাম বাড়ানোয় বেকায়দায় আছেন নিম্ন আয়ের মানুষ। গেল মাসেও মূল্যস্ফীতির হার বেড়েছিল। এ মাসেও মূল্যস্ফীতি বাড়তে পারে বলে আশংকা করছেন সংশ্লিষ্টরা।প্রতি কেজি মোটা চাল বিক্রি হচ্ছে সর্বোচ্চ ৪০ টাকায়। এক সপ্তাহ আগে একই মানের চাল কেজিপ্রতি বিক্রি হয়েছে ৩৫ থেকে সর্বোচ্চ ৩৭ টাকায়। এ হিসাবে এক সপ্তাহের ব্যবধানে নিত্যপণ্যটির দাম কেজিতে তিন থেকে পাঁচ টাকা বেড়েছে। বাজারে মোটা চালের সঙ্গে তাল মিলিয়ে হাঁটছে মিনিকেটও। প্রতি কেজি মিনিকেট বিক্রি হচ্ছে ৫০-৫৪ টাকায়। এক সপ্তাহ আগে এর দাম কেজিপ্রতি ৪৮-৫২ টাকা ছিল। সপ্তাহের ব্যবধানে এটি কেজিতে দুই টাকা বেড়েছে। চালের দাম বাড়ার চিত্র ফুটে উঠেছে রাষ্ট্রায়ত্ত বিপণন সংস্থা ট্রেডিং কর্পোরেশন অব বাংলাদেশের (টিসিবি) হিসাবেও। সংস্থাটির হালনাগাদ প্রতিবেদন অনুযায়ী, দেশের বাজারে বর্তমানে প্রতি কেজি মোটা চাল ৩৭-৪০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। গত বছর একই চাল কেজিপ্রতি ৩২-৩৪ টাকায় বিক্রি হয়েছিল।

খাদ্যমন্ত্রী বলেছেন, সরকারি গুদামে যে পরিমাণ চাল আছে, তা বছরের চাহিদা মেটাতে পারবে। তাহলে চালের দাম মণপ্রতি ১০০ থেকে ২০০ টাকা বেড়ে গেল কেন? শুধু চাল নয় যে কোনো উসিলায় দ্রব্যমূল্য বাড়ানো একটি দুর্ভাগ্যজনক প্রবণতায় পরিণত হয়েছে। বাজার নিয়ন্ত্রণে কার্যকর কোনো ব্যবস্থায়ও গড়ে উঠেনি। টিসিবিকে সক্রিয় করে বাজারে একটি প্যারালাল সরবরাহ ব্যবস্থা চালু রাখার কথা বলা হয় সবসময়। কিন্তু আজো টিসিবিকে সেই মাত্রায় কার্যকর করা যায়নি। সামনে রমজান মাস। এই মাসে এমনিতেই দ্রব্যমূল্য বাড়ানোর একটি অপতৎপরতা থাকে। এরই মধ্যে যে অবস্থা দেখা যাচ্ছে তাতে লক্ষণ কিন্তু ভালো নয়। তাই অবিলম্বে চালের মূল্য স্বাভাবিক ও স্থিতিশীল রাখতে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে হবে। পাশাপাশি রমজানে বাজার যাতে অস্থিতিশীল হতে না পারে সেজন্য এখনই সমন্বিত পদক্ষেপ নিতে হবে।

এইচআর/এমএস

Advertisement