স্থায়ী ক্যাম্পাস ইস্যুতে কঠোর অবস্থান নিয়েছে শিক্ষা মন্ত্রণালয়। স্থায়ী ক্যাম্পাস স্থাপনে প্রেসিডেন্সি ইউনিভার্সিটিকে দুই মাসের সময় দেয়া হয়েছে।
Advertisement
এছাড়া চট্টগ্রামের ইউনিভার্সিটি অব ইনফরমেশন সায়েন্স অ্যান্ড টেকনোলজি (ইউএসটিসি) এবং ঢাকার সিটি ইউনিভার্সিটির আউটার ক্যাম্পাস বন্ধের নির্দেশনায় মঙ্গলবার শিক্ষা মন্ত্রণালয় থেকে চিঠি দেয়া হয়েছে।
জানা গেছে, স্থায়ী ক্যাম্পাসের জন্য জমি কিনতে ব্যর্থ হয়েছে প্রেসিডেন্সি ইউনিভার্সিটি। তাই বিশ্ববিদ্যালয়টিকে দুই মাসের আলটিমেটাম দিয়েছে শিক্ষা মন্ত্রণালয়।
প্রেসিডেন্সি ইউনিভার্সিটিকে দেয়া চিঠিতে বলা হয়েছে, আগামী ৩০ জুনের মধ্যে আইনে নির্ধারিত পরিমাণ জমি কিনতে না পারলে জুলাই থেকে শিক্ষার্থী ভর্তি স্থগিত রাখা হবে। জমি না কেনা পর্যন্ত স্থগিতাদেশ অব্যাহত থাকবে।
Advertisement
এছাড়া ১২টি বিশ্ববিদ্যালয়কে ধন্যবাদ জানিয়ে চিঠি দেয়া হয়েছে। এসব বিশ্ববিদ্যালয় স্থায়ী ক্যাম্পাসে কার্যক্রম শুরু করায় তাদের ধন্যবাদ দেয়া হয়। কিন্তু এই ১২টির মধ্যেই আইন লঙ্ঘন করে আউটার ক্যাম্পাস চালানো ইউএসটিসি এবং সিটি ইউনিভার্সিটি আছে। ধন্যবাদের চিঠি পাওয়া আরও কয়েকটি বিশ্ববিদ্যালয়ের বিরুদ্ধে আইন লঙ্ঘন করে মেডিকেল প্রোগ্রাম পরিচালনাসহ অন্য কার্যক্রম চালানোর অভিযোগ রয়েছে।
এদিকে, স্থায়ী ক্যাম্পাস ইস্যুতে শিক্ষা মন্ত্রণালয় ও বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের (ইউজিসি) গঠিত কমিটি প্রতিবেদন জমা দিয়েছে।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, যেসব বিশ্ববিদ্যালয় ইতোমধ্যে স্থায়ী ক্যাম্পাসে সব শিক্ষা কার্যক্রম পরিচালনা করছে সেসব বিশ্ববিদ্যালয়কে ধন্যবাদ দিয়ে চিঠি পাঠানোর সুপারিশ করা হয়েছে। এসব বিশ্ববিদ্যালয়গুলো হলো, নর্থ সাউথ ইউনিভার্সিটি, ইউএসটিসি, ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি অব বিজনেস এগ্রিকালচার অ্যান্ড টেকনোলজি, আন্তর্জাতিকব ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়, আহছানউল্ল্যা বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়, ইস্ট ওয়েস্ট ইউনিভার্সিটি, বাংলাদেশ ইউনিভার্সিটি অব বিজনেস অ্যান্ড টেকনোলজি, গণ বিশ্ববিদ্যালয়, বিজিসি ট্রাস্ট ইউনিভার্সিটি, ইউনিভার্সিটি অব এশিয়া প্যাসিফিক, সিটি ইউনিভার্সিটি। তবে সিটি ইউনিভার্সিটি ও ইউএসটিসি পরিচালিত আউটার ক্যাম্পাস দ্রুত বন্ধের সুপারিশ করা হয়েছে। প্রতিবেদনে আরও বলা হয়, স্থায়ী ক্যাম্পাসে আংশিক শিক্ষা কার্যক্রম পরিচালনা করছে ১২টি বিশ্ববিদ্যালয়। এগুলো হলো, ড্যাফোডিল ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি, আমেরিকান ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি, লিডিং ইউনিভার্সিটি, এশিয়ান ইউনিভার্সিটি অব বাংলাদেশ, উত্তরা ইউনিভার্সিটি, রয়ের ইউনিভার্সিটি অব ঢাকা, গ্রিন ইউনিভার্সিটি অব বাংলাদেশ, অতীশ দীপঙ্কর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ^বিদ্যালয়, নর্দান ইউনিভার্সিটি অব বাংলাদেশ, বাংলাদেশ ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়।
এছাড়া ১০টি বিশ্ববিদ্যালয় স্থায়ী ক্যাম্পাসে শিক্ষা কার্যক্রম পরিচালনা করছে না। এগুলো হলো, ইউনিভার্সিটি অব ইনফরমেশন টেকনোলজি অ্যান্ড সায়েন্সেস, বাংলাদেশ ইউনিভার্সিটি, দি পিপলস ইউনিভার্সিটি অব বাংলাদেশ, ইউনাইটেড ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি, সাউদার্ন ইউনিভার্সিটি অব বাংলাদেশ, ইস্টার্ন ইউনিভার্সিটি, ওয়ার্ল্ড ইউনিভার্সিটি অব বাংলাদেশ, আশা ইউনিভার্সিটি, ইস্ট ডেল্টা ইউনিভার্সিটি, মানারত ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি। তবে এসব বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ দাবি করেছে তারা আংশিক শিক্ষা কার্যক্রম স্থায়ী ক্যাম্পাসে পরিচালনা করছেন।
Advertisement
২০১০ সালের বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় আইন অনুযায়ী বিশ্ববিদ্যালয় স্থাপনের সাত বছরের মধ্যে স্থায়ী ক্যাম্পাসে শিক্ষা কার্যক্রম পরিচালনা করতে হবে। স্থায়ী ক্যাম্পাস প্রতিষ্ঠার জন্য ঢাকা ও চট্টগ্রাম মহানগরে এক একর এবং অন্য এলাকায় দুই একর নিজস্ব অখণ্ড জমি থাকতে হবে। না করলে পাঠদানের স্বীকৃতি বাতিলসহ ব্যবস্থা নেয়ার বিধান রয়েছে।
২০১০ সালের সেপ্টেম্বর থেকে স্থায়ী ক্যাম্পাস স্থাপনে পাঁচ দফা আল্টিমেটাম দেন শিক্ষা মন্ত্রী নুরুল ইসলাম নাহিদ। ওই সময়সীমা শেষ হয় চলতি বছরের জানুয়ারিতে। এরপর অগ্রগতি পর্যালোচনার জন্য সময় বাড়াতে একটি উচ্চ পর্যায়ের কমিটি গঠন করা হয়।
দেশে বর্তমানে ৯৫টি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় রয়েছে, এর মধ্যে চালু রয়েছে ৮৪টি।
এমএইচএম/এসআর/পিআর