একাত্তরে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় খুলনা জেলার ডুমুরিয়া থানার দুইজনের বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করেছেন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল। একইসঙ্গে গ্রেফতার হওয়া অন্য ৯ আসামিকে ট্রাইব্যুনালে হাজির করার নির্দেশ দিয়েছেন আদালত।
Advertisement
এছাড়া মামলায় তদন্তের অগ্রগতি প্রতিবেদন দাখিল করার জন্য আগামী ১১ জুলাই পরবর্তী দিন ধার্য করেছেন ট্রাইব্যুনাল।
এ সংক্রান্ত আবেদন শুনানি শেষ করে রোববার ট্রাইব্যুনালের সদস্য বিচারপতি মো. শাহিনুর ইসলামের নেতৃত্বে দুই সদস্যের আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল এই আদেশ দেন।
ট্রাইব্যুনালের অপর সদস্য হলেন বিচারপতি মো. সোহরাওয়ারদী। আদালতে আজ রাষ্ট্রপক্ষে শুনানি করেন প্রসিকিউটর সৈয়দ হায়দার আলী। সঙ্গে ছিলেন ঋষিকেষ সাহা, আবুল কালাম ও শেখ মোশফেক কবির।
Advertisement
পরে প্রসিকিউটর সৈয়দ হায়দার আলী জাগো নিউজকে জানান, আজ ট্রাইব্যুনালে দুটি আবেদন করা হয়েছে। একটি আবেদনে সম্প্রতি গ্রেফতার হওয়া ৯ জনকে ট্রাইব্যুনালে হাজির করতে নির্দেশ দেন ট্রাইব্যুনাল এবং এ মামলায় অপর দুই আসামির বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করেছেন আদালত।
সৈয়দ হায়দার আলী আরও বলেন, আমরা আদালতকে জানিয়েছি এই মামলার ৯ জন আসামি গ্রেফতার হয়েছে। বাকি দুজন পলাতক রয়েছে। আদালত গ্রেফতার হওয়া ৯ জনকে হাজির করার নির্দেশ দিয়েছেন। আর বাকি দুজনের বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করেছেন। তবে আসামিদের হাজিরের নির্দিষ্ট কোনো তারিখ দেয়া হয়নি।
একইসঙ্গে আসামিদের বিরুদ্ধে অগ্রগতি তদন্ত প্রতিবেদন আগামী ১১ জুলাই দাখিল করতে বলা হয়েছে বলেও জানান সৈয়দ হায়দার আলী। এই মামলাটি তদন্ত করছেন ট্রাইব্যুনালের তদন্ত কর্মকর্তা মো. হেলাল উদ্দিন।
এর আগে গত ২০ এপ্রিল রাত থেকে শুক্রবার সকল পর্যন্ত অভিযান চালিয়ে খুলনা থেকে সাতজন এবং ঢাকা ও গাজীপুর থেকে দুজনকে গ্রেফতার করা হয়। আসামিদের বিরুদ্ধে খুলনায় মুক্তিযুদ্ধের সময় মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগে একটি মামলায় জড়িত থাকার প্রাথমিক তথ্য পাওয়া গেছে বলে জানান তদন্ত সংস্থার কর্মকর্তা মো. হেলাল উদ্দিন।
Advertisement
গ্রেফতার হওয়া ব্যক্তিরা হলেন- শেখ আবদুর রহিম (৬৮), শামসুর রহমান গাজী (৮২), জাহান আলী বিশ্বাস (৬৭), মো. শাজাহান সরদার (৬৭), আবদুল করিম শেখ (৬৫), আবু বক্কর সরদার (৬৭) ও রওশন আলী গাজী (৭২)। ঢাকার মোহাম্মদপুর থেকে মো. সোহরাব হোসেন (৬২) ও গাজীপুর থেকে নাজের আলী ফকির (৬৫) নামের আরও দুজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তাঁদের বাড়িও ডুমুরিয়ায়।
প্রাথমিকভাবে তাদের ২০১৫ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে ফুলতলা থানায় করা বাস পোড়ানোর একটি মামলায় ৯ জনকে গ্রেপ্তার দেখানো হয় বলে জানিয়েছিলেন খুলনা জেলা ডিবির ওসি আক্কাস আলী।
তদন্ত সংস্থার কর্মকর্তা হেলাল উদ্দিন বলেন, গ্রেফতারকৃত আসামিরা ১৯৭১ সালের ১৮ মে খুলনার ডুমুরিয়া উপজেলার খর্ণিয়া গ্রাম থেকে মুক্তিযুদ্ধের পক্ষের আব্দুল লতিফ মোড়ল ও কাওসার শেখসহ ৯ জনকে ধরে বকুলতলা এলাকায় নিয়ে যায়। সেখানে তাদেরকে গুলি করে হত্যার পর লাশ নদীতে ফেলে দেয়। সেখান থেকে জীবন নিয়ে একজন পালিয়ে আসতে সক্ষম হন। ওই ঘটনায় খর্নিয়া গ্রামের লিয়াকত আলী গাজী বাদী হয়ে চলতি বছরের ১ জানুয়ারি ডুমুরিয়া থানায় মামলা দায়ের করেন।
এফএইচ/জেডএ/জেআইএম