বিশেষ প্রতিবেদন

রাতের হাওর জাগিয়ে রাখে হ্যাজাক বাতি

বিকেল-সন্ধ্যা মিলে কয়েক দফা বৃষ্টি হয়েছে। রাতে দমকা হাওয়া। হাওয়ার সঙ্গে খানিক গুড়িগুড়ি বৃষ্টিও মিলেছে রাতের প্রথমভাগে। যে বেলায় ফসল কাটার ধুম পড়ে যায়, সে বেলায় পানি থইথই করছে হাওরে।

Advertisement

দমকা হাওয়ায় হাওরের পানি উতাল-পাতাল করছিল বিকেল থেকেই। সন্ধ্যার আগেই সুনামগঞ্জের শনির হাওর যেন সাগরে রূপ নেয়। বেলা যখন অস্ত গেল, মনে হলো কোনো অদৃশ্য সীমানায় আকাশ মিলে গেল। শুধুই পানি আর পানি। রাতের নীরবতা ভাঙছে ঢেউয়ের গর্জনে। ঢেউয়েরা এসে আচড়ে পড়ছে হাওর তীরে।হাওরের রূপ যেন ধরে না। কখনও ভয়ঙ্কর আবার কখনও মিতালি রূপে হাজির হয় হাওরের পানি। রাতের হাওর! প্রকৃতির অপরূপ সৌন্দর্যের হাতছানি মেলে হাওরের বিশালতায়। পূর্ণিমায় চাঁদের আলো নাকি হাওরে রূপা ফলায়। হাওরের জলে ঢেউয়ের তালে চাঁদও খেলে।আজ পূর্ণিমা নেই, নেই চাঁদের আলোও। তাতে কী? মেঘের আড়াল থেকে উঁকি দিয়ে দিয়ে হাওর পাহারা দিচ্ছে বিজলিরা। মেঘের হাঁক আর বিজলি আলো যেন হাওরের সঙ্গে মিতালি করেছে আজ। ঘন অন্ধকারে বিজলি আলো পানিতে পড়তেই রূপার মতো চকচক করছে।তবে এমন প্রাকৃতিক রূপের আঁধারে জেলেদের হ্যাজাক বাতির আলো যেন সব রূপকে ছাড়িয়ে গেছে। গোটা হাওরজুড়েই হ্যাজাক বাতির আলো। আঁধার ভেদ করে চোখ যত দূরে যায়, শুধুই হ্যাজাক বাতি নজর নেয়। দূরের বাতিগুলো ঠিক জোনাকির মতো জ্বলছে। তীব্র বাতাসে কোনোটি নিভে যাচ্ছে। খানিক পরে ফের জ্বলে উঠছে। হাওরে জেলেদের একমাত্র ভরসা হ্যাজাক লাইট-ই। হাওর জেগে থাকে জেলেদের সঙ্গে। জেগে থাকে হ্যাজাক বাতিগুলোও।তীর ঘেঁষে বাঁশের খুঁটিতে হ্যাজাক লাইট লাগিয়ে চিংড়ি ধরছিলেন মোহাম্মদ মিঠু। তিনি বলেন, এই কয়েক মাস হ্যাজাক লাইট-ই আমাদের সঙ্গী। সারা রাত এই লাইট নিয়েই আমাদের চলতে হয়। পানির এই কয়েক মাস এভাবেই মাছ ধরব আমরা।

এএসএস/বিএ

Advertisement